বৃহস্পতিবার, ০২ মে ২০২৪, ০৭:৫৯ অপরাহ্ন
শিরোনাম ::
তীব্র গরমে কালীগঞ্জে বেঁকে গেছে রেললাইন, ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক মেলান্দহ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান প্রার্থী হাজী দিদার পাশা জনপ্রিয়তায় এগিয়ে শ্রীপুর পৌরসভার উদ্যোগে খাবার পানি ও স্যালাইন বিতরণ অভিবাসী কর্মীদের পুনঃএকত্রীকরণে কর্মশালা রায়পুরায় উপজেলা চেয়ারম্যান পদে প্রার্থিতা ঘোষণা আলী আহমেদের কমলগঞ্জের মিরতিংগা চা বাগানে অবস্থান কর্মসূচি ও প্রতিবাদ সভা অব্যাহত পলাশবাড়ীতে প্রচন্ড গরমে ঢোল ভাঙ্গা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মাঝে তরমুজ বিতরণ জুড়ীতে টিলাবাড়ি ক্রয় করে প্রতারিত হওয়ার অভিযোগ আনারসের পাতার আঁশ থেকে সিল্ক কাপড় তৈরির শিল্পকে সর্বাত্মক সহযোগিতা করা হবে-সমাজকল্যাণ মন্ত্রী ডা. দীপু মনি রাউজানে পথচারীদের মাঝে যুবলীগের ফলমূল ও ছাতা বিতরণ

