যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছেন, ইসরাইলি ও ফিলিস্তিনিদের মধ্যে সংকট সমাধানের এক মাত্র পথ উভয়পক্ষের জন্য আলাদা রাষ্ট্র গঠন করা। গত শুক্রবার দেশটিতে সফররত দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট মুন জে-ইনের সাথে বৈঠকের পর এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে এই কথা বলেন তিনি। মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘ইসরাইলের নিরাপত্তায় আমার অঙ্গীকারের কোনো পরিবর্তন হয়নি। সময়সীমা বা অন্য কিছুই পরিবর্তিত হয়নি।’ জো বাইডেন বলেন, ‘তবে দুই রাষ্ট্রভিত্তিক সমাধানের দিকে আমাদের অবস্থান পরিবর্তন করতে হবে। সংকট সমাধানে এটিই একমাত্র উত্তর।’
একইসাথে গাজা পুনর্র্নিমাণে আরো দেশের সাথে একত্রে এক বৃহৎ প্যাকেজ সহায়তা দানে সংবাদ সম্মেলনে প্রতিশ্রুতি দেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। অধিকৃত জেরুসালেমের শেখ জাররাহ মহল্লা থেকে ফিলিস্তিনি বাসিন্দাদের উচ্ছেদ করে ইহুদি বসতি স্থাপনে গত ২৫ এপ্রিল ইসরাইলি আদালতের আদেশের জেরে ফিলিস্তিনিদের বিক্ষোভে পরপর কয়েক দফা মসজিদুল আকসায় হামলা চালায় ইসরাইলি বাহিনী। ৭ মে থেকে ১০ মে পর্যন্ত এই সকল হামলায় এক হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি আহত হয়েছেন বলে জাতিসঙ্ঘের মানবিক সাহায্য বিষয়ক দফতর ইউএনওসিএইএ। মসজিদুল আকসা চত্ত্বরে মুসল্লিদের ওপর ইসরাইলি নিরাপত্তা বাহিনীর হামলার পরিপ্রেক্ষিতে ১০ মে স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ৬টার মধ্যে মসজিদ থেকে সৈন্য সরিয়ে নিতে ইসরাইলকে আলটিমেটাম দেয় গাজা নিয়ন্ত্রণকারী ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস। আলটিমেটাম শেষ হওয়ার পর গাজা থেকে ইসরাইলের বিভিন্ন লক্ষ্যবস্তুতে হামাস রকেট হামলা শুরু করে।
ইসরাইলি সেনাবাহিনী জানিয়েছে, গাজা থেকে ইসরাইলি ভূখ-ে মোট চার হাজার তিন শ’ ৬০টি রকেট নিক্ষেপ করা হয়েছে। ইসরাইলি আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা আয়রন ডোমে বেশিরভাগ রকেট ধ্বংস করা হলেও বেশ কিছু রকেট ইসরাইলের বিভিন্ন স্থানে আঘাত হানে। রকেট হামলায় ইসরাইলের ১২ অধিবাসী নিহত ও সাত শ’ ৯৬ জনের বেশি আহত হয়েছেন। ইসরাইল ভূখণ্ডে হামাসের রকেট হামলার পরিপ্রেক্ষিতে ১০ মে রাত থেকেই গাজায় বিমান হামলা শুরু করে ইসরাইল। ইসরাইলি বিমান হামলায় ৬৬ শিশু ও ৩৯ নারীসহ ২৪৮ ফিলিস্তিনি নিহত হন। হামলায় আহত হয়েছেন আরো এক হাজার নয় শ’ ৮৪ গাজাবাসী। ফিলিস্তিনি গৃহায়ন মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুসারে, ইসরাইলি হামলায় গাজায় মোট এক হাজার বাড়ি সম্পূর্ণ ধ্বংস ও এক হাজার আট শ’ বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। গাজায় ইসরাইলের টানা ১১ দিনের আগ্রাসনের পর বৃহস্পতিবার রাতে ইসরাইল ও হামাস যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হওয়ার ঘোষণা দেয়। মিসরীয় উদ্যোগে এই যুদ্ধবিরতির প্রচেষ্টায় ইসরাইলি মন্ত্রিসভার অনুমোদনের পর শুক্রবার সকাল থেকে তা কার্যকর হয়। ফিলিস্তিনিরা এই যুদ্ধবিরতিকে নিজেদের বিজয় হিসেবে গণ্য করছেন। সূত্র : আনাদোলু এজেন্সি