বৃহস্পতিবার, ০৬ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ০৪:৪৫ পূর্বাহ্ন

চিনি না খাওয়ার ১০ উপকার

খবরপত্র ডেস্ক:
  • আপডেট সময় বুধবার, ৫ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫

স্বাস্থ্য সুরক্ষায় পরিশোধিত চিনি খাওয়া ছেড়ে দেওয়া হতে পারে আপনার জীবনের সেরা সিদ্ধান্তগুলোর একটি। চিনি খাওয়া ছেড়ে দিলে শুধু আপনার ওজনই কমবে না, নানা রকম রোগবালাই থেকে মুক্ত থাকার সম্ভাবনা যাবে বেড়ে। চিনি কম খেলে আপনি শরীরে আগের চেয়ে বেশি বল পাবেন। এমনকি আপনার ত্বক এবং বাহ্যিক গড়নও আগের চেয়ে সুন্দর হতে পারে। চিনিমুক্ত খাদ্যাভ্যাস গড়ে তুললে আপনার সারা দিন হাবিজাবি খাওয়ার ইচ্ছা কমবে। মনমানসিকতায় আসবে ইতিবাচক পরিবর্তন এবং আপনি আগের চেয়ে ভালোভাবে আবেগ নিয়ন্ত্রণ করতে পারবেন। হৃদ্‌রোগ ও স্ট্রোকের ঝুঁকি কমাতেও চিনি খাওয়া ছেড়ে দেওয়া খুবই সহায়ক। চলুন, দেখে নেওয়া যাক খাদ্যতালিকা থেকে চিনি নামক এই ‘নীরব ঘাতককে’ ছেঁটে ফেলার কয়েকটি উপকারিতা।
ওজন কমে যাবে
চিনি খাওয়া ছেড়ে দিলে আপনার ওজন উল্লেখযোগ্য হারে কমে যাবে। ওজন যদি সারা জীবনই কম রাখতে চান, তাহলে চিনি খাওয়া ছেড়ে দেওয়ার বিকল্প নেই। পরিশোধিত চিনি ছেড়ে দেওয়ার অর্থ হলো, আপনি এমন কিছু খাবার ছেড়ে দিচ্ছেন, যেসবে শুধু ক্যালরি ছাড়া পুষ্টিগুণ বলতে কিছুই নেই। যেমন পাস্তা, কুকিজ, ব্রেড ইত্যাদি। মিষ্টি খাবার খাওয়া অনেক সময় নেশার পর্যায়ে চলে যায়। একটা খেলে আরও খেতে ইচ্ছা করে। পরিশোধিত চিনি খাওয়া ছেড়ে দিলে আপনার স্ন্যাকস খাওয়ার পরিমাণও কমবে, এ কারণে কমবে আপনার ওজন।
পেটের মেদ ঝরে যাবে
অতিরিক্ত চিনিযুক্ত খাবার হৃৎপি- এবং পেটের চারপাশে জমে থাকা চর্বির পরিমাণ বাড়ায়। ইউরোপিয়ান জার্নাল অব প্রিভেন্টিভ কার্ডিওলজির প্রতিবেদন অনুসারে, এসব চর্বি থেকে নানা রোগবালাইয়ের উৎপত্তি হয়। পরিশোধিত চিনি খাওয়া ছেড়ে দিলে যকৃৎ, হৃৎপি-, অগ্ন্যাশয়ের চারপাশে জমে থাকা এসব ক্ষতিকর চর্বি ধীরে ধীরে গলতে শুরু করবে। বিশেষজ্ঞদের মতে, চিনি শরীরে প্রদাহ বাড়ায়। ফলে শরীর দুর্বল হয়ে পড়ে। শরীর তখন পেট ও তার চারপাশে চর্বি সংরক্ষণ করতে শুরু করে। চিনি এবং অন্যান্য পরিশোধিত খাদ্যদ্রব্য শরীরে ইনসুলিনের পরিমাণ বাড়ায়। এই বাড়তি ইনসুলিনের কারণেও শরীর চর্বি সংরক্ষণ করতে শুরু করে। তাই পেটের ক্ষতিকর চর্বি থেকে মুক্তি পাওয়ার সহজতম উপায় হচ্ছে চিনি খাওয়া ছেড়ে দেওয়া।
ত্বক অকালে বুড়িয়ে যাবে না
চিনি খাওয়া ছেড়ে দিলে আপনি নিজের ত্বকের স্বাস্থ্যের এমন কিছু উন্নতি দেখতে পাবেন, যা হয়তো আপনার কাছে অপ্রত্যাশিত। চিনি কম খেলে ত্বক তারুণ্যদীপ্ত থাকে, ত্বকের বুড়িয়ে যাওয়া হ্রাস পায়। উচ্চ মাত্রায় চিনিযুক্ত খাবার এজিই (অ্যাডভান্সড গ্লাইসেশন অ্যান্ড প্রোডাক্ট) পরিমাণ বাড়ায়, যা ত্বকের দ্রুত বুড়িয়ে যাওয়ার জন্য দায়ী।
কর্মশক্তি বাড়বে
চিনি খাওয়া ছেড়ে দেওয়ার পরপরই আপনি নিজের ভেতর যে অল্প কিছু পরিবর্তন দেখতে পাবেন, তার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে হঠাৎ করেই আপনার এনার্জি লেভেল বেড়ে যাবে। পরিশোধিত চিনি এবং স্ন্যাকস খাওয়া বাদ দিলে আপনার শরীরে চিনির পরিমাণ থাকবে আগের চেয়ে বেশি নিয়ন্ত্রিত। সারা দিন আপনার মনমানসিকতা এবং এনার্জি লেভেল একই রকম থাকবে। অসময়ে আপনার ঘুম পাবে না, মনোযোগ দিয়ে কাজ করতে এবং ভালোভাবে চিন্তাভাবনা করতে পারবেন, আপনার মনটাও ভালো থাকবে।
দুপুরবেলা আর ক্লান্ত লাগবে না
অনেকেরই খাওয়ার পরে, বিশেষ করে দুপুরে খাওয়ার পর ক্লান্ত লাগে। অফিসে লাঞ্চ করার পরে অনেকেরই মনে হয়, ‘আহা! একটা বিছানা যদি থাকত!’ চিনি খাওয়া ছেড়ে দিলে এমন ক্লান্তি আর আপনার ওপর ভর করবে না। চিনি কমিয়ে উচ্চ আঁশ এবং প্রোটিনসমৃদ্ধ খাবার খেলে আপনার গ্লুকোজ থাকবে নিয়ন্ত্রণে। তাই সারা দিন, এমনকি দুপুরে খাওয়ার পরও কর্মতৎপর থাকবেন। কম জিআই (গ্লাইসেমিক ইনডেক্স) বিশিষ্ট খাবার খেলে আপনার শারীরিক শক্তি ও মানসিক দৃঢ়তা বাড়বে।
মনোযোগ বাড়বে
যখন আপনি ঘুমকাতুরে হবেন না এবং কর্মচঞ্চল থাকবেন, তখন আপনার মনোযোগ ও কর্মদক্ষতা বৃদ্ধি পাবে। এতে আপনি সারা দিনের সব কাজ সময়মতো করতে পারবেন। নিজের ও পরিবারের জন্য আপনার কোয়ালিটি টাইমের পরিমাণও বাড়বে।
ফ্যাটি লিভারের ঝুঁকি কমবে
চিনিযুক্ত খাবার কম খেলে আপনার যকৃৎ সুস্থ থাকবে, ফ্যাটি লিভারের ঝুঁকি কমবে। চিনি খাওয়া ছেড়ে দিলে যকৃতে চর্বির পরিমাণ কমবে এবং যকৃতের কার্যক্ষমতা বাড়বে।

