খুলনা জেলা আইন-শৃঙ্খলা কমিটির ফেব্রুয়ারি মাসের সভা রবিবার বিকালে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইফুল ইসলামের সভাপতিত্বে তার সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত হয়। পুলিশ সুপার টিএম মোশাররফ হোসেন সভায় জানান, বিগত মাসে খুলনা জেলা পুলিশের অধিক্ষেত্রে ঘটে যাওয়া তিনটি হত্যাকান্ড পরিবারিক কারণে হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে প্রতীয়মান হচ্ছে। সবকয়টি ক্ষেত্রে আসামী গ্রেপ্তার রয়েছে। অনলাইন জুয়ার বিস্তার বন্ধে পুলিশী অভিযানের সাথে নাগরিক সচেতনতা জরুরি। আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখাই এখন পুলিশের জন্য প্রথম অগ্রাধিকার।
আমরা সে লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছি। সভায় মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত উপপুলিশ কমিশনার মোহাঃ আহসান হাবীব জানান, পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে অপরাধ নিয়ন্ত্রণে মেট্রোপলিটন পুলিশের তদারকি বৃদ্ধি করা হচেছ। সম্প্রতি মাদকের বিরুদ্ধে নিয়মিত অভিযান চলছে এবং বিপুল পরিমাণ মাদকদ্রব্য আটক করা হয়েছে। অপরাধ দমনে নিয়মিত প্যাট্রলিং কার্যক্রম জোরদার করা হয়েছে। সভাপতির বক্তৃতায় জেলা প্রশাসক বলেন, আগামী রমজানে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের বাজারদর নিয়ন্ত্রণে তদারকি অভিযান পরিচালনা করা হবে। খুলনার বিভিন্ন উপজেলায় অবৈধ ইটভাটা বন্ধে পরিবেশ অধিদপ্তরকে সাথে নিয়ে অভিযান চালানো হবে। কাঠ পুড়িয়ে বাণিজ্যিকভাবে কয়লা তৈরির ব্যবসা পরিবেশের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। এর বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়া প্রয়োজন। সুন্দরবনে দস্যুতা, আটক করে মুক্তিপণ আদায়, বিষ দিয়ে মাছধরা বন্ধে নৌবাহিনী, কোস্টগার্ড ও পুলিশ বাহিনীকে বিশেষ অভিযান পরিচালনা করতে হবে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে করণীয় বিষয়ে উপজেলা পর্যায়ে গণ্যমান্য ব্যক্তি ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের নিয়ে পুলিশ ও উপজেলা প্রশাসন বৈঠক করতে পারে। অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্টেট দীপংকর দাশ সভায় বিগত মাসে খুলনা জেলা ও মহানগরীর আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি তুলে ধরেন। খুলনা জেলায় জানুয়ারি মাসে রাহাজানি ০১টি, চুরি ০৬টি, খুন ০৩টি, ধর্ষণ ০৪টি, নারী ও শিশু নির্যাতন ০২টি, মাদকদ্রব্য বিষয়ক ৪১টি এবং অন্যান্য ৪৬টিসহ মোট ১০৩টি মামলা হয়েছে যা’ বিগত মাসের চেয়ে আটটি কম। মহানগরে জানুয়ারি মাসে ডাকাতি ০২টি, চুরি ১৪টি, খুন ০২টি, অস্ত্র আইনে ০৪টি, দ্রুত বিচার ০৩টি, ধর্ষণ ০৫টি, অপহরণ ০২টি, নারী ও শিশু নির্যাতন ১৪টি, মাদকদ্রব্য বিষয়ক ৮৩টি এবং অন্যান্য ৪৯টিসহ মোট ১৭৮টি মামলা হয়েছে যা বিগত মাসের চেয়ে ৩১টি বেশি। সভায় উপজেলা নির্বাহী অফিসার, বিভিন্ন সরকারি দপ্তরের কর্মকর্তা-সহ কমিটির সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।