শুল্ক কমালেও বেসরকারি পর্যায়ে চাল আমদানির তেমন আগ্রহ দেখাচ্ছেন না ব্যবসায়ীরা। এ অবস্থায় বাজারে ভোক্তাদের মধ্যে স্বস্তি ফেরাতে চালের আমদানি শুল্ক পুরোপুরি তুলে নিতে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে (এনবিআর) সুপারিশ করেছে বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন (বিটিসি)। দেশে খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে গত ২০ অক্টোবর চাল আমদানিতে শুল্ক-কর কমিয়ে দেয় সরকার। ৬২ দশমিক ৫ শতাংশ শুল্ক থেকে কমিয়ে ২৫ শতাংশ করা হয়। এরপর বিশ্ববাজারে চালের দাম আরও চড়া হওয়ায় এবং আমদানিকারকদের উৎসাহিত করতে এবার আমদানি শুল্ক পুরোপুরি প্রত্যাহারের সুপারিশ করা হয়েছে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, গতকাল মঙ্গলবার (২৯ অক্টোবর) চালের আন্তর্জাতিক বাজার বিশ্লেষণ করে আমদানি বাড়াতে শূন্য শুল্ক করার জন্য এনবিআরকে চিঠি দিয়েছে বিটিসি।
বিটিসির বিশ্লেষণে বলা হয়েছে, সরকার চালের সম্ভাব্য ঘাটতি বিবেচনায় গত ২০ অক্টোবর শুল্ক-কর ২৫ শতাংশে নামিয়ে আনে। তবে ওই হ্রাসকৃত শুল্কে থাইল্যান্ড থেকে চাল আমদানি করলে প্রতি কেজির দাম দাঁড়াবে ৯২-৯৫ টাকা। পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত থেকে আমদানি করলে স্থানীয় বাজারে দাম দাঁড়াবে ৭৫-৭৮ টাকা। এই দামে চাল আমদানি করলে তা স্থানীয় বাজারের দামের চেয়েও বেশি পড়বে।
এ অবস্থায় আমদানি আরও সহজ করতে এবং আমদানিকারকদের উৎসাহিত করতে চালের শুল্ক শতভাগ তুলে নেওয়া জরুরি বলে মনে করছে বিটিসি। বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশনের প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে, সম্প্রতি বন্যায় চালের উৎপাদন ব্যাহত হওয়ায় স্থানীয় বাজারে সরবরাহ বৃদ্ধি ও মূল্য স্থিতিশীল করতে সুনির্দিষ্ট মেয়াদে চাল আমদানিতে বর্তমানে প্রযোজ্য শুল্ক প্রত্যাহার দরকার।
কৃষি বিভাগের তথ্য দিয়ে ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আগস্ট-অক্টোবরে অতি বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে দুই দফা বন্যায় মোট আট লাখ ৩৯ হাজার টন চালের উৎপাদন ব্যাহত হয়েছে। এর প্রভাবে দেশের বাজারে চালের দাম বেড়ে গত বছরের একই সময়ের তুলনায় সরু চাল ৯ দশমিক ৯ শতাংশ, মাঝারি সরু চাল ৯ দশমিক ৩৫ শতাংশ এবং মোটা চাল ৭ শতাংশ বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে।