রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ১২:০৪ অপরাহ্ন

বোরোতে কৃষকে ন্যায্যমূল্য দেয়ার চিন্তা করে সিদ্ধান্ত হয়েছে

খবরপত্র ডেস্ক:
  • আপডেট সময় সোমবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২১

চলতি বোরো মৌসুমে সরকারিভাবে অভ্যন্তরীণ বাজার থেকে মিল মালিকদের কাছ থেকে সাড়ে ১১ লাখ টন সেদ্ধ ও আতপ চাল এবং সাড়ে ৬ লাখ টন ধান কেনা হবে বলে জানিয়েছেন খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার। গতকাল সোমবার (২৬ এপ্রিল) আসন্ন বোরো সংগ্রহ কর্মসূচি উপলক্ষে ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার এ তথ্য জানান। ৪০ টাকা কেজি দরে ১০ লাখ টন সেদ্ধ চাল, ৩৯ টাকা কেজি দরে দেড় লাখ টন আতপ চাল এবং কৃষকদের কাছ থেকে ২৭ টাকা কেজি দরে ধান কেনা হবে বলেও জানানমন্ত্রী। আগামী ২৮ এপ্রিল থেকে ধান এবং ৭ মে থেকে চাল সংগ্রহ শুরু হবে বলেও জানান সাধন চন্দ্র মজুমদার। তিনি বলেন, ‘গত ২২ এপ্রিল খাদ্য পরিকল্পনা ও পরিধারণ কমিটির ভার্চুয়াল সভা হয়। কতগুলো সিদ্ধান্ত অসম্পূর্ণ ও নীতিগত সমস্যা থাকায় সেদিন সংবাদ সম্মেলন করা সম্ভব হয়নি। বোরোতে কৃষকে ন্যায্যমূল্য দেয়ার চিন্তা করে সিদ্ধান্ত হয়েছে। সেই সিদ্ধান্তে প্রধানমন্ত্রী অনুমোদনও দিয়েছেন।’
খাদ্যমন্ত্রী বলেন, ‘গত বছর বোরো মৌসুমে ২৬ টাকা কেজি দরে ধান, ৩৭ টাকা কেজি দরে সিদ্ধ চাল ও ৩৬ টাকা কেজি দরে আতপ চাল কেনা হয়েছিল।’ সেই হিসাবে এবার এক টাকা বেশি দরে ধান ও ৩ টাকা কেজি দরে চাল কেনা হচ্ছে। খাদ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আশা করি সঠিকভাবে আমরা ধান-চাল কিনতে পারব, মাঠ পর্যায়ে আমরা সেই নির্দেশনা দিয়েছি। মাঠ পর্যায়ে এই নির্দেশনাও দেয়া হয়েছে যে, কোনো কৃষক যাতে ধান নিয়ে এসে ফেরত না যান। কোনো ঝামেলা যেন না হয়। চালের মানের বিষয়ে কোনো ক¤েপ্রামাইজ নেই। সঠিকতা বজায় রেখে ৪০ শতাংশ আর্দ্রতার চাল ও ধান কেনার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।’
এবার ধানে গত বছরের চেয়ে এক টাকাও চালে ৩ টাকা বাড়ানো হলো, এটার মাধ্যমে কী কৃষকের প্রতি সদয় দৃষ্টি দেয়া হলো? আপনি কী মনে করেন- এমন প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, ‘একটা জিনিস মনে রাখতে হবে ৬০ কেজি ধানে ৩৯ কেজি চাল হয়, সেই হিসাবে প্রতি কেজি ধানের দাম ২৭ টাকা হলে প্রতি কেজি চালের দাম হওয়ার কথা ৪২ টাকা কয়েক পয়সা। খুদ-কুড়ো বাদ দিয়ে আমরা দাম ৪০ টাকায় এনেছি। এর চেয়ে দাম বাড়ানো হলে বাজারে চালের দাম আরও বাড়বে। এতে আরও অস্থিরতা দেখা দেবে।’

