রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০২:১৭ অপরাহ্ন

ঘোড়াঘাট-গাইবান্ধার বেইলি ব্রিজটি ঝুঁকিপূর্ণ ও সংকীর্ণ, আতঙ্কে পথচারীরা

মোসলেম উদ্দিন (হিলি) দিনাজপুর :
  • আপডেট সময় শনিবার, ১২ জুন, ২০২১

দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট-গাইবান্ধা সড়কের তীর্মণি ঘাটের বেইলি ব্রিজটি ঝুঁকিপূর্ণ ও সংকীর্ণ হওয়ায় আতঙ্কে চলাচল করছে বিভিন্ন যানবাহন এবং পথচারীরা। ব্রিজটিতে একটি বাস বা ট্রাক উঠলে তা দিয়ে বাইসাইকেল ও যেতে পারে না, প্রতিনিয়ত দুই পাশে তৈরি হয় যানজট। এতে করে যে কোন সময় ঘটতে পারে বড় ধরনের দুর্ঘটনা, এমনটিই অভিযোগ স্থানীয়সহ যানবাহন চালকদের। ঘোড়াঘাট-গাইবান্ধা সড়কের তীর্মণি ঘাটের বেইলি ব্রিজটি গিয়ে দেখা যায়, দুই পাশের রাস্তা ১৬ ফিট আর ব্রিজটি ১২ ফিট। রাস্তার চেয়ে প্রায় ৪ ফিট ছোট। আর রাস্তার চেয়ে ছোট হওয়ার কারণে ব্রিজটিতে একটি বাস বা ট্রাক উঠলে ঐব্রিজ দিয়ে একটি বাইসাইকেল ও যেতে পারে না। যার কারণে সব সময় ব্রিজটির দু’পাশে লেগে থাকে যানজট। আবার ব্রিজের প্লেটগুলোর বিট ক্ষয়ে গেছে। যার জন্য একটু কুয়াশা কিংবা বৃষ্টি হলে ঘটে দুর্ঘটনা। বিশেষ করে দুই এবং তিন চাকার গাড়ি, মোটরসাইকেল, সাইকেল, ভ্যান, অটোরিকশা ও সিএনজিদের জন্য বিপদজনক। ১২ ফিটের ব্রিজটির তলদেশের পিলারগুলো তৈরি আছে ১৬ ফিটের। তবে কর্তৃপক্ষ যদি ব্রিজটি ১৬ ফিট প্রশস্ত করে তাহলে যানজট অনেকটাই কমে আসবে। দিনাজপুর ও জয়পুরহাটের সকল যানবাহন ঘোড়াঘাটের এই তীর্মণি ঘাটের ব্রিজ দিয়ে পলাশবাড়ী, গাইবান্ধা ও রংপুর জেলায় যাতায়াত করে থাকে। রাতে-দিনে প্রায় কয়েকশো বিভিন্ন প্রকার ভারি ওজনের ছোট-বড় যানবাহন এই রাস্তায় চলাফেরা করে। তবে সকালে ব্রিজের পশ্চিম পাশে এবং বিকেলে তার পূর্ব পাশে, যানজট নিরসনে জন্য প্রায় তিন বছর যাবৎ কাজ করে আসছে রুবেল আহমেদ। প্রতিটি গাড়ি পর্যায়ক্রমে পারাপারের নির্দেশনা দেয়। আর এই কাজে অনেকেই খুশি হয়ে তাকে কিছু টাকা দেন, আর তা দিয়ে চলে রুবেলের সংসার। রুবেল আহমেদ বলেন, সতুটি পুরাতন হয়ে গেছে, আবার দুই পাশ চওড়া না। ব্রিজটি বড় হলে গাড়ি-ঘোড়া ভাল ভাবে যেতে পারবে। ব্রিজটির পাশে দোকানদার বীজনাল চক্রবর্তী বলেন, ব্রিজটি খুবি ঝুঁকিপর্ণ, যেকোন সময় ঘটতে পারে দুর্ঘটনা। ২০ থেকে ২২ বছর যাবৎ ব্রিজটি হওয়া পর্যন্ত দেখে আসছি, সবসম দুই পাশে যানজট লেগে থাকে। ব্রিজটি বড় করা দরকার। একজন ট্রাক চালক আশরাফ আলী বলেন, সপ্তাহে দুই থেকে তিন বার এই ব্রিজ দিয়ে গাইবান্ধা ও রংপুরে যেতে হয়। রাস্তা ভাল, কিন্তু তীর্মণি ঘাটের ব্রিজটির বেহাল দশা। খুব ছোট আমি গাড়ি নিয়ে উঠলে, দুই পাশ দিয়ে একটি বাইসাইকেল ও আসতে পারে। তাতে যানজট সৃষ্টি হয়। ঘোড়াঘাট থেকে গাইবান্ধা গামী একটি বাস চালক নওশাদ হোসেন বলেন, দিনে তিনবার আসা-যাওয়া করতে হয় এই ব্রিজ দিয়ে। আমাদের সময়ের গাড়ি, সবদিকের রাস্তা ভাল, কিন্তু এই ব্রীজ পার হতে অনেকটা সময় নষ্ট হয়। একজন হাসপাতালের চাকরি জীবি নারী সানজিদা রহমান বলেন, প্রতিদিন সকালে স্বামীর মোটরসাইকেলে চড়ে গাইবান্ধা হাসপাতালে যাওয়া-আসা করি। এই ব্রিজটি পার হতে খুব ভয় লাগে। ব্রিজটি দুপাশ ছোট এবং পুরাতন হয়ে গেছে। বেইলি ব্রিজটির কোন বিট নেই, গাড়ির চাকা পিছলে যায়। কখন যে কি হয়? ঘোড়াঘাট উপজেলা প্রকৌশলী কর্মকর্তাদের কাছে জানতে চাইলে, তাঁরা জানান, এই ব্রিজটি ঝুঁকিপূর্ণ এবং সংকীর্ণ এর মেরামত করা দরকার। তবে এটি সড়ক ও জনপদ বিভাগের। দিনাজপুর সড়ক ও জনপদ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী কর্মকর্তার নিকট ব্রিজটির বিষয় জানতে চাইলে, তিনি জানান, ব্রিজটি আমাদের নির্মাণ নই, এটি গাইবান্ধার সড়ক ও জনপদ বিভাগ ব্রিজটি নির্মাণ করছেন। এবিষয়ে গাইবান্ধার সড়ক ও জনপদ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী কর্মকর্তা ফিরোজ আক্তার জানান, ঘোড়াঘাট তীর্মণি ঘাটের বেইলি ব্রিজটি ঝুঁকিপূর্ণ ও সংকীর্ণ। আমরা ইতিমধ্যে ব্রিজটির উপরের অংশ ভেঙে নতুন করে তৈরির এবং বড় করার অনুমতি হাতে পেয়েছি। আশা করছি অল্প দিনের মধ্যে বেইলি ব্রিজটি ভেঙে পুনরায় নির্মাণ কাজ শুরু হবে।




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com