কুড়িগ্রামের রাজারহাট উপজেলার সিনাই ইউনিয়নের পাল পাড়া গ্রামের শিম চাষি নীল কমল (৬০)। এবছর লাভের আশায় মাচা তৈরি করে ১৮ শতক জমিতে চাষ করেছিলেন পটল। কিন্তু অতিবৃষ্টি ও বন্যার কারণে পটল খেত নষ্ট হয়ে ভেঙে যায় তার সে আশা। তিনি হতাশ না হয়ে সেই ১৮ শতক জমির মাটিতে বোনেন শিমের বীজ। সেই বীজ থেকে চারা গজিয়ে গাছে রূপান্তরিত হয়ে ডালপালায় পরিপূর্ণ হয়েছে মাচা। থোকা থোকা বেগুনী ফুলে সেজেছে শিমের খেত। আর শীতের মৃদু বাতাসে শিম ফুলের সঙ্গে দুলছে নীল কমলের স্বপ্ন।
সরেজমিনে গিয়ে বুধবার (১৮ নভেম্বর) বিকেল সাড়ে ৪টায় রাজারহাটের পাল পাড়া গ্রামে নীল কমলের শিম খেতে এমন চিত্র দেখা যায়। কুড়িগ্রাম কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা যায়, কুড়িগ্রাম জেলার ৯টি উপজেলার ৪ হাজার ২শ হেক্টর জমিতে শাক সবজি চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। তার মধ্যে ১শ ৭০ হেক্টর জমিতে এখন পর্যন্ত শিম চাষ করা হয়েছে।
শিম চাষি নীল কমলের সাথে কথা হলে তিনি জাগোনিউজ২৪.কমকে জানান, বন্যায় আগে পটল খেত নষ্ট হয়ে যাওয়ার পর পটল খেতের সেই মাচাকেই কেন্দ্র করে ১৮ শতক জমিতে বারী-১ জাতের শিম চাষ করেছি। পূর্বের মাচা থাকায় খরচ কমে যাওয়ায় শিম চাষে আমার ব্যয় হয়েছে মাত্র ৬ হাজার টাকা। শিম চাষে খরচ কম। পোকার আক্রমণ থেকে গাছকে রক্ষার জন্য স্প্রে করতেছি। শিম গাছের ডাল পালায় মাচা ভরে গেছে। বেগুনী ফুলের দৃশ্য দেখে খুবই আনন্দ লাগছে। আশা করছি ফলন খুবই ভালো হবে। শিম বিক্রি করে লাভবান হবো। বাজার দর ভালো পেলে ১ লাখ টাকার শিম বিক্রি করার আশা করছি। তিনি আরও জানান, আমার ভাতিজা একই এলাকার শিম চাষি রঞ্জিত চন্দ্র পাল ৮ হাজার টাকা ব্যয়ে ১৪ শতক জমিতে শিম চাষ করেছে। তারও শিম খেত সুন্দর হয়েছে। আশা রাখি আমার মতো তিনিও লাভবান হবেন।
কুড়িগ্রাম কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মো. আমিনুল ইসলাম জাগোনিউজ২৪.কমকে বলেন, আগস্ট-সেপ্টেম্বর মাসে শিম চাষ শুরু হয়। শিমের প্রতিটি মাচায় ৭৫-১০০ গ্রাম টিএসপি, পটাশ, জিপস সার ব্যবহারের প্রয়োজন হয়। অন্যান্য সবজি চাষের থেকে শিম চাষে খরচ তুলনামূলক কম। বেলে-দোআঁশ মাটিতে শিমের চাষ ভালো হয়। দুই জাত পোকার আক্রমণ হলে কীটনাশক দিয়ে শিম গাছ স্প্রে করতে হয়। অনুকুল আবহাওয়া বিদ্যমান থাকলে এবং সঠিক পরিচর্যা পেলে এবার কুড়িগ্রামে আশানুরূপ শিমের ফলন হবে। এবং কৃষকরা লাভবান হবেন।