চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং অবনমিত উপনিবেশ থেকে বৃহৎ শক্তিতে দেশটির ‘অপরিবর্তনীয়’ উত্থানের প্রশংসা করেছেন। গতকাল বৃহস্পতিবার চীনের কমিউনিস্ট পার্টির শততম বার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষে দেয়া বক্তৃতায় তিনি এ প্রশংসা করেন। তিয়েন আনমেন স্কয়ারে যে মঞ্চে দাঁড়িয়ে ১৯৪৯ সালে মাও সেতুং পিপলস রিপাবলিক অব চায়নার ঘোষণা দিয়েছিলেন সেখান থেকেই শি বলেন, ‘চীন কে বোকা বানানোর দিন চলে গেছে’। তিনি আয় বৃদ্ধি ও জাতীয় গর্ব পুনরুদ্ধারের জন্যে পার্টির প্রশংসা করেন। এ সময়ে তার মাথার উপর ঝুলছিল মাও সেতুংয়ের বিশাল বড়ো প্রতিকৃতি। শি বলেন, এই পার্টি জাতীর পুনরুজ্জীবন ঘটিয়েছে। দারিদ্রের কবল থেকে নিষ্কৃতি দিয়েছে লাখ লাখ চীনাকে। পাল্টে দিয়েছে বিশ্ব উন্নয়নের মানচিত্র। মাও সেতুং স্টাইলের জ্যাকেট পরা শি আরো বলেন, চীনা জাতির মহান পুনরুজ্জীবন একটি অপরিবর্তনীয় ঐতিহাসিক ধারাক্রমে প্রবেশ করেছে।
উল্লেখ্য, মাও সেতুং পরবর্তী চীনের সবচেয়ে ক্ষমতাধর নেতা হিসেবে শি কে বিবেচনা করা হয়। তার অধীনে কমিউনিস্ট পার্টি চীনে আরও ক্ষমতাধর হয়ে উঠেছে। কোভিড মহামারী জয় থেকে শুরু করে বিশ্ব মঞ্চে অবস্থান শক্ত করা পর্যন্ত সব ক্ষেত্রেই এগিয়েছে চীন। শি জিনপিং কমিউনিস্ট পার্টির প্রভাব বিস্তারে বড় ভূমিকা রেখেছেন। ২০১২ সালে তিনি পার্টির জেনারেল সেক্রেটারি হন এবং ২০১৩ সালের মার্চে চীনের প্রেসিডেন্ট হন। এর পরই দুর্নীতির লাগাম টেনে ধরেন তিনি। তার সময়েই কমিউনিস্ট পার্টির সদস্য বেড়েছে সবচেয়ে বেশি। বর্তমানে ৯ কোটির বেশি সদস্য রয়েছে এ দলে।
শি তার বক্তব্যে পার্টির প্রশংসা করার পাশপাশি মার্কিন নেতৃত্বাধীন বিদেশী প্রতিদ্বন্দ্বীদের ভয়াল চেহারা তুলে ধরার কথাও ভোলেন নি। এক্ষেত্রে তিনি জাতীয়তাবাদী চেতনা জাগিয়ে তোলা এবং নতুন চীনের গর্ব হিসেবে নিজের নেতৃত্বের বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন। এদিকে আড়ম্বরপূর্ণ ও দেশপ্রেমমূলক এই অনুষ্ঠানে হাজার হাজার গায়ক গায়িকা ব্যন্ডের তালে তালে দেশপ্রেমের গান পরিবেশন করে। তারা পতাকা নাড়িয়ে উল্লাস করে। সাংহাইয়ে ১৯২১ সালের গ্রীস্মে মাও এবং মাক্সবাদী-লেনিনবাদী চিন্তাবিদরা মিলে এই কমিউনিস্ট পার্টি প্রতিষ্ঠা করেন। এরপর এটি বিশ্বের অন্যতম একটি শক্তিশালী রাজনৈতিক সংস্থায় রূপ নেয়।