সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ০৩:৪৯ পূর্বাহ্ন

করোনা পরবর্তী বিশ্বে অত্যন্ত সাহসী পরিকল্পনার প্রয়োজন: ড. মুহাম্মদ ইউনূস

নিজস্ব প্রতিবেদক:
  • আপডেট সময় সোমবার, ১৬ নভেম্বর, ২০২০

করোনার পরবর্তী সমাজব্যবস্থায় শ্রমিকদের স্বাবলম্বী করে গড়ে তুলতে নতুন ধরনের ব্যাংক গঠনের আহ্বান জানিয়েছেন শান্তিতে নোবেলজয়ী প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস। তাঁর মতে, এই মহামারীর কারণে যে লাখো-কোটি শ্রমিক ক্ষতির মুখে পড়েছে, তাদের সহায়তার জন্য এমন ব্যাংক তৈরি করা দরকার। করোনা পরবর্তী বিশ্বের জন্য অত্যন্ত সাহসী ও দৃঢ় চিন্তাভাবনা ও পরিকল্পনার প্রয়োজন বলে মনে করছেন তিনি। ‘গরিবের ব্যাংকার’ নামে পরিচিত এই বাংলাদেশি অর্থনীতিবিদ বলেছেন, ‘‘এই সংকট আমাদের জন্য সুন্দর, সবুজ ভবিষ্যতের পথ তৈরি করছে। ‘’ তবে বর্তমান সময়ে এটিকে টাইম বোমার সঙ্গে তুলনা করেছেন তিনি।
করোনা পরবর্তী সমাজে তিনটি ক্ষেত্রে প্রাধান্য দেয়ার কথা বলেছেন তিনি: এক. জলবায়ু পরিবর্তন রোধ করা দুই. সম্পদের সুষ্ঠু বন্টন। এবং তিন. গণ বেকারত্ব প্রতিরোধ করা, যেহেতু কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার কারণে অনেক মানুষ চাকরি হারাচ্ছে। থমসন রয়টার্স ফাউন্ডেশনের বার্ষিক আয়োজন ‘ট্রাস্ট কনফারেন্সে’ ইউনূস বলেন, ‘‘করোনা আমাদের চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়েছে বিশ্ব অর্থনীতি ও সামাজিক অবস্থার দুর্বলতা। ‘’ তবে সবচেয়ে সংকটের মুহূর্তে সবচেয়ে সুন্দর ভাবনাগুলো বেরিয়ে আসে বলে মনে করেন তিনি। ততিনি বলেন,‘‘আমাদের উচিত পুরোনো চিন্তাগুলোকে দূরে ঠেলে সাহসের সাথে নতুন ভাবনাগুলো নিয়ে কাজ করা, যেগুলো আগে কখনো করা হয়নি। ”অনলাইন এই সম্মেলনে ৮০ বছর বয়সি এই অর্থনীতিবিদ করোনা পরবর্তী সমাজ গঠনের ক্ষেত্রেসামাজিক ও পরিবেশগত সমস্যাগুলো সমাধানের উপর জোর দেন। তিনি বলেন, ‘‘মানুষ কোন অর্থ বানানোর রোবট নয়, মানুষকে বাণিজ্যখাতে চালিকাশক্তি হিসেবে কাজে লাগাতে হবে, কেবল লাভের কথা ভাবলে হবে না। ‘’ বলেন,‘‘বাংলাদেশে ৭০ ভাগ শ্রমিকের কোন সঞ্চয় নেই, করোনার কারণে এই শ্রমিকরা ভয়াবহ অবস্থার মধ্যে আছে। ‘’ তাই এই শ্রমিকদের নিজের পায়ে দাঁড়ানোর জন্য উদ্যোক্তা হিসেবে গড়ে তুলতে ‘স্যোশাল বিজনেস মাইক্রো-অন্তপ্রনেরিয়াল ব্যাংক’ প্রতিষ্ঠার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
ধনী দেশগুলোর করোনা ভ্যাকসিন উৎপাদন ও বিক্রির সমালোচনা করে মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, ‘‘বিশ্বের একজন ব্যক্তি যদি অরক্ষিত থাকে, তাহলে সবার সুরক্ষিত থাকা সম্ভব নয়। ” এই অর্থনীতিবিদ আরও বলেছেন, ‘‘সময় এসেছে বিকেন্দ্রীকরণের। বলেছেন, আধুনিক প্রযুক্তির এই যুগে কেনো গ্রামগুলোতে কল সেন্টার স্থাপন করা সম্ভব নয়?’’ অর্থাৎ শহরমুখী যে অর্থনৈতিক চালিকাশক্তি সেটাকে বিকেন্দ্রীকরণের আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। করোনার আগের বিশ্বকে বৈশ্বিক উষ্ণতা, ধনী-গরীব বৈষ্যমের বিশ্ব বলে অভিহিত করে তিনি বলেন, ‘‘সেই সময়ে ফিরে যাওয়ার কোন দরকার নেই। কেননা সেটা এমন একটা ট্রেন যা আমাদের মৃত্যুর দিকে নিয়ে যাচ্ছিলো। ‘’ তাই তিনি ‘ওয়ার্ল্ড অফ থ্রি জিরোস’ এর উপর জোর দিয়েছেন। অর্থাৎ কার্বন নির্গমনের হার শূন্যে নিয়ে আসা, সম্পদের বৈষম্য শূন্যে আনা এবং বেকারত্বের সংখ্যা শূন্যে নামিয়ে আনা। তিনি জোর দিয়ে বলেন, এটাই সময় এগুলোকে বাস্তবায়ন করার। সূত্রঃ ডয়চে ভেলে




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com