অধিকৃত ফিলিস্তিনি ভূখণ্ড জেরুসালেমের শেখ জাররাহ মহল্লাকে ইসরাইলি দখলদারিত্ব থেকে রক্ষায় প্রচারণা আন্দোলনে পরিচিতি পাওয়া মুনা আল-কুর্দ ফিলিস্তিনিদের ওপর ইসরাইলি কর্তৃপক্ষের অব্যাহত ‘নাকবা’ প্রতিরোধের আহ্বান জানিয়েছেন। গত বুধবার ফিলিস্তিনের বিরজেইত বিশ্ববিদ্যালয় থেকে গ্রাজুয়েশন সমাপ্তির পর সমাবর্তন অনুষ্ঠানে বক্তব্যে এই আহ্বান জানান তিনি।
তিনি বলেন, ‘সময় হয়েছে এখন নাকবার অবসানের। যতই সময় লাগুক, দখলদারিত্বের সমাপ্তি হবে। ইনশাআল্লাহ, শেখ জাররাহ মহল্লার ওপর থেকে অবৈধ অবরোধ শেষ হবে এবং আমাদের জোর করে উচ্ছেদের আদেশও বাতিল করা হবে। যাতে আমি আপনাদের আমার বাড়িতে আমন্ত্রণ জানাতে পারি।’ ১৯৪৮ সালে ইসরাইল প্রতিষ্ঠার পর তৎকালীন ফিলিস্তিনে ইসরাইলের দখল করে নেয়া অঞ্চল থেকে স্থানীয় বাসিন্দাদের জোর করে উচ্ছেদের ঘটনাকে ফিলিস্তিনিরা নাকবা (বিপর্যয়) হিসেবে চিহ্নিত করেন। একইরূপে ফিলিস্তিনিদের উচ্ছেদে ইসরাইলের যেকোনো কার্যক্রমকে নির্দেশ করতে তারা নাকবা শব্দটি ব্যবহার করেন। মুনা আল-কুর্দ বিরজেইত বিশ্ববিদ্যালয়ের গণমাধ্যম বিভাগ থেকে গ্রাজুয়েশন সমাপ্ত করেছেন। নিজের অর্জিত ডিগ্রি সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘আজকে আমরা যে সার্টিফিকেট অর্জন করেছি, তা শুধু কাগজের একটি টুকরো নয়। এটি আমাদের অস্ত্র। এর সাহায্যে আমরা আমাদের বাড়ি, আমাদের ভূমি, আমাদের গাছ ও আমাদের নিজেদের রক্ষা করবো। এবং আমাদের প্রত্যেকের উচিত হবে তার দক্ষতার জায়গা থেকে প্রতিরোধে অংশ নেয়া। এই মর্যাদাপূর্ণ বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নের বিষয় হিসেবে আমি গণমাধ্যম বেছে নিয়েছি যাতে করে আমি আমার বাড়ি, মহল্লা, শহর ও দেশকে তুলে ধরতে পারি।’
ফিলিস্তিনি তরুণ এই অ্যাকটিভিস্ট তার গ্রাজুয়েশন ভাষণে জানান, বহু বছরের মধ্যে প্রথমবারের মতো ঐতিহাসিক ফিলিস্তিন ভূখ-ের সকল বাসিন্দা তাদেরকে উচ্ছেদ করায় ইসরাইলি নীতির বিরোধিতায় একত্রিত হয়েছে এবং সারাবিশ্বের কাছে তাদের বার্তা পৌঁছে দিয়েছে। তিনি বলেন, ‘আপনাদের প্রতি আমি আবেদন করছি অন্যায়, অত্যাচার, স্বাধীনতাহানী ও রাজনৈতিক বন্দিত্বের বিরুদ্ধে আওয়াজ তুলুন এবং যে কোনো আক্রমণকে সবসময় (চিত্রে) ধারণ করুন এবং ছড়িয়ে দিন।’ এই বছরের এপ্রিলে জেরুসালেমের পুরনো শহরের উত্তরে শেখ জাররাহ মহল্লা থেকে স্থানীয় ফিলিস্তিনি বাসিন্দাদের উচ্ছেদ করে ইহুদি বসতি স্থাপনে এক আদেশ দেন জেরুসালেমের ইসরাইলি এক আদালত। আদালতের ওই আদেশে শেখ জাররাহ মহল্লায় বাস করা আল-কুর্দ পরিবারও রয়েছে।
এই আদেশের প্রতিবাদে পুরো ফিলিস্তিনজুড়ে প্রতিবাদ ও বিক্ষোভ শুরু হয়। ইসরাইলি আদালতের আদেশের বিরুদ্ধে প্রতিবাদের অংশ হিসেবে শেখ জাররাহ রক্ষায় প্রচারণা আন্দোলনে মুনা আল-কুর্দ তার জমজ ভাই মোহাম্মদ আল-কুর্দের সাথে মিলে নেতৃত্ব দেন। দুই ভাই-বোনের ভূমিকায় গত মাসের শুরুতে ইসরাইলি পুলিশ তাদের জননিরাপত্তা আইনে গ্রেফতার করলেও পরে ছেড়ে দেয়। সূত্র : মিডল ইস্ট আই