মিঠা পানি আর পলিমাটির অঞ্চল চরফ্যাশন উপজেলার উপকূলীয় এলাকায় শুষ্ক মৌসুমে হাজার,হাজার হেক্টর জমিতে আবাদ করা হয়েছে বাঙ্গি ও রসালো ফল তরমুজ। এবছর এ উপজেলায় আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় বাম্পার ফলন হয়েছে তরমুজ ও বাঙ্গির। আর এই তরমুজ সড়ক ও নৌ-পথে রপ্তানী করা হচ্ছে ঢাকা,চট্টগ্রাম ও বরিশাল সহ দেশের বিভিন্ন জেলায়। বাম্পার ফলনে চাষীরাও রয়েছেন খোশ মেজাজে। ক্ষেত থেকেও পাকা তরমুজ বিক্রি করছেন চাষীরা। আগাম তরমুজে বেশি মুনাফার আশায় পাইকারাও আসতে শুরু করেছেন চাষীদের দোর গোড়ায়। আবার অনেক চাষী পুরো ক্ষেত অধিক মুনাফায় আগাম বিক্রি করে দিচ্ছে। তবে গতবছর ঝরঝঞ্চা ও করোনায় বাজারঘাট বন্ধ থাকায় চাষীদের লোকসান গুনতে হলেও এ বছর যদি লকডাউন না থাকে তাহলে প্রথম কর্তনেই চাষীদের মূলধনসহ অধিক মুনাফা উঠে আসবে বলে মনে করেন বিশ্লেষকরা। তবে উপজেলার একাধীক চাষী বলেন, গতবছরে তরমুজ চাষীরা মূলধন হারিয়ে ঋণগ্রস্থ হলেও খবর নেয়নি সংশ্লিষ্টরা। এবছর ঋণ নিয়ে তরমুজ ও বাঙ্গির আবাদ করলেও প্রথম কর্তনে ক্ষেত থেকেই তরমুজের পাইকাররা নগদ টাকায় ক্রয় করছেন। তবে দ্বিতিয় কর্তনে মূলধনসহ লাভবান হবেন বলে আশা করছেন এসব তরমুজ চাষীরা। সরেজমিনে দেখা গেছে উপজেলার মুজিবনগর,নজরুল নগর,কলমী,নীলকমল,নুরাবাদ,আহম্মেদপুর ইউনিয়নসহ বিভিন্ন চরাঞ্চলে প্রায় ৫ হাজার হেক্টর জমিতে তরমুজ ও বাঙ্গির আবাদ করা হয়েছে। এসব এলাকার বিস্তীর্ণ এ তরমুজের ক্ষেতে চাষীরাও রয়েছেন কর্মব্যস্ততায়। প্রথম কর্তনেই উপজেলার বিভিন্ন হাটবাজারসহ ফলের দোকান ও আড়ৎগুলোতে তরমুজ ও বাঙ্গি আসতে শুরু করেছে। চৈত্রের গরমে লাল টকটকে রসালো এ আগাম তরমুজ একটু চড়া মূল্যেই বিক্রি হচ্ছে হাটবাজারগুলোতে। ফলে সাধারণ ক্রেতারাও সাধ্য অনুযায়ী ১৫০/টাকা থেকে শুরু করে ৩৫০/ টাকা খুচরা মূল্যে ক্রয় করছেন পিয়াসা মেটানো রসালো এ তরমুজ। এছাড়াও প্রতি পিচ বাঙ্গি ১০০ থেকে ১৫০ টাকায় খুচরা বিক্রি হচ্ছে। স্থানীয় বাজারের তরমুজ ব্যবসায়ী আবু কালাম জানান,গতবছর করোনার ধস গেলেও এবছর প্রথম কর্তনের তরমুজ বাজারে আসায় দাম একটু চড়া। আসছে রমজান মাস উপলক্ষে এসব তরমুজের দাম বাড়তে পারে বলেও মনে করেন তিনি। আড়ৎদার জামাল উদ্দিন বলেন, গতবছর লোকসান হলেও এবছর অধিক মুনাফা হবে তরমুজে। উপজেলা কৃষি বিদ আবু হাসনাইন বলেন,চরফ্যাশনে ৪ হাজার ৮৫০ হেক্টর জমিতে তরমুজ ও বাঙ্গি আবাদ হয়েছে। তরমুজ চাষীরা যেন বিপাকে না পড়ে এজন্য মাঠ পর্যায়ে আমাদের উপ-সহকারী কামরুজ্জামান শিপনসহ অন্যান্যরা সার্বক্ষনিক মাঠ পরিদর্শন ও চাষীদের পরামর্শ দিচ্ছেন। এছাড়াও ভোলা কৃষি সম্পসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. আবু এনায়েত উল্লাহসহ ঢাকা থেকে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণার একটি টিম উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে তরমুজের ক্ষেত পরিদর্শন করেছেন।