শরণখোলায় অনাবৃষ্টি ও গ্রীস্মের তাপদাহে সর্বত্র চলছে পানির জন্য হাহাকার। শুকিয়ে গেছে পুকুর ও খাল বিল। গভীর ও অগভীর নলকূপের পানিসহ নদী ও খালের পানি লবনাক্ত। উপজেলার ৯ শতাধিক পুকুরের নলকুপ পিএসএফ অকেজো হয়ে পড়েছে। বাড়ছে ডায়রিয়া ও পানিবাহিত রোগ। উপজেলার দক্ষিণ রাজাপুর (রসুলপুর) গ্রামের বাসিন্দা শরণখোলা সরকারি কলেজের প্রভাষক আঃ জলিল জানান, গ্রীস্মের তাপে তাদের এলাকার খাল-বিল, পুকুর সব শুকিয়ে গেছে। পানি চরম লবনাক্ত। ৩/৪ মাইল পথ পাড়ি দিয়েও কেউ পানি পাচ্ছে না। বৃষ্টিরও দেখা নেই। মানুষ এখন পানির জন্য হাহাকার করছে। খুড়িয়াখালী গ্রামের রাসেল মুন্সি জানান, তাদের গ্রামের অধিকাংশ পুকুর এখন পানি শুন্য। পরিবারের নারী সদস্যরা ২/৩ মাইল পথ হেটে যে পানি আনছেন তাও দুষিত। আর ওই পানি পান করেই ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হচ্ছে মানুষ। উপজেলা সদর রায়েন্দা বাজারের বাসিন্দা ওয়াদুদ আকন, আঃ হাকিম তালুকদার, সুনিল শীল, নির্মল বালা জানান, তাদের এলাকার তিন শতাধিক পরিবার অগ্রদূত ফাউন্ডেশনের পুকুরের উপর নির্ভশীল। কিন্তু পুকুরের পানি শুকিয়ে যাওয়ায় প্রায় তিন মাস ধরে পিএসএফটি অকেজো হয়ে আছে। উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলী মেহেদী হাসান জানান, শরণখোলায় নলকুপের পানি লবনাক্ত হওয়ার কারনে পন্ড স্যান্ড ফিল্টার (পিএসএফ) ও রেইন ওয়াটার হার্ভেস্টিং এর উপর নির্ভর করতে হয় মানুষকে। উপজেলার চারটি ইউনিয়নে ১১ শতাধিক পিএসএফ থাকলেও তার ৯ শাতাধিক অকেজো। পুকুরের পানি শুকিয়ে যাওয়ায় বাকিগুলোও ব্যবহার অনুপোযোগী হয়ে পড়ছে। যার কারনে তীব্র পানি সংকট চলছে। শরণখোলা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ ফরিদা ইয়াছমিন জানান, শরণখোলায় পানি সংকটের কারণেই ডায়রিয়ায় আক্রান্তসহ পানি বাহিত রোগ বৃদ্ধি পাচ্ছে। মঙ্গলবার একদিনেই ২১ জন ডায়রিয়ার রোগী ভর্তি হয়েছে। শয্যা সংকটের কারণে তাই মেঝেতে রাখতে হচ্ছে। এনিয়ে ১এপ্রিল থেকে এ পর্যন্ত ১৪০ জন স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হলেও আক্রান্তের সংখ্যা অনেক বেশী। শরণখোলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সরদার মোস্তফা শাহিন জানান, শরণখোলার তীব্র পানি সংকট সমাধানে দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহন এবং স্থায়ী সমাধানে প্রকল্প গ্রহনের জন্য উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে লিখিত ভাবে জানানো হয়েছে। এছাড়া বাগেরহাট জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী সহ বেসরকারি সংস্থাগুলোকে জরুরী পদক্ষেপ নেয়ার জন্য বলা হয়েছে বলে ইউএনও জানান।