কম্বোডিয়ার প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপের পর মালিকের কাছে ফিরে গেছে গত মাসে জব্দ করা পোষা সিংহটি। কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ১৮ মাস বয়সী পুরুষ সিংহটি অবৈধভাবে পাচার করে দেশটিতে নিয়ে যায় এক চীনা নাগরিক। টিকটকে একটি ভিডিও দেখার পর গত এপ্রিলে তদন্ত শুরু হয়। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আদর ও গোসল করানোর ভিডিও প্রকাশ করার পর ৭০ কেজি ওজনের সিংহটির বিষয়ে গত এপ্রিলে তদন্ত শুরু করে কম্বোডিয়ার কর্তৃপক্ষ। দেশটির রাজধানীর একটি বিলাসবহুল বাড়ি থেকে গত ২৭ জুন পোষা সিংহটি জব্দ করে একটি উদ্ধার কেন্দ্রে পাঠানো হয়। তখন থেকেই এর মালিক সিংহটি ফিরে পেতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এবং সাক্ষাৎকারের মাধ্যমে আবেদন জানিয়ে আসছিলেন। স্থানীয় সংবাদমাধ্যম ওই চীনা নাগরিকের নাম ঝাই জিনজিয়ান বলে জানিয়েছে। রবিবার সন্ধ্যায় এক ফেসবুক পোস্টে দেশটির দীর্ঘদিনের প্রধানমন্ত্রী হান সেন মালিকের আবেদনে সাড়া দেন।
প্রধানমন্ত্রী হান সেন জানান, ইস্যুটি নিয়ে তিনি কৃষিমন্ত্রী ভেং সাখোনের সঙ্গে আলোচনা করেছেন আর প্রাণীটি যথাযথভাবে একটি খাঁচায় রাখার শর্তে মালিকের কাছে ফিরিয়ে দেওয়ায় সম্মত হয়েছি। এছাড়া মালিকের কাছ থেকে কোনও জরিমানা আদায় করা হয়ে থাকলে তাও ফিরিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। মালিককে ৩০ হাজার ডলার জরিমানা করা হয়েছিলো বলে জানা গেছে। প্রধানমন্ত্রীর পোস্টের নিচে মন্তব্য করে তাকে ধন্যবাদ জানান সিংহটির মালিক। এছাড়া তাকে সমর্থন জানানোয় কম্বোডিয়ার মানুষের প্রতি কৃতজ্ঞতাও প্রকাশ করেন তিনি। স্থানীয় এক সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে কৃষিমন্ত্রী জানিয়েছেন, প্রধানমন্ত্রীর সহানুভূতির কারণেই এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তিনি জানান, সিং হটির নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে কর্তৃপক্ষ।
কম্বোডিয়ার পরিবেশ মন্ত্রণালয় জানায় দেশটিতে সিংহ পোষা বেআইনি। দেশটির বন আইনের ৪৯ ধারা উল্লেখ করে তারা জানায় এই ধারায় বন্যপ্রাণীর জন্য বিপজ্জনক হতে পারে এমন কোনও কাজকর্মই বেআইনি। সিংহটিকে জব্দ করতে ভূমিকা রাখে ওয়াইল্ডলাইফ অ্যালায়েন্স নামের একটি গ্রুপ। তাদের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিলো ওই মালিকের বাড়িটি বন্যপ্রাণী রাখার জন্য উপযুক্ত নয়। তবে প্রাণীটির সঙ্গে কোনও অন্যায় আচরণের কথা অস্বীকার করেন ওই মালিক। তিনি জানান, কেবল পোষা প্রাণী রাখার জন্যই মাসে পাঁচ হাজার ডলার দিয়ে বাড়ি ভাড়া করেছেন তিনি। কম্বোডিয়ায় সিংহ পোষা রাখা বেআইনি তা জানতেন না বলে দাবি করেন তিনি। আর এর কারণে প্রতিবেশিদের কোনও ক্ষতি হলে তার জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করেন তিনি।