গাইবান্ধার পলাশবাড়ী উপজেলায় চলতি মৌসুমে ১’শ ২০ হেক্টর জমিতে ২ হাজার ৫২ জন পান চাষী পান চাষ করে নিজেদের ভাগ্য ফেরাচ্ছেন। পান দীর্ঘ দিনের পুরনো ঐতিহ্য। যা যুগে যুগে চলে আসছে। মিশে আছে এ পান চাষের সাথে। পান নারী পুরুষের ভালবাসার সেতু বন্ধন। পানের খিলি দিয়ে প্রকাশ করা হয় ভালবাসার অনুভূতি। আজও গ্রাম বাংলায় অতিথি আপ্যায়নে ব্যবহার করা হয় পান। গ্রামগঞ্জে এখনও অনেকেই বিভিন্ন উৎসব আনন্দে পানের ডালা সাজিয়ে প্রতিযোগীতা করাসহ উৎসব পালন করে থাকেন। এছাড়াও পান ব্যবহার করা হয় বিভিন্ন রোগের ঔষধ হিসেবে। পানের বরজ যেমন সারা বছরই চাষ করা যায় তেমনই নিত্যদিন হাট-বাজারে ক্রেতা ও বিক্রেতাদের কাছে পানের চাহিদা থাকে ব্যাপক। পলাশবাড়ী উপজেলার কিশোরগাড়ী ইউনিয়নের দিঘলকান্দি গ্রামের পান চাষী মিলন জানান, শুরুতে পানের বরজ লাগাতে যদিও সময় ও খরচ বেশি কিন্তু তুলনামূলক পরের বছর খরচ কম হয় এবং পানের বরজ লাগানোর এক বছর পর স্বাভাবিকভাবে পান উঠানো যায়। প্রথমে প্রতি বিঘাতে পানের বরজ লাগাতে প্রায় দেড় লক্ষ টাকা খরচ হয়। পরের বছর খরচ একটু কমে যায়। পানের বরজ লাগাতে শুরুতে উচু জমি নির্ধারণ করতে হয়। এরপর সার অথবা গোবর দিয়ে জমি চাষ করতে হয়। এছাড়াও বাশ, খড়, সুতা, স্প্রে ব্যবস্থা, ঔষধ, পানি সেচের ব্যবস্থা, মাটি মজুদ রাখাসহ দৈনিক পানের বরজে শ্রমিক নিয়োজিত রাখতে হয়। আবহাওয়া ভাল না থাকার কারণে এবছর পান চাষ ব্যাপক লোকসান। তবে আবহাওয়া ভাল থাকলে পান চাষ করে লাভবান হওয়া যায়। পান চাষে নিজেদের ভাগ্য যেমন বদলানো যায় ঠিক তেমনি পান চাষ করে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করা সম্ভব হয়। উপজেলা কৃষকলীগ সভাপতি আদম মালিক মোহাব্বতজান চৌধুরী জানান, এ উপজেলায় পান চাষে কৃষকদের যে উদ্যোগ তাতে করে দেশের চাহিদা মিটিয়ে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন সম্ভব হবে এবং পানের মানটিও যথেষ্ট উন্নত। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আজিজুল ইসলাম জানান, গত বছরের তুলনায় এবার এ উপজেলায় ২৭ টি ব্লকে ১’শ ২০ হেক্টর জমিতে ২ হাজার ৫২ জন পান চাষী ২ হাজার ৩’শ ৩৩টি বরজে পান চাষ করছেন। বর্তমানে আবহাওয়া ভালো হওয়ায় পান চাষ করে তারা প্রচুর লাভবান হবেন বলে মনে করেন তিনি।