বিদেশি বিনিয়োগকারীরা বাংলাদেশে সরকারি বড় বড় প্রকল্পে স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদি বিনিয়োগে আগ্রহী বলে জানিয়েছেন পুঁজিবাজারের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম।
গতকাল সোমবার (২২ ফেব্রুয়ারি) বিএসইসি কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন। সম্প্রতি দুবাইয়ে অনুষ্ঠিত রোড শো নিয়ে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে নিয়ন্ত্রক সংস্থাটি।
বিএসইসি চেয়ারম্যান বলেন, ‘আমরা রোড শো-তে আমাদের ইকোনোমিকস ইন্ট্রোডিউস তুলে ধরলাম, আমরা কোথায় আছি টোটাল তথ্য প্রবাহ। কিছু কিছু জায়গায় ওরা আমাদের অনেক প্রশ্ন করেছে, অনেক কিছু জানল এবং সামনাসামনি অনেক কিছু শোনার পরে ওরা ডিসিশন নিল এখন ওরা কী করবে? এখন আমাদের প্রত্যেক দিন মেইল আসে। তাদের মধ্যে কিছু কিছু মিউচ্যুয়াল ফান্ডে ইনভেস্ট করতে চায়। সেখানে কী কী কারেকশন দরকার সেটার বিষয়ে ওরা সাজেশন দেয়।’
তিনি বলেন, ‘আমরা যখন এই প্রেজেন্টেশনটা করলাম, প্রেজেন্টেশনের পরে এরা প্রত্যেকেই আমাদের সঙ্গে আলাদা আলাদা মিটিং করেছে। প্রত্যেকেই বড় বড় ইনভেস্টর। এখানে ওয়ার্ল্ডের সব নাম করা যাদের সাত ট্রিলিয়ন, তিন ট্রিলিয়ন। তারা ভালো জায়গা খুঁজছে কোথায় ইনভেস্ট করতে পারে। তাদের দেশে বিনিয়োগ করে তারা তেমন কোনো রিটার্ন পাচ্ছে না এবং এই রেটিংয়ে যেসব দেশ সেসব দেশেই তারা বিনিয়োগ করে।’
‘আমাদের যে প্রজেক্টগুলো আসছে সেগুলোর সাইজ ৫০০ কোটি, হাজার কোটি, দুই হাজার কোটি, চার হাজার কোটি এরকম বিরাট বিরাট সাইজ। শুধু ইক্যুইটি মার্কেট দিয়ে এটার কোনো সলিউশন দেয়া সম্ভব না বলেই আমার বন্ডের কাজ করছি। বন্ডের মাধ্যমে একমাত্র আমাদের এই সলিউশন দেয়া সম্ভব। দেখা গেছে, কনভেনশনাল বন্ড ও সুকুক মার্কেট ট্রিলিয়ন ডলারের ওপর আছে এবং তাদের বিনিয়োগের জায়গা তারা খুঁজে পাচ্ছে না’ বলেন শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম।
বিএসইসি চেয়ারম্যান বলেন, ‘দুবাইতে গিয়ে আমরা বাংলাদেশর সঠিক ডাটা তুলে ধরলাম। তারা আমাদের ডেটা দেখে অবাক হয়েছে। তারা জানতে চেয়েছে, আমার ঠিক বলেছি কিনা; আমরা বলেছি, এগুলো সব সঠিক। কোথাও তোমাদের সন্দেহ থাকলে গুগল সার্চ করে দেখতে পার। তখন তারা বিশ্বাস করা শুরু করল। এমনকি সাম্প্রতিক সময়ে দুবাইয়ে অবস্থানরত দুই-তিনজন বাংলাদেশি ব্যবসায়ী বলল আমরা এখানে খুব সম্মান পাচ্ছি। যখন কোনো কাজে ব্যাংকে যাই, তারা আমাদের সম্মানের চোখে দেখে। আগের মতো তুচ্ছতাচ্ছিল্য করে না।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা যদি বিভিন্ন জায়গায় অর্থাৎ ফাইন্যান্সিয়াল হাব যেগুলো দুবাই, লন্ডন, নিউ ইয়র্ক, হংকং বা সিঙ্গাপুর এসব জায়গায় যদি বাংলাদেশের সঠিক তথ্য মানুষের কাছে, বিনিয়োগকারীর কাছে, বিদেশের সংবাদপত্র বা বিদেশের ব্যবসায়ীদের সামনে তুলে ধরতে পারি, তাহলে বাংলাদেশ সম্পর্কে যে একটা নেতিবাচক মনোভাব অনেক বছর ধরে রয়ে গেছে সেখান থেকে আমরা বেরিয়ে আসতে পারব। আমাদেরকে মানুষ সম্মানের চোখে দেখবে। এখনো তারা ভাবে আমরা বোধহয় মানুষের ডোনেশনের ওপর চলি। আমাদের যে এখন ডোনেশন লাগে না সেটা তারা জানে না।’