জামালপুরের মেলান্দহে অগ্নি বাতাসের কারণে বোর ধানের বিপর্যয়ে হয়েছে। এতে কৃষকদের মাঝে বিরাজ করছে হতাশার ছাপ। চলতি বোর মৌসুমে এপ্রিল মাসের দি¦তীয় সপ্তাহে অগ্নি বাতাস প্রবাহের কারণে এমনটা দেখা দিয়েছে। এজন্য পরিবেশ বিপর্যয়কে দায়ী করা হচ্ছে। কৃষি অফিসার জানিয়েছেন, চলতি বোর মৌসুমে ২০ হাজার ৫শ’ ৫০ হেক্টর জমিতে বোর ধানের আবাদ হয়েছে। তাৎক্ষণিকভাবে ফসলের আংশিক ক্ষতির পরিমান ৫% হিসেবে ১৩৫ জন কৃষকের ক্ষয়ক্ষতি দেখানো হলেও; মাঠ পর্যায়ে এর পরিমান আরো বেশি। সম্পূর্ণ ধানের ক্ষতির পরিমান দেখানো না হলেও; বাস্তবে ১১টি ইউনিয়নের কমপক্ষে ৩শতাধিক কৃষকের ২/৩শ’ হেক্টর জমির ধান নষ্ট হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, বিআর-২৮/২৯ জাতের ধানের ক্ষতি বেশি হয়েছে। অগ্নি বাতাসে অন্যান্য জাতের ধান ফুলের পরাগায়নেও বিঘ্ন ঘটেছে। অন্যান্য জাতের ধানেরও ক্ষতির একই কারণ বলে কৃষিবিদরা মনে করছেন। বালুআটা গ্রামের কৃষক রফিকুল ইসলাম জানান-আমার ২একর ২৬ শতাংশ , আবদুল বারি জানান-দুই বিঘার জমির ধান সম্পুর্ণ পুড়ে গেছে। বানিপাকুরিয়া এলাকার বর্গাচাষী জাফর আলী(৫২) জানান-অগ্নি বাতাস শুরু হবার পরপরই মাঠ থেকে দৌড়ে বাড়িতে আশ্রয় নেই। পরদিন সকালে আমার ৩বিঘা জমির পোড়া ধানের সম্পূর্ণ ক্ষয়ক্ষতি দেখে মর্মাহত ও কান্নাকাটি করি। আরেক কৃষক ফরহাদ আলী(৬০) জানান-আমার ৫বিঘা জমির সম্পূর্ণ ধানই পুড়ে গেছে। অনুরূপভাবে কৃষক ইসব আলী(৫৫)’র ৭বিঘা, আমিনুল ইসলাম(৩৫)’র ৩বিঘা জমির ধান আগুনের বাতাসে পুড়ে গেছে। এখন তাদের দিনাতিপাতের প্রশ্নে হতাশার দিনগুণছেন। রজব আলী(৩৮) ও শফিকুল ইসলাম(২৭) জানান-অগ্নি বাতাসে পুড়ে যাওয়া ধানের খড় গরুও খেতে চায় না। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল ফয়সাল জানান-সরেজমিনে ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকের ধান ক্ষেত পরিদর্শন করেছি। সম্ভাব্য ধানের ক্ষতি রোধে প্রয়োজনীয় চিকিৎসাও দেয়া হচ্ছে। প্রাকৃতিক দুর্যোগে যে ধানটা পুরোপুরি চিটা হয়েছে। কিংবা পরাগায়নের বিঘœ ঘটেছে সেটা ফেরানোর উপায় দেখছি না। পরিবেশ বিপর্যয়ের কারণ হিসেবে ক্লিন বাংলাদেশ-গ্রিন বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা-সমন্বয়ক মি. কাওসার আলীর মতে প্রকৃতির ভারসাম্য রক্ষায় সবুজায়নের স্বল্পতা, পানির স্তর কমে যাওয়া, পরিবেশের সাথে সাংঘর্ষিক মিলকারখানার বর্জ্য রাসায়নিক বিক্রিয়া পরিবেশ বিপর্যয়েন জন্য দায়ী। হঠাৎ মিথেন গ্যাসের প্রভাব এবং তা সুরক্ষা না থাকাটাও আতংকের বলে মনে করা হচ্ছে। এ ছাড়াও জলবায়ু সহিষ্ণু টপসয়েল নাশও ফসলের জন্য বড় হুমকী হয়ে দাড়িয়েছে।