বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল সাবেক সংসদ সদস্য অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেছেন, দেশ আমাদের সকলের। এখানে যে সব সমস্যা বিরাজমান সেগুলোর সমাধান সকলে মিলে করতে হবে। দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষা আমাদের সকলের দায়িত্ব। মহান স্বাধীনতার ৫০ বর্ষপুর্তিতে আমাদের শপথ হবে ‘বিভেদ নয় ঐক্যের’ মাধ্যমে দেশকে গড়ে তুলতে হবে। তিনি বলেন, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষা এবং মানুষের অধিকার আদায়ের সংগ্রামে জুলুম-নির্যাতনের শিকার হওয়া সত্ত্বেও শত প্রতিকূলতা ও প্রতিবন্ধকতা মোকাবেলা করে রাজপথে প্রতিবাদ মুখর থেকেছে। আগামী দিনেও সবাইকে সাথে নিয়ে জামায়াতে ইসলামী দেশ গড়ার প্রত্যয়ে আন্দোলন-সংগ্রাম অব্যাহত রাখবে ইনশাআল্লাহ। তাই তিনি মহান স্বাধীনতার ৫০ বর্ষপুর্তির এ ঐতিহাসিক মুহুর্তে দেশের বৃহত্তর কল্যাণে সকল শ্রেণি ও পেশার মানুষসহ সর্বস্তরের জনগণকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহবান জানান। মহান স্বাধীনতার ৫০ বর্ষপুর্তি উপলক্ষ্যে খুলনা মহানগরী জামায়াতে ইসলামী আয়োজিত বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সন্তানদের মাঝে শিক্ষা উপকরণ বিতরণকালে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ আহবান জানান।
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও খুলনা মহানগরী আমীর মাওলানা আবুল কালাম আজাদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সেক্রেটারি মুহাদ্দিস আব্দুল খালেক। এতে বক্তব্য রাখেন ও উপস্থিত ছিলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. মিজানুর রহমান, জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় মজলিসে শুরার সদস্য ও খুলনা উত্তর জেলা আমীর মাওলানা এমরান হোসাইন, কেন্দ্রীয় মজলিসে শুরার সদস্য ও খুলনা মহানগরী সেক্রেটারি অধ্যাপক মাহ্ফুজুর রহমান, সহকারী সেক্রেটারি এডভোকেট মুহাম্মদ শাহ আলম, এডভোকেট শেখ জাহাঙ্গীর হুসাইন হেলাল, ইসলামী ছাত্রশিবিরের খুলনা মহানগরী সভাপতি মোশাররফ হোসেন আনসারী প্রমূখ।
প্রধান অতিথি মিয়া গোলাম পরওয়ার আরো বলেন, মহান স্বাধীনতার ৫০তম বর্ষপুর্তির এই মুহুর্তে আমি গভীর শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করছি আমাদের মহান স্বাধীনতা সংগ্রামের সকল শহীদ ও সম্মানিত বীর মুক্তিযাদ্ধাদের যাদের বীরত্ব, দেশপ্রম ও আত্মত্যাগের বিনিময়ে আমরা প্রিয় জন্মভূমির স্বাধীনতা অর্জন করেছি। আমি আরও স্মরণ করছি বিশ্ব বরেন্য মুফাসিসিরে কুরআন ও সাবেক সংসদ সদস্য আল্লামা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এ টি এম আজহারুল ইসলামকে। যারা সরকারের প্রতিহিংসার শিকার হয়ে দীর্ঘ প্রায় ১১ বছর যাবত কারাগারে মানবেতর জীবন-যাপন করছেন। তিনি বলেন, দীর্ঘ ৯ মাসের মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে লাখো শহীদের রক্তের বিনিময়ে বিশ্বমানচিত্রে স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠিত হয়। মহান মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম লক্ষ্য ছিল গণতন্ত্র, আইনের শাসন, মানবাধিকার, বাক স্বাধীনতা, বেঁচে থাকার অধিকার ও অর্থনৈতিক মুক্তি। জনগণের প্রত্যাশা ছিল তারা তাদের মৌলিক অধিকারের নিশ্চয়তা পাবে, নিজের পছন্দের প্রার্থীকে নির্বাচিত করার ভোটাধিকার পাবে, ইজ্জত ও সম্মান নিয়ে বেঁচে থাকার গ্যারান্টি পাবে, সভা-সমাবেশ, চলাফেরা ও কথা বলার অধিকার পাবে। কিন্তু সেই অধিকারের জন্য আজও আমাদের আন্দোলন-সংগ্রাম করতে হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, দেশীয় কৃষ্টি-সংস্কৃতি, সামাজিক ও নৈতিক মূল্যবোধ আজ অবহেলিত। সংস্কৃতির নামে বিদেশি অপসংস্কৃতিকে জোরপূর্বক জাতির ঘাড়ে চাপানো হচ্ছে। বিদেশি চলচিত্র, শর্টফিল্ম, ওয়েব সিরিজ আমাদের যুব সমাজের চরিত্রকে ধ্বংস করে দিচ্ছে। যার বাস্তব প্রমাণ মাদকাসক্তি, খুন, গুম ও ধর্ষণসহ নির্বিচারে পিটিয়ে মানুষ হত্যা। এ জন্য তিনি সুখী সমৃদ্ধশালী ইনসাফপূর্ণ বাংলাদেশ গঠনে সকলকে হাতে হাত ধরে এগিয়ে যাওয়ার আহবান জানান।