রবিবার, ১৯ জানুয়ারী ২০২৫, ১০:৫০ অপরাহ্ন
শিরোনাম ::
দেশের উন্নয়ন ও মানুষের কল্যাণে বিএনপির নেতা কর্মীদের কাজ করতে হবে বনশ্রী আফতাব নগর প্রেসক্লাবের নবনির্বাচিত সভাপতি বাবলু পন্ডিত, সম্পাদক জহুরুল ইসলাম ইউনিয়ন ব্যাংক পিএলসি. এর নবগঠিত পরিচালনা পর্ষদের ১৫তম সভা মহানগরী জোন আন্তঃকলেজ ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় মাইলস্টোন কলেজের কৃতিত্ব স্বাধীনতার ঘোষক শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের আজ ৮৯তম জন্মবার্ষিকী নগরকান্দায় দু’গ্রামবাসীর মধ্যে সংঘর্ষ, ওসি, সাংবাদিকসহ আহত- ৩০ কালীগঞ্জে নানা সংকটে গ্রাম আদালত সুফল পেতে প্রয়োজন কার্যকরী উদ্যোগ কটিয়াদীতে তারুণ্যের উৎসব উদযাপন, ফুটবল টুর্নামেন্টের ফাইনাল ম্যাচ মুন্সীগঞ্জে লুন্ঠিত মালামালসহ ৭ ডাকাত গ্রেফতার লক্ষ্মীপুর ন্যাশনাল আইডিয়াল স্কুল এন্ড কলেজে বর্ণিল পিঠা উৎসব

অনাহারে অর্ধাহারে কাটছে নালিতাবাড়ী কাটাবাড়ি ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠির

নালিতাবাড়ী শেরপুর) প্রতিনিধি:
  • আপডেট সময় রবিবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২০

