ঝিনাইদহের কালীগঞ্জে হেলায় গ্রামে অবস্থিত একমাত্র ৫০ শয্যা বিশিষ্ট সরকারি হাসপাতালটিতে বিরতিহীনভাবে সেবা প্রদান করে চলেছেন মাত্র ৫ জন মেডিকেল অফিসার। তারা হলেন-ডাক্তার আজগর আলী, শিশির কুমার ছানা, বিএম ইমরান হোসেন, সম্পা মদক ও আরিফুল ইসলাম। এই ৫ জন মেডিকেল অফিসার চলতি বছরের মে মাস থেকে নির্ধারিত ডিউটির অতিরিক্ত ডিউটি পালন করছেন। সাধারণ রোগীদের সেবা প্রদানের স্বার্থে অনেক সময় এ সকল ডাক্তারগণ একটানা ২৪ ঘন্টারও বেশি সময় কাজ করছেন অতিরিক্ত পারিশ্রমিক ছাড়াই। জরুরী বিভাগ থেকে শুরু করে বহির্বিভাগ এবং অন্তর বিভাগের সব রোগীর চাপ সামলিয়েও তাদের মধ্যে কয়েক জন আবার রোগ নিয়ন্ত্রণের এবং আবাসিক মেডিকেল অফিসার এর বাড়তি দায়িত্ব পালন করছেন। উপজেলার একমাত্র সরকারি হাসপাতাল হওয়ায় প্রতিনিয়ত সব বিভাগেই রোগীর বাড়তি চাপ থাকে। উপজেলারে এ হাসপাতালে ১৬ জন মেডিকেল অফিসার পদায়ন থাকলেও বর্তমানে চিকিৎসা সেবায় নিয়োজিত রয়েছেন মাত্র ৫ জন মেডিকেল অফিসার। ১১ জন মেডিকেল অফিসার এই হাসপাতাল থেকে বদলি হয়ে নতুন কর্মস্থলে চলে গেছেন প্রায় চার মাস হলো। দীর্ঘ সময় অতিবাহিত হলেও বদলিজনিত কারণে চলে যাওয়া ডাক্তারদের স্থানে নতুন করে কোনো ডাক্তার পদায়ন করা হয়নি। যে কারণে হাসপাতালটির ৫ জন মেডিকেল অফিসারকে হিমশিম খেতে হচ্ছে চিকিৎসা সেবা দিতে। সরজমিনে হাসপাতালে যেয়ে দেখা যায়,বহির্বাগে সাধারণ রোগীরা টিকিট কাউন্টার থেকে টিকিট নিয়ে ডাক্তারের চেম্বারের সামনে দীর্ঘ লাইনে অপেক্ষায় রয়েছেন।আপরদিকে ডাক্তার না থাকায় বেশ কিছু চেম্বার রয়েছে বন্ধ।এ সময় রহিমা বেগম নামের এক রোগীর সাথে কথা হলে তিনি জানান, হাসপাতালে ডাক্তার কম থাকায় আমাদের খুব দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। অনেকক্ষণ দাঁড়িয়ে থেকে তারপর ডাক্তার দেখানো লাগছে। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার ডাক্তার এবিএম ইমরান হোসেন বলেন, বর্তমানে আমরা মাত্র ৫ জন ডাক্তার মিলে হাসপাতালের চিকিৎসা সেবা অব্যাহত রেখেছি। জরুরী বিভাগের রোগী, বহির্বিভাগের রোগী এবং আবাসিক রোগী দেখার পাশাপাশি প্রশাসনিক অনেক কাজ আমাদেরকে করতে হচ্ছে। দিন রাত ডিউটি করেও কুলিয়ে উঠা আমাদের জন্য খুব কঠিন হয়ে পড়েছে। কর্তৃপক্ষের নিকট আমি অতিসত্তর হাসপাতালটির চিকিৎসক সংকট নিরসনের দাবি জানাচ্ছি। কালিগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাক্তার আলমগীর হোসেন বলেন, ৫০ শয্যার এই হাসপাতালটিতে রুগীর অনেক চাপ। বর্তমানে চিকিৎসক সংকট থাকাই সেই চাপ সামলাতে খুব বেগ পেতে হচ্ছে। আমার প্রশাসনিক কাজের পাশাপাশি আমি প্রতিনিয়ত রোগী দেখছি, অপারেশন করছি,আল্ট্রাসনোগ্রাফী করছি।বর্তমানে আমার ৫ জন্য চিকিৎসক হাসপাতালে চিকিৎসা সেবা সচল রাখতে অক্লান্ত পরিশ্রম করে যাচ্ছেন।চিকিৎসক সংকটের ব্যাপারে আমি ইতিমধ্যে আমার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলেছি। আশাকরছি দ্রুত সময়ের মধ্যে সংকটময় পরিস্থিতি থেকে আমরা বের হতে পারবো।