বিকল্প উপায়ে অর্থের সংস্থান সামগ্রিক অর্থনীতির জন্যই ভালো

খবরপত্র ডেস্ক:
  • আপডেট সময় রবিবার, ৬ জুন, ২০২১

আগামী অর্থবছরের বাজেট বাস্তবায়ন নির্ভর করবে ব্যাংক সক্ষমতার ওপর। কেননা প্রায় দুই লাখ ১৪ হাজার কোটি টাকার বিশাল ঘাটতি বাজেট অর্থায়নের একটি বড় অংশই অর্থাৎ ৭৬ হাজার কোটি টাকা ব্যাংক খাত থেকে ঋণ নেয়া হবে। কিন্তু খেলাপি ঋণ ও অনাদায়ী ঋণ বেড়ে যাওয়ায় ব্যাংকগুলোর প্রকৃত বিনিয়োগ সক্ষমতা কমে যাচ্ছে। এ পরিস্থিতিতে বিশাল অঙ্কের ঋণ নেয়া হলে বেসরকারি খাতে ঋণ দেয়া ব্যাংকগুলোর জন্য কঠিন হবে বলে বিশ্লেষকরা মনে করছেন। তারা বলছেন, সহজ শর্তে বিদেশী ঋণসহ বিকল্প অর্থায়নের ব্যবস্থা করলে সামগ্রিক অর্থনীতির জন্যই ভালো হতো।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গর্ভনর ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ জানিয়েছেন, দেশের ব্যাংকিং খাত নানা কারণে দুঃসময়ের মধ্যে চলছে। করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে ব্যাংকের ঋণ আদায় হচ্ছে না। বেড়ে যাচ্ছে প্রকৃত খেলাপি ঋণ। কিন্তু এখন সরকার যদি ব্যাংক থেকে বেশি মাত্রায় ঋণ নিতে চায় তাহলে মোটেও ঠিক হবে না। কারণ তাহলে ব্যাংক আট-নয় শতাংশে শুধু সরকারকেই ঋণ দিতে পারবে। বেসরকারি খাতে ঋণ দেয়ার মতো সক্ষমতা থাকবে না। তিনি মনে করেন, ব্যাংক থেকে ঋণ কম নিয়ে সহজ শর্তে বিদেশী ঋণ নিলে এবং বিকল্প উপায়ে অর্থের সংস্থান করলে সামগ্রিক অর্থনীতির জন্যই ভালো হতো।
সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, ছয় লাখ তিন হাজার কোটি টাকার জাতীয় বাজেটের তিন লাখ ৮৯ হাজার কোটি টাকার রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে; কিন্তু করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের কারণে ব্যবসাবাণিজ্য মন্দায় চলতি বছরে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা থেকে বড় অঙ্কের অর্থাৎ এক লাখ কোটি টাকার উপরে ঘাটতি থাকবে। করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব এখনো চলছে। এমনি পরিস্থিতিতে আগামী অর্থবছরেও রাজস্ব আদায়ের বড় অঙ্কের ঘাটতি থাকতে পারে। এ ক্ষেত্রে সরকারের ব্যয় ঠিক রাখতে হলে বাজেট ঘাটতি আরো বেড়ে যাবে। তখন ঘাটতি অর্থায়ন করতে ব্যাংকের ওপর নির্ভরশীলতা আরো বেড়ে যাবে।
ব্যাংকাররা জানিয়েছেন, দীর্ঘ দেড় বছর ধরে ব্যাংকগুলো নিয়মিত ঋণ আদায় করতে পারছে না। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্দেশনায় এক বছর তিন মাস ঋণ আদায়ের ওপর শিথিলতা ছিল। এ সময়ে ঋণ পরিশোধ না করেও ঋণগ্রহীতারা খেলাপি হননি, নিয়মিত থেকেছেন। উপরন্ত ব্যাংক থেকে বাড়তি ঋণ নিয়েছেন কেউ কেউ। এমনি পরিস্থিতিতে ব্যাংকের প্রকৃত ঋণ আদায় কমে গেছে। এখন সরকারের বাড়তি ঋণের জোগান দিতে হলে বেসরকারি খাতে কাক্সিক্ষত হারে ঋণ বিতরণ করা সম্ভব হবে না। প্রাথমিকভাবে প্রায় ৭৬ হাজার কোটি টাকার ব্যাংক ঋণের লক্ষ্যমাত্রার মধ্যে প্রায় ৫২ হাজার কোটি টাকাই নেয়া হবে দীর্ঘমেয়াদি ঋণ। অর্থাৎ ১০, ১৫, ও ২০ বছর মেয়াদি ঋণ নেয়া হবে বেশি। আবার এসব ঋণের সুদহার বেসরকারি ঋণের সুদহারের প্রায় সমান। ব্যাংকগুলো তাই নিরাপদ বিনিয়োগ হিসেবে সরকারকেই বেশি হারে ঋণ দিতে চাইবে। তখন বেসেরকারি খাত আরো ক্ষতিগ্রস্ত হবে। এমনিতেই ব্যাংক খাত থেকে বাড়তি ঋণ নেয়ায় সামগ্রিক সরকারের সুদব্যয় বেড়ে যাচ্ছে। কেননা বাজেটের আকার বড় হচ্ছে। বাড়ছে সরকারের ব্যয়। কিন্তু ব্যয় অনুযায়ী আয় হচ্ছে না। ফলে বাড়ছে ঘাটতি বাজেট। আর এ ঘাটতি মেটাতে নিতে হচ্ছে ঋণ। এতে প্রতি বছরই ঋণ বাড়ছে। সেই সাথে বাড়ছে ঋণের সুদ। আবার এ সুদ পরিশোধ করা হচ্ছে ঋণ নিয়ে। আগামী অর্থবছরের (২০২১-২২) জন্য প্রস্তাবিত বাজেটের প্রায় বেশির ভাগ অর্থাৎ ৬৮ হাজার ৮১৯ কোটি টাকাই বরাদ্দ রাখা হয়েছে সুদ পরিশোধে। এ সুদ ব্যয় অনুন্নয়ন বাজেটের একক খাত হিসেবে সর্বোচ্চ ১৮ দশমিক ১ শতাংশ। চলতি অর্থবছরে বাজেটে সুদব্যয় একক খাত হিসেবে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ খাত ছিল। এ খাতে বরাদ্দ ছিল ৬৩ হাজার ৮০৯ কোটি টাকা। এ হিসেবে এক বছরে ঋণ পরিচর্চা বাবদ সুদব্যয় বাড়ছে পাঁচ হাজার ১০ কোটি টাকা, যা শতকরা হিসেবে প্রায় ৮ শতাংশ।
বিশ্লেষকরা জানিয়েছেন, চলতি অর্থবছরের ধারাবাহিকতায় আগামী অর্থবছরেও সরকারের বাড়তি ঋণ নিতে হবে ব্যাংক খাত থেকে। কারণ চলতি অর্থবছরে রাজস্ব আদায়ের বিশাল ঘাটতি থাকছে। রাজস্ব ঘাটতির কারণে সরকার ইতোমধ্যে ব্যাংক ঋণের ওপর অতিমাত্রায় নির্ভরশীল হয়ে পড়েছে। আগামী অর্থবছরে সম্ভাব্য দুই লাখ ১৪ হাজার কোটি টাকার ঘাটতি বাজেটের মধ্যে ব্যাংক খাত থেকেই নেয়া হবে ৭৬ হাজার কোটি টাকা। কিন্তু চলতি অর্থবছরের মতো আগামী অর্থবছরে রাজস্ব আদায়ের বড় ঘাটতি হলে সরকারের ব্যয় ঠিক রাখতে ব্যাংক খাত থেকেই বাড়তি ঋণ নিতে হবে। আর সে ক্ষেত্রে ব্যাংক খাতের সক্ষমতার ওপরই নির্ভর করবে বাজেট বাস্তবায়ন।




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com