বুধবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৫, ১১:১৬ অপরাহ্ন

হৃদয়ে দাগ ফেলেছে ‘দাগি’

বিনোদন ডেস্ক:
  • আপডেট সময় শুক্রবার, ১১ এপ্রিল, ২০২৫

ছোট পর্দার চিরচেনা আফরান নিশোকে দেখা যাচ্ছিল বড় পর্দায়। পর্দার কারণেই হয়তো তার ভাবমূর্তি বদলে যায় দর্শকচোখে। সেখানে সে মফস্বল শহরের রোমিও, তার প্রেমিকাও পাশের বাড়ির মেয়েটা। ‘দাগি’ সিনেমা দেখতে শুরু করলে এই অনুভূতিটুকু মিলে যেতে পারে কারও কারও সঙ্গে।
পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে মুক্তি পেয়েছে ‘দাগি’। শিহাব শাহীন পরিচালিত এই সিনেমায় অভিনয় করেছেন একঝাঁক চেনামুখ। মুখগুলো চেনা, গল্পটাও যেন নিজ শহরের – এ রকম গল্পের সিনেমা দেখতে কেমন লাগবে এ নিয়ে সংশয় ছিল। তার ওপর ছিল প্রচারণার চাপ। প্রায়শ্চিত্তের গল্প বলে ডেকে নিয়ে আসা হলো হলে, কিন্তু সেখানে আমরা কী দেখলাম?
ছোট ছোট সংলাপ শেয়ার করলে সিনেমার গল্পের ধারণা দেওয়া যাবে। ধরা যাক, নায়কের বাবার কণ্ঠে শোনা গেল সংলাপ – ‘অনেক ক্ষমতাশালীর পতন হয়েছে ক্ষমা চায়নি বলে!’ আবার নায়কের কণ্ঠে শোনা যায়, ‘জেলখানায় ভালো মানুষ নষ্ট হয়ে যায়, নষ্ট মানুষ পিশাচ হয়ে যায়।’ মনে হতে পারে রাজনৈতিক কাহিনি। জেল-হাজতবাস ইত্যাদি? গল্পটা আসলে সমাজের। এই সমাজের মানুষের হৃদয়ে জমে থাকা ক্রোধ জ্বলজ্বল করে উঠবে ‘দাগি’ সিনেমায়! দূর্ঘটনাজনিত হত্যা কীভাবে একজন ব্যক্তির জীবন এলোমেলো করে দেয় তা দেখানো হয়েছে ছবিতে।
বাংলাদেশের সিনেমার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে গান। অনেক দিন পর কোনো সিনেমায় গান দেখে মনে হয়েছে, গানটা একদম সঠিক সময়ে শুরু হয়েছে বা এই সময়ে এই পরিস্থিতিতে এই গানটি প্রয়োজন ছিল। অত্যন্ত হৃদয়গ্রাহী সেসব গানের কথা আর সুর। নতুন কণ্ঠ মাশা ইসলাম বা প্রতিষ্ঠিত তাহসান খান ছাড়াও যারা গেয়েছেন, কণ্ঠগুলো সিনেমাটির অন্য শূণ্যতা পূরণ করে দিয়েছে।
সিনেমার আবহসংগীত চমৎকার। শ্রোতার কানের জন্য আরামপ্রদ। এমনও মনে হয়েছে এই সিনেমা রেডিওতে প্রচার করলে শ্রোতা মুগ্ধ হয়ে উপভোগ করতেন। এমনকি সিনেমাটোগ্রাফি, কালারগ্রেডের প্রশংসা করতে হয়। পাকা হাতের কোনো চিত্রগ্রাহক, সুদক্ষ কোনো সম্পাদক ছবিটিকে করে তুলেছেন অনন্য। তবে দুটি ব্যাপার খটকা তৈরি করেছে। এক, এটি বড়পর্দার জন্য বানানো শিহাব শাহীনের দ্বিতীয় সিনেমা হলেও তিনি তো নির্মাতা হিসেবে পাকা! মূলত ছোট পর্দার অভিনেতা হলেও বড় পর্দার প্রথম সিনেমা ‘সুড়ঙ্গে’ ভালো করেছিলেন নিশো। ‘দাগি’ ছবিতে তাকে নাটকের অভিনেতা বলে মনে হচ্ছিল কেন? নাকি নাটক নির্মাতা শিহাব শাহীন নাটকের অভিনেতাকে নিয়ে বড় পর্দার জন্য টিভিনাটক বানিয়েছেন?
ছবিতে আকর্ষণীয় ছিল তমা মির্জা ও রাশেদ মামুন অপুর অভিনয়। মনে হয়েছে, দীর্ঘ সময় চরিত্রের সঙ্গে বসবাস করছিলেন তারা। সুনেরাহ বিনতে কামালের অভিনয়ও মন্দ হয়নি। সংলাপহীন অভিব্যক্তিতে অভিনয় করা সহজ কথা নয়। জ্যেষ্ঠ শিল্পী শহীদুজ্জামান সেলিম ও গাজী রাকায়েতকে পর্দায় পেয়ে ভালো লেগেছে বটে, কিন্তু মনে হয়েছে, তারা কেবল অংশগ্রহণের জন্যই এসেছিলেন।
সার্বিক বিচারে দাগি একটি ভালো সিনেমা। বলা যায়, হৃদয়ে দাগ ফেলেছে ‘দাগি’। কিন্তু এটি বছরের অন্য যে কোনো সময়ে মুক্তি দেওয়া যেত। ঈদের মতো প্রধান উৎসবে দরকার অন্য কিছু, যা সত্যিই উৎসবকে উসকে দেবে।




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com