করোনাকালীন যুব সমাজের ক্ষতি বিবেচনা করে সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা স্থায়ীভাবে ৩২-এ উন্নীতকরণের দাবি জানিয়ে জনসমাবেশের ডাক দিয়েছেন চাকরিপ্রত্যাশী যুবপ্রজন্ম। স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্তিতে ও মুজিব বর্ষের উপহার হিসেবে এই দাবি জানিয়েছেন তারা। এ লক্ষ্যে গতকাল শুক্রবার দুপুর ৩টায় শাহবাগ প্রজন্ম চত্বরে জনসমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। কর্মসূচীর অংশ হিসেবে ইতোমধ্যেই তারা একাধিকবার স্মারকলিপি জমাদান সাংবাদিক সম্মেলন, সংসদ ভবন এলাকার মৌন সমাবেশ করেছেন। এবার জনসমাবেশের ডাক দিয়ে একটি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছেন।
বিজ্ঞপ্তিতে তারা কয়েকটি যুক্তি তুলে ধরেছেন: ১। করোনাকালীন অচলাবস্থায় সকল বয়সের শিক্ষার্থী ও চাকরিপ্রত্যাশীরা ইতোমধ্যেই দেড় বছর হারিয়ে ফেলেছে যা দুই বছরের দিকে ধাবমান।
২। সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩০ হওয়ায় দেড় লাখ তরুণ-তরুণী (করোনার শুরুর সময়ে যারা ২৮+ বয়সের ছিলো) চাকরির পরীক্ষা দেয়ার সুযোগ না পেয়েই ৩০ এর গণ্ডি অতিক্রম করতে চলেছে।
৩।যে ছেলেমেয়েরা ২৬ বছর বয়সে শিক্ষাজীবন শেষ করে সেই করোনা শুরুর সময় থেকে আশায় বসে আছে চাকরি পরীক্ষায় তারাও দেড় বছর হারাতে চলেছে।
সরকারি নিয়ম মোতাবেক ৩০ বছর অবধি আবেদনের সুযোগ পাওয়ার কথা থাকলেও করোনার প্রকোপে প্রকৃতপক্ষে সেই সুযোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।
৪। ১৯৯১ সালে শেষবার সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ২৭ থেকে বৃদ্ধি করে ৩০ করা হয় যখন গড় আয়ু ছিল ৫৭ বছর। এই ৩০ বছরে গড় আয়ু ১৬ বছর বৃদ্ধি পেয়ে ৭০ বছর হলেও বৃদ্ধি পাইনি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা।
৫। ২০১১ সালে এসে অবসরের বয়স বেড়ে হয় ৫৯ আর মহান মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য হয় ৬০। অবসরের বয়স যেহেতু বৃদ্ধি পেয়েছে সেক্ষেত্রে চাকরিতে প্রবেশের বয়স ২ বছর বৃদ্ধি করলে সেটাও আর সাংঘর্ষিক হয় না।
৬। প্রাপ্ত তথ্যমতে, করোনাকালে চাকরির বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পরিমাণ ৮৭% কমে ১০% এ উপনীত হয়েছে বেকারত্বের হার ২০% থেকে ৩৫% এ উন্নীত হয়েছে। করোনাকালীন ক্ষতিগ্রস্তের স্বীকার এই দেড় লাখ চাকরিপ্রত্যাশী বেকার। যা আরও বৃদ্ধি পাবে।
৭। ব্যাকডেট দেওয়ার মাধ্যমে সকল বয়সী শিক্ষার্থী তথা চাকরিপ্রত্যাশীদের ক্ষতিপূরণ সম্ভব নয়। চাকরিতে আবেদনের বয়স স্থায়ীভাবে ২ বছর বাড়িয়ে ৩২ বছর করলে সকলেই তাদের হারিয়ে যাওয়া বছর ফিরে পাবে। উদাহরণ স্বরুপ- করোনাকালে প্রতিবেশী রাষ্ট্র ভারতের আসাম রাজ্যে সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ২ বছর বৃদ্ধি করা হয়েছে।