দীর্ঘদিন বন্ধ রাখার পর চলমান বিধিনিষেধের মধ্যেই দূরপাল্লার বাস চলাচলের অনুমতি দিয়েছে সরকার। সোমবার সকাল থেকে বাস চালুর অনুমতি দেয়া হলেও কিছু বাস রোববার দিবাগত মধ্যরাত থেকেই যাত্রা শুরু করেছে। স্বাস্থ্যবিধি মেনে বিভিন্ন রুটে চলছে বাসগুলো। দূরপাল্লার বাস বন্ধ থাকায় ঈদে গ্রামে যেতে পারেননি এমন অনেনককে গতকাল সোমবার বাড়ির উদ্দেশে রওনা হতে দেখা গেছে। বাস চালু হওয়ায় যাত্রী ও পরিবহন খাত সংশ্লিষ্টদের মধ্যেও সন্তোষ দেখা গেছে। গতকাল সোমবার সকালে রাজধানীর গাবতলী বাস টার্মিনালে এ চিত্র দেখা গেছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, দীর্ঘদিন পর বাস কাউন্টারগুলো খুলেছে। বাসগুলো টার্মিনালে কাউন্টারের সামনে এসে দাঁড়াচ্ছে। কিছু কিছু বাসে জীবাণুনাশক ছিটাতে দেখা গেছে। তবে পরিবহন সংশ্লিষ্টরা বলছেন, চাহিদা অনুযায়ী যাত্রীর চাপ নেই। যাত্রী আসা মাত্রই দাঁড়িয়ে থাকা বাসের চালক-সহকারীরা তাদের ডেকে তুলছেন। যাত্রী ও পরিবহন শ্রমিকদের আগমন বাড়ায় টার্মিনাল সংলগ্ন দোকানপাট, হোটেলগুলোও খুলেছে। গাবতলী বাস টার্মিনালের সামনে সাইফুল ইসলাম নামে এক যাত্রী জাগো নিউজকে বলেন, ‘ঈদে বাড়ি যেতে পারিনি। অফিসে রাতে ডিউটি ছিল। খবরে দেখলাম দূরপাল্লার বাস চলবে আজ সকাল থেকে। তাই ডিউটি শেষে বেরিয়ে আসলাম। গ্রামের বাড়ি ঠাকুরগাঁও যাব। যদি বাস চলতো তাহলে হয়তো ঈদেই বাাড়িতে যেতাম।’
গত রোববার (২৩ মে) রাত ১১টায় গাইবান্ধা থেকে রওনা হয়ে যাত্রী নিয়ে ঢাকায় এসেছেন বাসচালক মো. মঈনুল। ঢাকা-গাইবান্ধাগামী অরিন পরিবহনের চালক মো. মঈনুল জাগো নিউজকে বলেন, ‘গত রাত ১১টায় দুই সিটে একজন করে মোট ১৬ জন যাত্রী নিয়ে গাইবান্ধা থেকে রওনা দিয়েছিলাম। ঢাকায় এসে পৌঁছেছি ভোর সাড়ে ৬টায়। তারপর বিশ্রাম নিয়ে সকাল ১১টায় ট্রিপে যাচ্ছি।’ তিনি বলেন, ‘আসার সময় গাড়ি স্প্রে করে নিয়েছিলাম। এখন রওনা দেব দেখে আবার স্প্রে করে নিলাম। সব ধরনের স্বাস্থ্যবিধি মেনেই আমরা গাড়ি চালাচ্ছি।’ ঢাকা থেকে পাবনাগামী শাহজাদপুর ট্রাভেলস কাউন্টারের সুপারভাইজার মো. নাসিরুদ্দিন জাগো নিউজকে বলেন, ‘গতরাত ১২টার পর দুয়েকটা পরিবহনের গাড়ি হয়তো যেতে পারে। সেটা আমরা জানি না। আজ সকাল ৭টায় আমরা কাউন্টার খুলেছি। সকাল থেকে আমাদের গাড়ি চলছে।’
স্বাস্থ্যবিধি মানার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘মাস্ক ছাড়া যাত্রীদের টিকিট দেয়া হচ্ছে না। হেলপার, ড্রাইভার, সুপারভাইজাররাও মাস্ক পরছেন। হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবহার করা হচ্ছে। বাসে জীবাণুনাশক স্প্রে করা হচ্ছে। দুই সিটে একজন করে যাত্রী নেয়া হচ্ছে। সরকার যেভাবে ভাড়া নির্ধারণ করে দিয়েছে, সেভাবেই গাড়ি চলছে।’
নাসিরুদ্দিন আরও বলেন, ‘দূরপাল্লার বাস চলতে দেয়ায় আমাদের জন্য ভালো হলো। না হলে আমরা অসহায় অবস্থায় ছিলাম। বেতন পেতাম না। বউ-বাচ্চা, বাপ-মাসহ অসহায় অবস্থায় ছিলাম। গাড়ি চললে আর সমস্যা হবে না।’