গাজীপুরের তারাগাচ এলাকায় অনন্ত ক্যাজুয়াল ওয়্যার লিমিটেড নামে একটি পোশাক কারখানায় ছাঁটাইয়ের ‘খবরে’ শ্রমিকেরা বিক্ষোভ শুরু করেছেন।
আজ শনিবার সকাল থেকে উত্তেজিত শ্রমিকেরা ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে অবস্থান নিয়ে অবরোধ করে রেখেছেন।
অনন্ত ক্যাজুয়াল ওয়্যার লিমিটেড সূত্রে জানা যায়, গত ১১ এপ্রিল কারখানাটির মহাব্যবস্থাপক (মানবসম্পদ ও প্রশাসন) মুনির আহমেদ স্বাক্ষরিত একটি নোটিশে বলা হয়, করোনাভাইরাস মহামারি আকারে ছড়িয়ে পড়ায় আন্তর্জাতিক ক্রেতারা তাদের ক্রয় আদেশ বাতিল করেছে। শ্রমিকদের মধ্যে করোনাভাইরাস আতঙ্ক বিরাজ করছে। যার কারণে শ্রমিকদের নিরাপত্তা ও স্বাস্থ্যঝুঁকির বিষয়টি বিবেচনা করে কারখানা চালু রাখা কোনোভাবেই সম্ভব হচ্ছে না। এমন পরিস্থিতিতে কর্তৃপক্ষ ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত কারখানা লে-অফ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
শিল্প পুলিশ ও কারখানার শ্রমিকেরা জানান, সরকার দেশে কারখানা আংশিক খুলে দেওয়ার ঘোষণা দিলে এই কারখানাটি গত ২৪ এপ্রিল থেকে চালু করা হয়। কারখানাটি প্রায় তিন হাজার শ্রমিক আছেন। শুরুতে কারখানা সব শ্রমিক যোগ না দিলেও অর্ধেকের বেশি শ্রমিক কাজ শুরু করেন। কারখানা চালু হওয়ায় আজ শনিবার নতুন করে আরও প্রায় এক হাজার শ্রমিক কাজে যোগ দিতে গেলে তাদের ভেতরে প্রবেশ করতে বাধা দেওয়া হয়। এ সময় শ্রমিকদের মধ্যে ছাঁটাইয়ের খবর ছড়িয়ে পড়ে। পরে শ্রমিকেরা সকাল ৮টা থেকে কারখানার ফটকে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন। একপর্যায়ে তারা ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে অবস্থান নিয়ে অবরোধ সৃষ্টি করেন। এতে উভয়পাশে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
অনন্ত ক্যাজুয়াল ওয়্যার লিমিটেডের উৎপাদন শাখার মো. আমিনুর রহমান বলেন, ‘কারখানায় প্রায় তিন হাজার শ্রমিক কাজ করছেন। এখন দেড় থেকে দুই হাজার শ্রমিক কাজ করছেন। বাকিদের কারখানায় যেতে দেওয়া হচ্ছে না। এতে শ্রমিকদের মধ্যে ছাঁটাইয়ের গুঞ্জন শুরু হয়। যার কারণে শ্রমিকেরা বিক্ষোভ ও অবরোধ সৃষ্টি করেন।’
গাজীপুর শিল্প পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সুশান্ত সরকার বলেন, ‘কারখানাটিতে কোনো শ্রমিক ছাঁটাই করা হয়নি। সরকারি নির্দেশনা মানতে গিয়ে স্বাস্থ্য সুরক্ষার জন্য অর্ধেক শ্রমিককে দিয়ে কাজ করাচ্ছেন তারা। বাকি যারা কাজ করছেন না, তারা পুরো বেতন পাবেন না। শ্রম আইন অনুযায়ী, তারা ৬০ ভাগ বেতন পাবেন। শ্রমিকদের মধ্যে ছাঁটাইয়ের গুজব ছড়িয়ে উত্তেজিত করা হয়। কারখানা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে বিষয়টি সুরাহার চেষ্টা করা হচ্ছে।’
এমআর