বাজারে দাম বেশি থাকলে সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হয় না, এবার এই আশঙ্কা করছেন কিনা- এ বিষয়ে খাদ্যমন্ত্রী বলেন, ‘এখনও আমরা সেই আশঙ্কা করছি না। কারণ এখনও ফসল ভালো। কোনো প্রাকৃতিক দুযোগ যদি না হয় ধান যদি তোলা যায়, এবার অসুবিধা হওয়ার কথা নয়।’ এবার বোরো ধান ও চালের কেজিপ্রতি উৎপাদন খরচ কত- জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘একেক জায়গা থেকে একেক রকম এসেছে। কৃষি মন্ত্রণালয় থেকে একরকম, কৃষি বিপণন অধিদফতর থেকে একরকম। তবে সরকার যে সেচে, সারে প্রণোদনা দেয় তাতে আমি মনে করি উৎপাদন খরচ থেকে তাদের লাভবান করে এই রেট দেয়া হয়েছে।’
বোরো সংগ্রহের এই লক্ষ্যমাত্রা অর্জন ও চালের দাম নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হবে কিনা- জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, ‘তথ্য বিভ্রাট হলে তখন কিন্তু একটু প্রবলেম হয়ে যায়। যখন দেখা যায় চাল উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ৩ কোটি ৮৭ লাখ ২৪ হাজার টন। বিবিএসের রিপোর্টে যখন দেখা যায় উৎপাদন ৩ কোটি ৬৬ হাজার টন। ২১ লাখ টন কম উৎপাদিত হয়েছে আম্পান ও চারবার বন্যার কারণে, সেই কারণে দাম বাড়াটা সম্ভব। সেটাকে মোকাবিলার জন্য আমাদের নানাবিধ পদক্ষেপ নিতে হয়েছে। বাজারের ঊর্ধ্বগতি রোধ করতে পেরেছি বলে আমরা বিশ্বাস করি। দাম আর বাড়তে দেব না।’ তিনি বলেন, ‘সবাই সিন্ডিকেটের কথা বলি কিন্তু কেউ সিন্ডিকেট ধরিয়ে দিতে পারি না। আমরাও চেষ্টা করেছি, কোনো সিন্ডিকেট পাইনি। সাপ্লাই বেশি থাকলে কোনো সিন্ডিকেট কাজ করে না। সিন্ডিকেট করে কেউ পার পাওয়ার সুযোগ নেই। সাংবাদিক বন্ধুদের অনুরোধ করব এই রকম কোনো স্টকের খোঁজ পান…আমরাও খোঁজে আছি।’
দুই বছরে আগে দায়িত্ব নেয়ার পর ২০০টি পেডি সাইলো করার কথা বলেছিলেন, এর কোনো অগ্রগতি আছে কিনা- এ বিষয়ে খাদ্যমন্ত্রী বলেন, ‘৫ হাজার টন ধারণ ক্ষমতার ২০০টি পেডি সাইলো করার সিদ্ধান্ত রয়েছে। আমরা ইতোমধ্যে প্ল্যানিংয়ে পাঠিয়েছি। পরে এটা পাইলট স্কিম হিসেবে জিওবি ফান্ডে অনুমোদন করেছে। ধারণ ক্ষমতা ৫ হাজারের স্থলে ১০ হাজার টন করার জন্য বলা হয়েছে। সেটারও ডিপিপি তৈরি করে প্ল্যানিংয়ে দিয়েছি। বিদেশি ফান্ডে আরও ১৭০টি এই সাইলো করার সিদ্ধান্ত আছে। এটা প্রক্রিয়াধীন আছে। কোভিড আমাদের পিছিয়ে দিয়েছে।’ ধান দিতে লটারিতে কৃষকের নাম উঠলে সে যাতে অন্য কারো কাছে স্লিপটা বিক্রি না করে সংবাদ সম্মেলনে সেই অনুরোধ জানিয়েছেন কৃষি সচিব মোছাম্মৎ নাজমানারা খানুম।




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com