শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ১০:২৬ অপরাহ্ন

আমাদের পেছনে তাকানোর কোন সুযোগ নেই

খবরপত্র অন লাইন ডেস্ক
  • আপডেট সময় মঙ্গলবার, ৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৪
সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময় সভায় ডা.শফিকুর রহমান

সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময় সভায় ডা.শফিকুর রহমান
হিংসা, প্রতিহিংসা ও প্রতিশোধ নয় বরং ক্ষমা ও সংশোধনের মিশন নিয়ে বিদ্যমান রাজনীতিতে ইতিবাচক ধারা প্রবর্তন করে গণমুখী নতুন ধারার রাজনীতি প্রবর্তনের জন্য গণমাধ্যম কর্মীদের কলমকে শানিত করার আহবান জানিয়েছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমীর জননেতা ডা.শফিকুর রহমান।
তিনি   মঙ্গলবার দুপুর ১২টায় রাজধানীর তেজগাঁওস্থ থাই চি রেস্টুরেন্টে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী উত্তর আয়োজিত সিনিয়র ও জামায়াত বিট সাংবাদিকদের সাথে এক মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন। কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের আমীর মুহাম্মদ সেলিম উদ্দিনের সভাপতিত্বে এবং কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের সেক্রেটারি ড. মুহাম্মদ রেজাউল করিমের পরিচালনায় মতবিনিময় সভায় উপস্থিত কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের নায়েবে আমীর আব্দুর রহমান মূসা, কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের নায়েবে আমীর প্রকৌশলী গোলাম মোস্তফা, কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের সহকারি সেক্রেটারি মাহফুজুর রহমান ও নাজিম উদ্দীন মোল্লা,ডা.ফখরুদ্দিন মানিক,ঢাকা মহানগরী উত্তরের প্রচার ও মিডিয়া সম্পাদক মু. আতাউর রহমান সরকারসহ প্রমূখ।
সাংবাদিক পক্ষ থেকে বক্তব্য দেন ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি শহিদুল ইসলাম,দৈনিক খবরপত্রের বার্তা সম্পাদক মো.হারুন অর রশীদ, মানবকণ্ঠের মফস্বল বার্তা সম্পাদক আহমদ জামাল, প্রতিদিনের বাংলাদেশ বার্তা বাছির জামাল.ইনডিপেনডেন্ট বিশেষ প্রতিনিধি জাহানারা প্রমুখ।
ডা. শফিকুর রহমান বলেন, বিগত সাড়ে ১৫ বছর সরকারের জুলুম-নির্যাতনের কারণেই আমরা আপনাদের সাথে খোলা মনে কথা বলতে পারিনি।গণমানুষের কল্যাণে নির্বিঘ্নে কাজ করতে পারিনি। অথচ শুধু মানুষ নয় বরং আল্লাহর সকল সৃষ্টিকে সম্মান করা আমাদের দায়িত্ব। মানুষ সৃষ্টির সেরা। মানুষের কল্যাণের জন্যই সবকিছু সৃষ্টি করা হয়েছে। তাই মন্দের বিপরীতে মন্দের চর্চার কোন সুযোগ নেই। তিনি সাংবাদিকদের দায়িত্ব ও কর্তব্যের কথা উল্লেখ করে বলেন; সাংবাদিক ও রাজনীতিকরাই সমাজ পরিবর্তনে এবং ন্যায়-ইনসাফ প্রতিষ্ঠায় যুগপৎভাবে কাজ করেন। রাজনীতিকরা যেমন রাজপথে গুলীতে মারা যান, সাংবাদিকরাও ঠিক তেমনি। তাই আমাদের পেছনে তাকানোর কোন সুযোগ নেই। জাতীয় স্বার্থে এক কাতারে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করতে হবে। তিনি গণমাধ্যম কর্মীদের দেশাত্মবোধে উদ্বুদ্ধ হয়ে স্বাধীনভাবে পেশাগত দায়িত্ব পালনের আহবান জানান।