অদৃশ্য করোনা। থমকে গেছে পৃথিবী। থেমে গেছে সব। মানুষ হয়ে গেছে গৃহবন্দী। কর্মজীবীরা কর্মহীন হয়ে পড়েছে। বির্পযস্ত জন জীবন। শুরু হয়েছে অসহায় দরিদ্রদের হাহাকার। এমনি পরিস্থিতিতে বাদ পড়েনি শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলা। সরকার পর্যাপ্ত খাদ্য সহযোগিতা দিচ্ছেন মানুষদের। সকল স্তরের মানুষের দিকে সহযোগিতার হাত বাড়িয়েছেন সরকার। কম বেশ পাচ্ছে সবাই।
ভিন্ন চিত্র দেখা গেছে পাহাড়ি অঞ্চলে। নালিতাবাড়ী উপজেলার নয়াবিল ইউনিয়নের গারো পাহাড়ের অভ্যন্তরে কাটাবাড়ি অঞ্চলের প্রায় ৫০টি পরিবার। এই পরিবাররের অধিকাংশ মানুষ নিম্ন আয়ের। পাহাড়ে লাকড়ি সংগ্রহ, কৃষি শ্রমিক ও স্থলবন্দরে শ্রমিক হিসেবে কাজ করে এসব মানুষ। সবাই ক্ষুদ্র নৃ-তাত্বিক গারো সম্প্রদায়ের লোক। এই মানুষগুলো দিন আনে দিন খায়। করোনা পরিস্থিতিতে সব কিছু বন্ধ।
এসব অসহায় দরিদ্র মানুষগুলোর সাথে কথা বলে জানা গেছে, দিনে একবার তাদের চুলো জ¦লে। খাদ্য সংগ্রহের কোনো উপায় নেই তাদের। সরকারের ত্রাণ সহযোগিতা তাদের দোরগোড়ায় পৌঁছায় না। টাকার অভাবে কিনতে পারেনা সরকারের খাদ্য বান্ধব কর্মসুচির ১০ টাকা কেজির চাল। কর্মহীন এই মানুষগুলোর বেশ কিছু পরিবারের নারীরা সারাদিন পাহাড়ে ঘুরে। পাহাড়ি আলু সংগ্রহ করে। আর সেই আলু বিকেলে সিদ্ধ করে স্বামী সন্তান নিয়ে খিদের চাহিদা মেটায়।
জুলেখা মানখীন(৬০) জানায়, এখন আর আগের মতো পাহাড়ে আলু নেই। তাই সারাদিন ঘুরে যা পাই তা দিয়েই পেট চালাই। কেউ আমাদের সাহায্য করেনা। এ অবস্থা চলতে থাকলে আমাদের হয়তোবা একেবারে না খেয়ে দিন কাটাতে হবে।
বন্দর শ্রমিক কল্লোল মানখীন(২৮) বলেন, মরার করোনার কারণে বন্দর বন্ধ। আমরা বেকার। আমাদের ঘরে ভাত নেই। সাহায্য সহযোগিতাও পাইনা। কি করে যে দিন যাবে ভাবতে পারিনা।
সনিকা মানখীন(৬৫) জানান, আমার বয়স হয়ে গেছে। আগের মতো কাম কাজ করতে পারিনা। ঘরে অভাব। আলু খেয়ে আর দিন পার করতে পারছিনা।
উপজেলার নয়াবিল ইউনিয়নের কাটাবাড়ি দুর্গম এই পাহাড়ি অঞ্চলের মানুষগুলোর মধ্যে রয়েছে তিন জন প্রতিবন্ধী। অনু হাজং(৩৫), স্বাধীন ম্রং (৫০), অরুণ ম্রং (৬৫) এদের অবস্থা আরো খারাপ। দেখা গেছে, এরা পা নিয়ে হাঁটতে পারেন না। অনাহারে অর্ধাহারে কাটছে তাদের জীবন। প্রতিবন্ধী ভাতার কার্ডও তাদের ভাগ্যে জুটেনি। তাদের জীবনটা এখন নিজের কাছেই বোঝা মনে হচ্ছে বলে তাঁরা জানান।
স্থানীয়রা জানান, এই উত্তর কাটাবাড়ি অঞ্চলে দু’চারটা পরিবার একটু স্বচ্ছল হলেও অধিকাংশ মানুষ গরিব। প্রতিদিন শ্রমিকের কাজ বা লাকড়ি সংগ্রহে তাদের সংসার চলতো। দেশের এই করোনা পরিস্থিতিতে থেমে গেছে তাদের কর্ম। তাই অভাব তাদেরকে আকড়ে ধরেছে। দু’বেলা দু’মুঠো ভাত খাওয়া তাদের জন্য কঠিন ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। কেউ কোনো মানবিক সহায়তার হাত বাড়াচ্ছেন না। তাই এ অবস্থা চলতে থাকলে না খেয়ে চলবে তাদের জীবন যুদ্ধ।
দিনটি ছিল শনিবার চারজন সংবাদ কর্মী যাই গ্রামটিতে। পাহাড়ি পথ অতিক্রম করে তাদের কাছে যেতেই ছুটে আসে তারা। চোখ মুখ মলিন। পরনের কাপড়গুলো ময়লাযুক্ত। মাথায় এলোমেলো চুল। মনে হয় তেল ব্যবহার করেনা কতদিন ধরে। পেট অনেকটা চেপে আছে পিঠের সাথে। দেখলেই বুঝতে বাকি থাকেনা কতটুকু ক্ষুধা আছে পেটে। শুকনো মুখ। তবুও তারা কথা বলে হাসিমুখে। কয়েক ঘর মিলে বের করে দুটি চেয়ার। তাদের দু:খ, দুর্দশা, অভাব অনটনের বর্ণনা শুনে মনে হয় আসমানী কবিতার লাইন। তাই অনতিবিলম্বে মানবিক সহায়তার হাতটি এই মানুষগুলোর দিকে বাড়িয়ে দেওয়া প্রয়োজন বলে মনে করেন এলাকাবাসী।
ই-খ/খবরপত্র




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com