ক্ষুধার যন্ত্রণা কমবে
খাওয়ার পর পরিশোধিত চিনির বিপাক খুব দ্রুত ঘটে। এতে রক্তে চিনির পরিমাণ সহসাই বেড়ে যায়। অতিরিক্ত চিনিযুক্ত খাবার বেশি খেলে আপনার ঘন ঘন ক্ষুধা লাগবে। কারণ, এসব খাবার অতি দ্রুত হজম হয়। যত বেশি ক্যালরি গ্রহণ করবেন, আপনার ওজন ততই বাড়বে। খাবার থেকে পরিশোধিত চিনি বাদ দিলে আপনার ক্যালরি গ্রহণ থাকবে পরিমিত।
হৃদ্‌রোগের ঝুঁকি কমবে
ডায়াবেটিস থাকলে উচ্চ রক্তচাপ এবং হাই কোলেস্টেরলের ঝুঁকি বাড়ে। আর এটা তো জানেনই, চিনি কম খেলে কমে যাবে ডায়াবেটিসের ঝুঁকি। ন্যাশনাল ইনস্টিটিউটস অব হেলথের মতে, চিনি বেশি খেলে হার্ট অ্যাটাক ও স্ট্রোকের ঝুঁকিও বাড়ে উল্লেখযোগ্য হারে।
মন ভালো থাকবে
রক্তে গ্লুকোজের পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারলে আবেগও নিয়ন্ত্রণে থাকবে। ফলে মনকে সারা দিন নিয়ন্ত্রণে রাখাও সহজ হবে। সূত্র: হেলথলাইন




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com