টঙ্গীর এরশাদনগরে আবারো মাদক ও ত্রাসের রাজত্ব কায়েমের অপচেষ্টায় লিপ্ত আওয়ামী সন্ত্রাসীদের অপপ্রচারের বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন করেন বৃহত্তর টঙ্গী থানা যুবদলের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক কামরুল ইসলাম কামু। সোমবার (৩০ সেপ্টেম্বর) দুপুরে টঙ্গী এরশাদনগর বিএনপি কার্যালয়ে তিনি এ সংবাদ সম্মেলন করেন। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, আপনারা অবশ্যই অবগত আছেন ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ বিগত দিনে আমাদের প্রাণপ্রিয় এরশাদ নগরকে সন্ত্রাসী ও মাদককারবারীদের অভয়ারণ্যে পরিণত করেছিল। তাদের মাদক কারবারসহ বিভিন্ন সন্ত্রাসী কর্মকান্ডে এলাকাবাসী ছিলেন জিম্মি। আমি অভিবক্ত টঙ্গী থানা যুবদলের সাংগঠনিক সম্পাদক হিসেবে এই আওয়ামী সন্ত্রাসীদের জিম্মিদশা থেকে এলাকাবাসীকে উদ্ধারের জন্য বহু সংগ্রাম করেছি। এ কারণেই আমাকে একের পর এক ষড়যন্ত্রমূলক মিথ্যা মামলায় জেলে রেখে তারা নির্বিঘেœ বিগত দিনে এরশাদনগরে ত্রাসের রাজ্বত্ব কায়েম করতে পেরেছিল। বিগত ২০১৬ সাল থেকে টানা প্রায় ৯ বছর আমি স্বৈরাচার সরকারের কারাগারে বন্দী ছিলাম। সম্প্রতি আমি জামিনে জেল থেকে মুক্তিলাভ করে এরশাদনগরকে মাদক ও সন্ত্রাসমুক্ত করার ঘোষণা দিয়েছি। আমার শেষ রক্তবিন্দু দিয়ে হলেও প্রিয় এরশাদনগরকে সন্ত্রাস ও মাদকমুক্ত করে ছাড়বো ইনশা আল্লাহ। ইতিমধ্যেই এরশাদনগরবাসী এর প্রতিফলনও দেখতে পাচ্ছেন। সন্ত্রাসী ও মাদককারবারিরা এলাকা ছেড়ে গা ঢাকা দিচ্ছে। কিন্তু জুলাই বিপ্লবের পরাজিত শক্তি আমার বিরুদ্ধে আবারো নানা ষড়যন্ত্র শুরু করেছে। এরা এখন মিথ্যা মামলাকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করতে না পেরে আমার ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করার জন্য নানা অপপ্রচারে লিপ্ত। এরা নিজেরা বিভিন্ন অপকর্ম করে এর দায়ভার আমার ওপর চাপানোর অপচেষ্টা করছে। সংবাদ সম্মেলনে তিনি আরও বলেন, ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের সাবেক এমপি জাহিদ আহসান রাসেলের চাচা মতিউর রহমান মতি টঙ্গী তথা গাজীপুনর-২ আসন এলাকায় সন্ত্রাসী ও মাদক কারবারিদের গডফাদার ছিলেন। এরশাদ নগর বা ৪৯ নম্বর ওয়ার্ড যুবলীগের সভাপতি আব্দুল জলিল ওরফে জলিল গাজী ও শফিকুল ওরফে হাতকাটা শফিককে দিয়ে তিনি এরশাদনগরকে মাদককারবারি ও সকল কিসিমের সন্ত্রাসীদের অভয়ারণ্যে পরিণত করেছিলেন। যুবলীগ নেতা জলিল গাজী এরশাদ নগর পূর্ণবাসন এলাকার একজন বাসিন্দা হয়েও বিগত ১৬ বছরে কয়েকশ কোটি টাকার সম্পদের মালিক বনে গিয়েছে। জলিল গাজী একসময় রিকশা চালাতো, পরবর্তীতে লোড-আনলোডের (কুলির) কাজ করতো। বর্তমানে টঙ্গীর বিভিন্ন এলাকায় তার ৫টি আলিশান বাড়ি, টঙ্গীর দত্তপাড়া দীঘির পাড়ে ৪তলা বাড়িসহ বিশাল প্লট, শালিকচূড়ায় একটি প্লট, ফ্যাক্টটি ও বিশাল গোডাউনের মালিক। তার রয়েছে নিজস্ব গাড়ি ও ড্রাইভার। এলাকায় চাঁদাবাজি, মাদককারবারসহ বিভিন্ন সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের মাধ্যমে যুবলীগ নেতা জলিল গাজী এসব সম্পদ অর্জন করেছে। সন্ত্রাসী ও মাদক কারবারিদের দ্বন্দ্বে শফিকুল নিজের হাত হারালেও তার মাদক ব্যবসা এখনো বন্ধ হয়নি। এরশাদ নগর পুনর্বাসন প্লটে স্বৈরাচারের দাপটে বিধি ও নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে তিন তলা বাড়ি করেছে। এলাকায় রড-সিমেন্টর ব্যবসার আড়ালে চলে তার মাদক ব্যবসা। মাদকের টাকায় এরশাদ নগরের বাহিরেও জায়গা জমি কিনেছে বলে জানা গেছে। পতিত স্বৈরশাসকের দোসর জলিল-শফিকুল গং এখনো মাদককারবার ও সন্ত্রাসী কর্মকা- নির্বিঘœ করতে আমার বিরুদ্ধে নানা অপপ্রচার চালাচ্ছে। এদের অপপ্রচারের অংশ হিসেবেই দৈনিক যুগান্তর পত্রিকার অনলাইন পোর্টালে গত ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪ বিকেলে ভোল পাল্টে রাতারাতি আ.লীগ থেকে বিএনপিতে, টঙ্গীর মূর্তিমান আতঙ্ক সন্ত্রাসী কামু, ভয়ে টু-শব্দ করে না কেউ শীর্ষক মিথ্যা সংবাদ প্রকাশ হয়। ইতিমধ্যেই আমি প্রকাশিত সংবাদটিকে সম্পূর্ণ মিথ্যা, ভিত্তিহীন ও উদ্দেশ্য প্রণোদীত উল্লেখ করে যুগান্তরে প্রতিবাদ পাঠিয়েছি। প্রকাশিত সংবাদটিতে জঘন্যতম মিথ্যার আশ্রয় নিয়ে আমাকে টঙ্গী এরশাদনগরবাসীর মূর্তিমান আতঙ্ক আখ্যা দিয়ে বলা হয়েছে, বিগত ১৬ বছরে আওয়ামী লীগ সরকারের শাসনামলে ক্ষমতাসীন নেতাদের ছত্রছায়া ও নেক নজরে থেকে অস্ত্র ও মাদক কারবারসহ টঙ্গীতে নাকি আমি ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছি। আমি এলাকাবাসীকে সাক্ষী রেখে এই জঘন্য মিথ্যাচারিতার বিচার চাই। একটি কুচক্রী মহল বিএনপির ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করার জন্য আমাকে জড়িয়ে এ ধরনের মিথ্যা অপপ্রচার চালাচ্ছে। আমি বিএনপির একজন ক্ষুদ্র কর্মী হিসেবে তারেক রহমানের নির্দেশে গণঅভ্যুত্থান পরবর্তীতে জনগণের জানমাল রক্ষায় সজাগ ও সতর্ক ছিলাম এবং আছি। এরশাদনগরকে মাদক ও সন্ত্রাসমুক্ত এলাকা হিসেবে গড়ে তুলতে এই অপপ্রচারের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর জন্য সকলের আন্তরিক সহযোগিতা কামনা করছি। এ সময় উপস্থিত ছিলেন, মজিবর মাস্টার সাবেক আহবায়ক সদস্য টঙ্গী পূর্ব থানা বিএনপি, সোহেল চৌধুরী সাবেক আহবায়ক সদস্য টঙ্গী পূর্ব থানা বিএনপি, মিরাজ মিয়া যুগ্ম সম্পাদক টঙ্গী পূর্ব থানা বিএনপি, বাবুল মিয়া সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ৪৯নং ওয়ার্ড টঙ্গী পূর্ব থানা বিএনপি, শার্জাহান মিয়া সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক ৪৯নং ওয়ার্ড বিএনপি, আলাউদ্দিন মিয়া মহানগর যুবদল এর সাবেক সদস্য, মনসুর মিয়া ২নং ইউনিট কমিটির সাধারণ সম্পাদক টঙ্গী পূর্ব থানা বিএনপি, জলিল মিয়া আহবায়ক সদস্য টঙ্গী পূর্ব থানা স্বেচ্ছাসেবক দল, জাহানারা জানু সদস্য মহানগর মহিলা দল, লায়লী বেগম ৪৯নং ওয়ার্ড মহিলা দল, পেয়ারা বেগম ৪৯নং ওয়ার্ড মহিলা দল প্রমুখ।