শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১১:৪০ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম ::
জব্দ ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খুলতে সাবেক ভূমিমন্ত্রীর রিট আরেক হত্যা মামলায় সাবেক বিচারপতি মানিককে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে মানহানির মামলায় খালাস পেলেন তারেক রহমান উৎপাদনে ফিরলো কর্ণফুলী পেপার মিল ২০৫০ সালের মধ্যে ৪ কোটি মানুষের মৃত্যু হবে অ্যান্টিবায়োটিক প্রতিরোধী সংক্রমণে দিল্লিতে মেয়ের সঙ্গে থাকছেন শেখ হাসিনা, দলবল নিয়ে ঘুরছেন পার্কে পিআইবির নতুন ডিজি ফারুক ওয়াসিফ, সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টের এমডি এম আবদুল্লাহ ষড়যন্ত্রের ফাঁদে পোশাক শিল্প আইন আপনার হাতে তুলে নেয়ার কারো কোনো অধিকার নেই :স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা সেনাবাহিনীকে ক্ষমতা দেয়ার বিষয়টি পুনর্বিবেচনা করতে বললেন মির্জা ফখরুল

চরফ্যাশনের বিছিন্নদ্বীপ ঢালচরে সাগরে ভাসছে ভূমিহীনরা

অশোক সাহা চরফ্যাসন :
  • আপডেট সময় শুক্রবার, ২৩ এপ্রিল, ২০২১

চরফ্যাশন ঢালচর ইউনিয়নে মেঘনার তীব্র ভাঙ্গনে আশ্রয়হীন গৃহহীনরা ১৪শ’ ভূমিহীন পরিবারের ঠাই হচ্ছে না সরকারী খাস জমিতে। তাই চরফ্যাশনের বিচ্ছিন্নদ্বীপ ঢালচর ইউনিয়নের মানুষ সাগরে ভাসছে। প্রায় ৩৫ বছর ধরে হাইকোর্টে রায় পেয়েও সীমানা নির্ধারণের পর ভূমিহীন কৃষকদের জমি বুঝিয়ে দেয়া হয়নি। ফলে মাথাগোঁজার নিশ্চিত করতে না পেরে ঢালচরের ১৪শ’ আশ্রয়হীন পরিবার পরিত্যক্ত বেঁড়িবাধের ঢালে  মানবেতর জীবন যাপন করছে। স্থানীয় ঢালচর বন বিভাগের জবর দখলের কারনে ক্ষোভ বাড়ছে গৃহহারা ভূমিহীন পরিবারের। অনুসন্ধানে জানাগেছে, ১৯৫০ সনে বঙ্গোপসাগর মোহনার ঢালচর দ্বীপের সূচনা হয়। ২০১০ সনে চরফ্যাশন উপজেলার ৯টি ওয়ার্ড নিয়ে ১৯নং ঢালচর ইউনিয়ন হিসেবে স্বীকৃতি পায়। ২০১৬ সাল থেকে অব্যাহত নদী ভাঙ্গনে ঢালচরের দুই-তৃতীয়াংশ বিলীন হলে এখন মানুষের মাথা গোজার ঠাই নাই। ৯টি ওয়ার্ড নিয়ে গঠিত ঢালচর ইউনিয়ন। ভাঙ্গন অব্যাহত থাকায় ইতিমধ্যে ৯টি ওয়ার্ডের ৬টি ওয়ার্ড পুরোপুরি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। যদি ওই চরে প্রায় ২১শ পরিবার বসবাস করছে। এর মধ্যে ১৩শ’ পরিবারের জমি ভিটে মাটি নদীগর্ভে তলিয়ে নিয়ে গেছে। কিন্ত এখানে এ পরিমান জনবসতির সংকুলান যেমন সম্ভব নয় তেমনি এখানে তাদের নিজস্ব কোন জমিও নেই। ভূমিহীন কৃষকদের নিজস্ব জমি না থাকলেও ঢালচর থেকে তারুয়া পর্যন্ত প্রায় ৪২শ’ একর জমি পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে আছে। মেঘনার ভাঙ্গনে গৃহহীন ভূমিহীন পরিবারগুলোর পরিত্যক্ত চাষযোগ্য ৪২শ’ একর জমিতে নিজেদের অধিকারের দাবী নিয়ে হাইকোর্ট থেকে রায় পেয়েও ৩৫ বছর যাবৎ প্রশাসনের দ্বারে দ্বারে ঘুরছে।  