ঘন কুয়াশা আর কনকনে শীতে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারীর মানুষের স্বাভাবিক জীবন যাপন। শীতের তীব্রতায় বিপাকে পড়েছেন নি¤œ আয়ের খেটে খাওয়া মানুষ। শীত জনিত রোগের প্রাদুর্ভাব বেড়ে গেছে। শীতের কবল থেকে বাঁচতে নিজেকে গৃহবন্দী করে রাখছেন অনেকেই। গত তিন দিন যাবত ভূরুঙ্গামারীতে রোদের দেখা মেলেনি। কুয়াশার সাদা চাদরে ঢাকা ছিল চারিদিক। বিকেল হলেই কুয়াশা পড়তে শুরু করে। রাত বাড়ার সাথে সাথে কুয়াশার মাত্রা বাড়তে থাকে আর তাপমাত্রা কমে যায় ব্যাপক হারে। মঙ্গলবার দুপুরে গুড়িগুড়ি বৃষ্টির মতো কুয়াশা পড়তে দেখা গেছে। ঘন কুয়াশার কারণে দিনের বেলায় হেড লাইট জ্বালিয়ে চালাতে হচ্ছে যানবাহন। শীতের কারণে দুর্ভোগে বেড়েছে নি¤œ আয়ের খেটে খাওয়া মানুষ সহ ছিন্নমূল ও চরাঞ্চলের মানুষের। শীতের কবল থেকে বাঁচতে তাঁরা ভীড় করছেন ফুটপাতে কমদামি গরম কাপড়ের দোকানে। যাদের সামর্থ্য নেই তাঁরা খড়-কুটা জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করছেন। রিকশা চালক নুরুল ইসলাম জানান, ঠান্ডার কারণে মানুষজন ঘর থেকে বের না হওয়ায় যাত্রীর সংখ্যা কমে গেছে। চা বিক্রেতা শহিদুল ইসলাম জানান, শীতের কারণে সন্ধ্যায় দোকানে আগের মত খরিদ্দার আসেনা। উপজেলা কৃষি অফিস বলছে, শৈত্য প্রবাহ দীর্ঘস্থায়ী হলে বীজতলা নষ্ট হওয়ার আশংকা রয়েছে। অপরদিকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের বহির বিভাগে শীত জনিত রোগীর সংখ্যা বেড়েছে। উপজেলা স্বাস্থ্যা ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আবু সাজ্জাদ মোহাম্মদ সায়েম জানান, শীত জনিত রোগ যেমন-সর্দি-কাশি, জ্বর ও এ্যাজমা রোগী আগের চেয়ে বেশি আসছেন। যার অধিকাংশই শিশু ও বয়স্ক নাগরিক। কৃষি আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগার রাজারহাট কুড়িগ্রামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সুবল চন্দ সরকার জানান, বুধবার কুড়িগ্রামের সর্বনি¤œ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৯ ডিগ্রী সেলসিয়াস। আগামী ৪/৫ দিন আবহাওয়া একই রকম থাকবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তবে আকাশ মেঘ মুক্ত হলে সূর্য দেখা যেতে পারে। সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি ও ব্যক্তি উদ্যোগে যে শীত বস্ত্র বিতরণ করা হয়েছে তা প্রয়োজনের তুলনায় খুবই নগন্য। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা দীপক কুমার দেব শর্মা জানান, প্রথম ধাপে দশ ইউনিয়নের জন্য বরাদ্দ ৪ হাজার ৬শ’ কম্বল বিতরণ করা হয়েছে। দ্বিতীয় ধাপে বরাদ্দ আরো ২ হাজার কম্বল আগামী এক-দুই দিনের মধ্যে বিতরণ করা হবে।