গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া উপজেলায় আদালতের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে চলছে রাস্তা নির্মাণের কাজ। আর এই রাস্তা নির্মাণের পক্ষ বিপক্ষে দু’দল গ্রামবাসী বিভক্ত হয়ে পড়েছে। এ দু’দল গ্রামবাসী যে কোন সময়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করছে এলাকাবাসী। জানাগেছে, উপজেলার রামশীল ইউনিয়নের জহরের কান্দি গ্রামের নরেশ বিশ^াসের ব্রিজ হইতে জহরের কান্দি ছাত্রবাস হয়ে কিশোর বিশ^াসের বাড়ি পর্যন্ত মাটি দ্বারা রাস্তা নির্মাণের জন্য উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কার্যালয় থেকে কাবিখার ১৫ লক্ষ ৬৯ হাজার টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। এই রাস্তাটির নির্মাণ কাজ শুরু হলে জমির মালিকগন বাঁধা প্রদান করেন। কিন্তু এই প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটির সভাপতি ইউপি সদস্য জগনাথ বিশ^াস জোরপূর্বক রাস্তা নির্মাণ করতে থাকেন। পরবর্তীতে জমির ক্ষতিগ্রস্থ মালিকগনের মধ্যে থেকে স্বপন অধিকারী ও শিশির বিশ^াস এই রাস্তা নির্মাণের উপর নিষেধাজ্ঞা চেয়ে গোপালগঞ্জ বিজ্ঞ অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে আবেদন করেন। আদালত আবেদনকারীদের আবেদন মঞ্জুর করে এই রাস্তা নির্মাণের উপর নিষেধাজ্ঞা প্রদান করেন। এদিকে আদালতের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে ইউপি সদস্য জগনাথ বিশ^াস রাস্তা নির্মাণ করতে থাকায় ক্ষতিগ্রস্থ জমির মালিকরা পূনরায় বাঁধা প্রদান করেন। এ ঘটনায় জহরের কান্দি গ্রামের দু’দল গ্রামবাসীর মাঝে উত্তেজনা বিরাজ করছে। যে কোন সময়ে এ দু’দল গ্রামবাসী সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়তে পারে। এ বিষয়ে ক্ষতিগ্রস্থ জমির মালিক শিশির বিশ^াস বলেন, একটি নির্জন স্থান দিয়ে ইউপি সদস্য জগনাথ বিশ^াস তার নিজ স্বার্থে এই রাস্তাটি নির্মাণ করতেছেন। এই রাস্তা নির্মাণ করলে সরকারের শুধু অর্থ ব্যয় হবে। এই রাস্তা জনগনের কোন কাজে আসবে না। যেহেতু এই রাস্তা জনগনের কোন কাজে আসবে না তাই আমরা ক্ষতিগ্রস্থ জমির মালিকরা এই রাস্তা নির্মাণে বাঁধা প্রদান করেছি। আমাদের বাঁধা ও আদালতের নির্দেশ অমান্য করে ইউপি সদস্য জগনাথ বিশ^াস রাস্তা নির্মাণ করছেন। এখন যদি এই রাস্তা নির্মাণ নিয়ে এলাকায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে তার জন্য জগনাথ বিশ^াস দায়ী থাকবেন। ইউপি সদস্য জগনাথ বিশ^াস বলেন, যারা রাস্তা নির্মাণের জন্য বাঁধা প্রদান করতেছে এখানে তাদের কোন জমি নেই। এরা আমার বিরোধী পক্ষ। শুধু বিরোধীতার কারণে তারা এই উন্নয়ন কাজে বাঁধা প্রদান করছেন। যেহেতু বাঁধা প্রদানকারীদের জমি এখানে নেই যেহেতু আদালতের নির্দেশ অমান্য করার প্রশ্নেই ওঠে না। রামশীল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান খোকন বালা বলেন, এই প্রকল্পটি সম্পর্কে আমার জানা নেই। তবে আমি শুনেছি ইউপি সদস্য জগনাথ বিশ^াস পূর্ব যে স্থান দিয়ে প্রকল্পটির প্রস্তাব দিয়েছিলেন যে স্থান দিয়ে রাস্তাটি নির্মাণ করা হচ্ছে না। আমি চাইবো এলাকার অধিকাংশ জনগনের মতামতের ভিত্তিতে যে স্থান দিয়ে প্রকল্পটির প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল সেখান দিয়ে রাস্তাটি নির্মাণ করা হোক। উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা রাশেদুর রহমান বলেন, এ ধরণের রাস্তা নির্মাণ করতে হলে জমির মালিকদের অনুমতি নিতে হয়। এক্ষেত্রে কোন জমির মালিক যদি তাদের জমি না দিতে চায় এবং বিজ্ঞ আদালত যদি নিষেধাজ্ঞা প্রদান করেন তাহলে আমরা কাজ বন্ধ করে দিবো। কোটালীপাড়া থানার ওসি মোঃ আমিনুল ইসলাম বলেন, এই রাস্তা নির্মাণকে কেন্দ্র করে এলাকার শান্তি শৃঙ্খলার যাতে বিঘœ না ঘটে তার জন্য কোটালীপাড়া থানা পুলিশ সকল প্রকার ব্যবস্থা গ্রহণ করেছেন। এরপরেও যদি কেই আইন অমান্য করেন তাহলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।