শরীয়তপুর সদর উপজেলার পালং ইউনিয়নের ৫,৬,৭,৮,৯ নং ওয়ার্ডের জন্য বরাদ্ধকৃত সরকারের খাদ্য বান্ধব কর্মসূচীর আওতায় গরীবের জন্য ১০টাকা কেজি দরে ৩০ কেজি করে চাল বিতরন নিয়ে অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে। ডিলার বলছেন বস্তা ছিড়া থাকায় বস্তা খুলে চাল দেয়া হয়েছিল। অনিয়মের কারনে উপজেলা খাদ্য কর্মকর্তার রিপোর্টের ভিত্তিতে ডিলারসীপের সকল কার্যক্রম স্থগিত করে ৪৮ ঘন্টার মধ্যে জবাব দেয়ার নির্দেশ দিয়েছে সদর উপজেলা প্রশাসন।
সদর উপজেলা খাদ্য বিভাগ সূত্রে জানাগেছে, শরীয়তপুর সদর উপজেলার পালং ইউনিয়নের খাদ্যবান্ধব কর্মসূচীর আওতায় ৫,৬,৭,৮ও ৯ নং ওয়ার্ডের হতদরিদ্র গরীব মানুষের জন্য ২৫৫জন কার্ডধারীর অনুকুলে (৩০কেজি) ২৫৫ বস্তা চাল বরাদ্দ দিয়েছে। গত ১৫ এপ্রিল সকালে ঐ এলাকার জন্য নিযুক্ত ডিলার পালং ইউনিয়নের ৬ নং ওয়ার্ডের মেম্বার নব্যআওয়ামীলীগ নেতা বোরহান মুন্সির ছোট ভাই জাহাঙ্গীর মুন্সি মালামাল উত্তোলন করে গরীবের মধ্যে কানার বাজার এলাকায় বিতরন শুরু করে। এ সময় সরকারী নিয়ম নীতি উপেক্ষা করে টেগ অফিসার যাওয়ার পূর্বেই বস্তা খুলে বালতি দিয়ে কার্ডধারীদের মধ্যে চাল বিতরন শুরু করে। সরকারী নিয়ম অনুযায়ী বস্তা খুলে দেয়ার কোন নিয়ম নেই। টেগ অফিসার উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা লতিফা সেখানে যাওয়ার পর বার বার তাকে বস্তা খুলে চাল দিতে নিষেধ করেন। ডিলার কোন কথা শোনেন নি।
এসময় ২৩২ বস্তা চাল খুলে বিতরন করা হয়। মাত্র ২৩ বস্তা চাল মজুদ রয়েছে।এমতবস্থায় স্থানীয় লোকজন শরীয়তপুর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে ফোন করে বিষয়টি অবহিত করেন। খবর পেয়ে উপজেলা খাদ্য কর্মকর্তা ঘটনাস্থলে গিয়ে অভিযোগের সত্যতা প্রমান পায়। তিনি গত ১৬ এপ্রিল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নিকট লিখিত প্রতিবেদন দাখিল করেন। তার রিপোর্টের ভিত্তিতে ১৭ এপ্রিল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ডিলার জাহাঙ্গীর মুন্সির ডিলারসীপ সকল কার্যক্রম স্থগিত করে দেয়। একই সাথে কেন তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে না মর্মে তাকে আগামী ৪৮ ঘন্টার মধ্যে কারন দর্শানোর জন্য নোটিশ দিয়েছেন। আগামী শনিবার জবাব দেয়ার কথা রয়েছে। এ ব্যাপারে ডিলার জাহাঙ্গীর মুন্সি বলেন, বস্তা ছিড়া থাকায় বস্তা খুলে চাল বিতরন করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে টেগ অফিসার উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা লতিফা বলেন, আমি যাওয়ার আগেই ডিলার বস্তা খুলে চাল বিতরন শুরু করেছে।আমি গিয়ে তাকে বস্তা খুলে চাল দিতে নিষেধ করেছি।সে আমার কথায় তোয়াক্কা করেনি। ইতোমধ্যে ২৩২ বস্তা চাল বিতরনের পর উপজেলা খাদ্য কর্মকর্তা সেখানে হাজির হয়ে লোকজনের থেকে বিষয়টি জিজ্ঞাসা করে সত্যতা প্রমান পেয়ে ডিলারের কার্যক্রম স্থগিত করেন।
এ ব্যাপারে সদর উপজেলা খাদ্য কর্মকর্তা মোঃ নুরুল হক বলেন, আমি অভিযোগ পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে অভিযোগের সত্যতা পেয়েছি। ডিলার বস্তা খুলে বালতি দিলে ভোক্তাদের চাল দিচ্ছে। আমি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সাথে আলাপ করে কার্যক্রম স্থগিত করে দেই। পরে ১৬ এপ্রিল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নিকট লিখিত প্রতিবেদন দাখিল করেছি।
সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ মাহবুব রহমান সেক বলেন, এলাকার লোকজন আমাকে ফোনে বিষয়টি জানানোর পওে আমি খাদ্য কর্মকর্তাকে সেখানে পাঠাই। সে সরেজমিন তদন্ত কওে আমাকে লিখিত ভাবে অবহিত করেছে। তার রিপোর্টেও ভিত্তিতে আমি ডিলার কার্যক্রম স্থগিত করেছি। পাশাপাশি এ ও বলেছি যে কেন তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবেনা মর্মে ৪৮ ঘন্টার মধ্যে কারন দর্শাতে বলেছি।