শপিংমলের বিক্রেতার মুখে মাস্ক নেই, আবার মাস্ক রয়েছে তাঁর নিকটেই। ক্যামেরা বা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর উপস্থিতি টের পেলেই মাস্ক পরিধান করছেন। মাস্ক পরিধানের ব্যাপারে বিক্রেতাগণ বলছেন, সর্বক্ষণ মাস্ক পরে থাকা যায় না। কেউ বলছেন মাস্ক পরে থাকলে ক্রেতাগণ কথা বুঝতে পারছেন না। ক্রেতাদের অবস্থাও প্রায় একই। সারাদেশে করোনা রোধে সরকারের বিধি-নিষেধ চলছে। গত কয়েক দিন থেকে দোকানপাট খুলে দেওয়া হয়েছে। ফলে মানুষ যাচ্ছে শপিংমলে। যদিও অন্যদিনের চেয়ে আজ শপিংমল গুলিতে লক্ষ্য করা গেছে ভিড় বেশি। এদিকে ঈদের সময়ও ঘনিয়ে আসায় কেনাকাটার চাপও পড়েছে। অথচ যে কারণে সরকার কঠোর বিধি-নিষেধ জারি করেছে, তা উপেক্ষিতই থাকছে। শপিংমলে মানছেনা স্বাস্থ্যবিধি। স্বাস্থ্য বিধি না মানলে করোনা সংক্রমণ বৃদ্ধির সম্ভাবনা রয়েছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। দোকানপাট খুলে দেয়ার পর থেকেই বেলকুচি পৌর এলাকার মার্কেটে এ দৃশ্য দেখা গেছে। যদিও অন্যন্যা বছরগুলোর তুলনায় ক্রেতাদের সংখ্যা একটু কম। তথাপিও করোনা সংক্রমণের মধ্যেই মুকুন্দগাঁতীর বিপণী বিতান গুলিতে উপচেপড়া ভিড় ছিল। রাস্তাঘাট এবং শপিংমল দেখে বোঝার উপায় নেই, করোনা সংক্রমণ রোধে সরকারের দেওয়া কঠোর বিধি-নিষেধ চলমান রয়েছে। তবে এমন জনবহুল শপিংমলে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা যে সম্ভব নয়,তা অকপটে স্বীকার করছেন ক্রেতা ও বিক্রেতারা। মাস্ক পরেননি কেন জানতে চাইলে রুহুল আমিন নামের এক দোকানি বলেন, সব সময় তো আর মাস্ক পরে থাকা যায় না। সব সময় পরাও হয় না। ক্যামেরা বা প্রশাসনের লোক দেখলেই মাস্ক পরা হয়। পাশে থাকা মিজান নামের আরেক বিক্রেতা অন্যদিনের তুলনায় ভালো বিক্রির কথা জানিয়ে বলে, অন্য দিনের তুলনায় ভালো বিক্রি হচ্ছে। আর সরকার যে স্বাস্থ্যবিধি মানার কথা বলছে, তা চাইলে মানা সম্ভব। কিন্তু আমরা তো মাস্ক নিচে নামিয়ে রাখি। কারণ, কথা বলছে ক্রেতা সব সময় ভালো বুঝতে পারেন না। এখন করি বলুন? কাস্টমার যেহেতু ভালো বুঝতে পারছেনা, সেহেতু আমাকে মাস্ক খুলে কথা বলতে হয়। ঈদকে সামনে রেখে কেনাকাটা করতে ভিড় জমেছে ভাই ভাই হকার্স মার্কেটে। এখানে জনসমাগম দেখে বোঝার উপায় নেই, এটা মহামারীরর সময় বা করোনাকাল। মুকুন্দগাঁতী ঢালুতে কথা হয় আর একজন ক্রেতার সাথে, সে জানান,মাস্ক আমি কখনও পরি না। দোয়া পড়ে বাড়ি থেকে বের হয়েছি। আল্লার প্রতি বিশ্বাস আছে। আমার কোনো সমস্যা হবেনা। অথচ পাশের দেশ ভারতে প্রতিদিনই করোনায় আক্রান্ত ও মৃত্যুর রেকর্ড হচ্ছে। ভারতে অসহায় অবস্থা দেখে কাঁদছে সারাবিশ্ব। তখন দেশের বিপণী বিতানগুলিতে এমন জনসমাগম আসলে করোনা সংক্রমনের শঙ্কাই বাড়িয়ে দেয় বলে মনে করছেন জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা। এ ব্যাপারে বেলকুচি উপজেলা নির্বাহী অফিসার আনিসুর রহমান প্রতিবেদককে জানান, আমরা প্রতিনিয়ত মার্কেট পর্যবেক্ষণ করছি এবং মাস্ক পরিধানসহ স্বাস্থ্যবিধি না মানায় জড়িমানাও করছি। তবে এমন ভয়াবহ পরিস্থিতিতে জনগনকে নিজে থেকে সচেতন হতে হবে, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বা ক্যামেরা দেখে ভয় না পেয়ে করোনাকে ভয় পেতে হবে, তবেই এ সংকট নিরসন হবে বলে তিনি জানান।