ঢালচর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আবুল কালাম মেম্বার জানান, ঢালচরের পরিত্যক্ত চাষযোগ্য ২৭শ’ একর জমি বন্দোবস্ত চেয়ে আসছে। বনবিভাগের বাঁধার কারণে ভূমিহীন কৃষকরা ১৯৮৬ সনে ভোলা সাব জজ আদালতে মামলা দায়ের করেন। দ্বীর্ঘ শুনানীর পর ২০১৯ সনে ভূমিহীন কৃষকদের অনুকূলে বন্দোবস্ত দেয়ার জন্য আদালত রায় প্রদান করেন। তিনি আরো বলেন, ইউনিয়ন পরিষদসহ ১১টি জুমার নামাজের মসজিদ একাধিক প্রতিষ্ঠান নদী ভাঙ্গনের ফলে ভেঙ্গে সরিয়ে  নিচ্ছে। ভূমিহীনরা একটু জায়গার জন্য হাহাকার করছে। রোহিঙ্গারা যদি বাংলাদেশে আশ্রয় পায় ঢালচরের মানুষ কেন ঢালচর নামক চরের কেন বসবাস করতে পারবে না। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও স্থানীয় সংসদ সদস্য আলহাজ্ব আবদুল্লাহ আল ইসলাম জ্যাকব মহাদয়ের হস্তেক্ষেপ কামনা করছেন। ঢালচরেরর স্থায়ী বাসিন্দা মোসাৎ পারুল বেগম বলেন, বুড়া-গৌরাঙ্গ ও তেতুলিয়া নদী শক্তভাবে ভাঙ্গনরোধে কার্যকরি ব্যবস্থা নিলে হয় আমরা আমাদের বাড়িঘর রক্ষা করতে পারতাম। আমার দেড় একর ঘর ভিটেসহ জমি নদী খেয়ে ফেলছে। ভূমিহীন আবু তাহের বলেন, আমাগো ওয়াডে নেই। নদী ভেঙ্গে তলিয়ে নিয়ে গেছে। আংগো ভিটের মাটি নদী নিয়া বালুর দ্বীপ(তারুয়া) বিশাল চর হইছে। হাজার হাজার একর জমি খালি পড়ে রয়েছে। ফরেস্ট অফিসারেরা আংগোরে সেখানে বসবাস করতে দেয়না। সরকার যাতে আংগো বসবাসের ব্যবস্থা করে আপনেরা সাংবাদিকেরা আমাগো প্রধানমন্ত্রী হাসিনাকে একটু বইলেন। ভূমিহীন মো.ইউনুছ লাঠিয়াল বলেন, আমরা মাথা গুজাবার জায়গা পাই না আর তারুয়াদ্বীপ,জালাল চরে হাজার হাজার একক জমি খালী পরে রয়েছে। আমোগো জায়গা ভেঙ্গে চর জাগছে। তাই আমরাই ও চরের বসবাস করতে চাই বিছিন্নদ্বীপ ঢালচর ইউপি চেয়ারম্যান আ.সালমা হাওলাদার প্রতিনিধিকে বলেন ৬টি ওয়ার্ড পুরো গিলে খেয়েছে নদী। চর জেগে হাজার হাজার একর জমি খালী পড়ে রয়েছে। ফরেষ্টারদের কোন গাছ নেই। আমার ওয়ার্ডের ভোটারেরা, বেঁড়িবাধে, ওকরাত থেকে জীবন যাপন করছে। বন বিভাগে বিভিন্ন অজুহতে অসহায় মানুষ যাতে বসবাস করতে না পারে সে জন্য মামলা হামলা দিয়ে হয়রানি করছে। অথচ উচ্চ আদালতের রায়ের প্রেক্ষিতে ২০২০ সনে ২৭ একর জমি তৎকালীন জেলা প্রশাসক ভূমিহীন কৃষকদের মধ্যে বন্দোবস্ত প্রদানের নির্দেশ দেন। নির্দেশ প্রাপ্তির পর চরফ্যাশন সহকারী কমিশনার (ভূমি) সরেজমিন গিয়ে ঢালচরের ৪২শ’ একর জমির সীমানা নির্ধারণ করে বন্দোবস্ত প্রক্রিয়া শুরু করেন। এরপর কিছু কিছু ভূমিহীন কৃষক পরিবার ওই জমিতে ঘর নির্মাণ করে বসতি শুরু করেন। এই বসতি উচ্ছেদের জন্য বনবিভাগ ওই পরিবারগুলোর ওপর হামলা ও মামলা দিয়ে নানান ভাবে আতংক সৃষ্টি করেন।‘তারুয়া দ্বীপ ও পূর্ব ঢালচরে’ মানুষ বসবাসের সু-ব্যবস্থা করতে সরকারের কাছে ঢালচর ইউনিয়ন বাসীর পক্ষে জোড় দাবী জানাচ্ছি। ঢালচর বনবিভাগের রেঞ্জ কর্মকর্তা টি.এম আতিকুর রহমান জানান, পূর্ব ও দক্ষিণ-পশ্চিম ঢালচরে ৪২শ’ একর খাসজমি পরিত্যক্ত আছে, মানবিক কারনে যেখানে ঢালচরের মেঘনার ভাঙ্গনে আশ্রয়হীন পরিবারের মধ্যে খাস জমি বন্ধোবস্তের মাধ্যমে বসতি দেয়া সম্ভব। চরফ্যাশন উপজেলা সহকারী কমিশনার(ভুমি) রিপন বিশ^াস জানান, বিষয়টি নিয়ে ভুমি মন্ত্রণালয় এবং পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয়ের এখনও টানাপোড়ন রয়েছে। উভয় মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্ত হলে জমি বন্দোবস্ত দিতে আর কোন বাধা থাকবে না।




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com