বদলি-জনিত কারণে হাটহাজারী মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ মো. মাসুদ আলম বিদায় নিলেন অশ্রুসিক্ত নয়নে, বিদায়কালে বক্তব্য দিতে গিয়ে থানার অফিসার ও সাংবাদিকদের সামনে তিনি কাঁদলেনও কাঁদালেন।মাত্র ১বছর সময়ের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ এ উপজেলার সাধারন জনগনের হৃদয়ে স্থান করে নিয়েছেন। বদলী সংবাদ প্রচার হওয়া মাত্রই স্যোসাল মিডিয়ায় বেদনাদায়ক পোষ্ট অহরহ চোখে দেখার মত। একজন চৌকস পুলিশ কর্মকর্তা বদলে দিয়েছে হাটহাজারী মডেল থানাকে।করেছে সাধারন নাগরিকদের সেবা প্রদানে নিশ্চিত ও দালাল মুক্ত থানা। গতকাল মঙ্গলবার (১৭নভেম্বর) বিদায়ী ও বরণ সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে থানার পুলিশ ও সাংবাদিকদের সাথে কথা বলতে গিয়ে হঠাৎ অঝোরে কাঁদলেন ও কাঁদালেন।এসময় তিনি বলেন, হাটহাজারী বাসীর এ ভালবাসা কোনদিনও বুঝতে পারতাম না যদি বদলি না হতো।আজ আমি স্বার্থক,এ থানায় একটি বছর জনগনের সেবা দিয়ে যে ভালবাসা পেয়েছি। আমি দেখেছি স্যোসাল মিডিয়ায় কি পরিমাণ ভালবাসা প্রকাশ করেছে সাংবাদিক ও সাধারন জনগন।
তিনি বলেন, মানুষ ভুলের উর্ধ্বে নয়,আমারও ভুল হতে পারে।এ থানায় যোগদানের পর যা কিছু অর্জন হয়েছে সব হাটহাজারী বাসীর আর যা ব্যর্থ হয়েছে সব আমার। সে হিসেবে সব ভুল ক্ষমা করে দেবেন আপনারা। হাটহাজারীর আপামর জনগন আমার পরিবারের মত। আমার সাধ্যানুযায়ী সেবা প্রদানের চেষ্টা অব্যাহত রেখেছি।
তিনি আরো বলেন,আমি এ থানায় দায়িত্ব থাকাকালীন সময়ে চেষ্টা করেছি নিষ্ঠার সাথে সকলকে নাগরিক সেবা দিতে, দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে আমার সফলতা ও ব্যর্থতা থাকতে পারে।
তিনি ২০১৯ সালের ২৪সেপ্টেম্বরে এ থানায় যোগদানের পর পুরো থানার চিত্র পরিবর্তন করে ফেলেন। জনসেবা সহজ করতে জিডি ও মামলা করতে করতে কোনো টাকা দিতে হবে না এমন লেখা ডিউটি অফিসারের রুমের দেয়ালে সাঁটানো ছিলো। তিনি,হাটহাজারী বাসীকে মাদকমুক্ত করণে বলিষ্ঠ ভূমিকা রাখেন। মাদকের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতিতে অটল ছিলেন। তিনি থানায় দালালদের দৌরাত্ম্য বন্ধ করতে ব্যাপক ভূমিকা রেখেছেন ও পুলিশিং সেবা দ্রুত পেতে উপজেলার পৌরসভায় ৩টি ও ইউনিয়নে ১৪ টি, সিটিতে ১টিসহ ১৮টি বিট পুলিশিং কার্যালয় উদ্বোধন করেছেন।
হাটহাজারী সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবদুল্লাহ আল মাসুমের সভাপতিত্বে বিদায়ী ও বরণ সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার রুহুল আমিন,নবাগত ওসি রফিকুল ইসলাম,ভাইস চেয়ারম্যান নুরুল আলম বাসেক,মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার নুরুল আলম, উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ইমতিয়াজ হোসাইন, ওসি তদন্ত রাজিব শর্মা, অপারেশন তৌহিদ আলম, সকল ইউপি চেয়ারম্যান সহ সাংবাদিক বৃন্দরা উপস্থিত ছিলেন।
তিনি যোগদানের পর থেকে এক বছরে ১৪৬টি ছোট বড় মাদক মামলা হয়েছে। ওয়ারেন্ট আসামি আদালতে পাঠিয়েছে প্রায় ৪শ। তা ছাড়া কোন ডাকাতি, মার্ডার, ছিনতাইয়ের মত ঘটনা ঘটেনি মাদক নিয়ন্ত্রন, আইন শৃংখলা রক্ষা সহ হাটহাজারী মাদ্রাসা ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রিক নানা জটিলতা ভালভাবেই সামাল দিয়েছেন এই চৌকস অফিসার মাসুদ আলম।