তিনি বলেন,আমাদের আর পেছনে ফিরে তাকানোর সুযোগ নেই। তাই জাতীয় স্বার্থেই আমাদেরকে দলমত নির্বিশেষে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। জাতি ঐক্যবদ্ধ হলে পুরো বিশ্বই আমাদেরকে সম্মানের আসনে প্রতিষ্ঠিত করবে। আর দেশের সকল নাগরিকের অধিকারের নিশ্চয়তা দিতে হলে গণমাধ্যমকর্মী সহ রাজনীতিকদের ঐক্যবদ্ধ ভাবে কাজ করতে হবে। উদ্দেশ্য হবে গণমানুষের মুক্তি ও কল্যাণ। নিকট অতীতে গণমাধ্যম ও গণমাধ্যম কর্মীদের কলমকে রুদ্ধ করা হয়েছিল। সাময়িকভাবে হলেও সে তালা এখন খুলেছে। এ বিজয় ধরে রাখার জন্য আমাদেরকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করতে হবে। বীজতলা সুন্দর হলে তা মহীরূহে পরিণত হবে এবং তা এক সময় ছায়া ও ফল দেবে। তিনি অর্জিত বিজয়কে পরিচর্যা করতে দলমত নির্বিশেষে সকলকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহবান জানান।
তিনি আরো বলেন,আমরা প্রতিহিংসা ও প্রতিশোধের রাজনীতিতে বিশ্বাস করি না। রাজনৈতিকভাবে আমাদের ওপর যারা জুুলুম-নির্যাতন করেছে আমরা তাদেরকে ক্ষমা করে দিয়েছি। আমরা সংশোধন ও ক্ষমার রাজনীতিতে বিশ্বাসী। তবে কোন ভিকটিম বা ভিকটিমের পরিবার যদি আইনে আশ্রয় নেয়, তাহলে আমরা তাদেরকেও সহযোগিতা করবো। দল হিসাবে আমরা কোন প্রতিশোধ নেবো না। আমরা আদর্শ ডেমোক্রেসীতে বিশ্বাসী। আর আদর্শ ডেমোক্রেসীর মূলমন্ত্রই হচ্ছে যার যার মতো স্বাধীনভাবে কথা বলার অধিকার এবং পরমতের প্রতি সহনশীলতা। তিনি মতবিনিময়ে অংশগ্রহণকারী গণমাধ্যম কর্মীদের মতবিনিময় সভায় উপস্থিত হওয়ার জন্য ধন্যবাদ জানান এবং গভীর কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেন।
ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি শহিদুল ইসলাম বলেন, সাংবাদিকদের দায়িত্ব সংবাদ ও তথ্য যথাযথভাবে তুলে ধরা। জামায়াতে ইসলামী যা করছে সেই সত্য তুলে ধরুন। সাদাকে সাদা এবং কালোকে কালো বলুন তাহলেই জাতি সঠিক পথ পাবে।
দৈনিক খবরপত্রের বার্তা সম্পাদক মো.হারুন অর রশীদ বলেন, জামায়াতে ইসলামী বিটের সাংবাদিকরা ভাগ্যবান তারা ওহির আলোয় আলোকিত নেতৃবৃন্দের সাথে কাজ করার সুযোগ পেয়েছেন। এ সুযোগ কাজে লাগিয়ে নিজেরা দুনিয়া ও আখেরাতে লাভবান হতে চাইলে তাদেরকে সতর্কতার সাথে যথাযথভাবে জাতির সামনে জামায়াত নেতাদের বক্তব্য তুলে ধরতে হবে। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য এক্ষেত্রে আমরা অনেকেই ভুল করি। যেমন আমীরে জামায়াত কয়েক দিন আগে একটি বক্তৃতায় বলেছেন,‘অস্ত্রের মুখে বুকের রক্ত দিয়ে এদেশের ছাত্র-জনতা স্বৈরাচারকে তাড়িয়েছে।’ কিন্তু একটি পত্রিকা লিখেছে,‘বুকের বক্ত দিয়ে এদেশের ছাত্র-জনতা অস্ত্রের মুখে স্বৈরাচারকে তাড়িয়েছে।’ পত্রিকাটির সংশ্লিষ্ট সাংবাদিকের আন্তরিকতার অভাব হয় তো নেই। কিন্তু অসতর্কতার জন্য বাক্যটির অর্থ বদল হয়ে গেছে।
সভাপতির বক্তব্যে মুহাম্মদ সেলিম উদ্দিন বলেন, ছাত্র-জনতার যুগপৎ আন্দোলনের উদ্দেশ্য ছিল সমাজের সকল পর্যায়ে ন্যায়-ইনসাফ প্রতিষ্ঠা। তাদের শ্লোগানই ছিল ‘উই ওয়ান্ট জাস্টিস’। আমাদের দেশে গণমাধ্যমকর্মীরাও জাস্টিস থেকে বঞ্চিত। তারা স্বাধীনভাবে পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে পারেন না। কর্তৃপক্ষ তাদেরকে ওয়েজ বোর্ড দেয় না। ফলে তাদের পরিবার-পরিজন সন্তান-সন্ততিদের নিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করতে হয়। এখন সময় এসেছে এসব বৈষম্যের অবসান ঘটানো। জামায়াত সব সময় সাংবাদিকদের অধিকার প্রতিষ্ঠায় সোচ্চার থাকবে। তিনি দেশ ও জাতির স্বার্থকে প্রাধান্য দিয়ে সকল প্রকার ভয়ভীতির উর্ধ্বে থেকে নিরপেক্ষভাবে পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে সাংবাদিকদের প্রতি আহবান জানান।




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com