মঙ্গলবার, ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৯:২৫ অপরাহ্ন
শিরোনাম ::
নতুন নারী প্রধানমন্ত্রী পেল শ্রীলঙ্কা চকরিয়ায় যৌথবাহিনীর অভিযান চলাকালে সন্ত্রাসী হামলায় সেনা কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট তানজিম ছরোয়ার নির্জন নিহত মানিকগঞ্জে প্রতিবন্ধিতা বিষয়ক সভা নকলার নবাগত ওসিকে জামায়াতের ফুলেল শুভেচ্ছা পিরোজপুর জেলা বিএনপির সদস্য সচিব গাজী ওয়াহিদুজ্জামান লাভলু’র বিরুদ্ধে নানা ধরনের অপ্রপ্রচারের অভিযোগ শ্রীমঙ্গলে মিটার টেম্পারিং করে গ্যাস চুরির দায়ে মেরিগোল্ড সিএনজি পাম্প থেকে সংযোগ বিচ্ছিন্ন রাস্তা নেই সেতু নেই, নেই কোন স্কুল: উল্লাপাড়ার অবহেলিত গ্রামের নাম রশিদপুর নয়াপাড়া মোংলায় ইসলামী ব্যাংকের ব্যবসায়ীদের সাথে মতবিনিময় কালিয়ায় লুটপাট, ভাংচুর ও হুমকির বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান জাতীয়করণের দাবিতে মানববন্ধন ও স্মারকলিপি প্রদান

করোনার অভিঘাতে বাড়ছে কাজ হারানো মানুষের কান্না

খবরপত্র ডেস্ক:
  • আপডেট সময় বুধবার, ৭ জুলাই, ২০২১

বৈশ্বিক মহামারী করোনার অভিঘাত বড় ধরনের প্রভাব ফেলেছে দেশের অর্থনীতিতে। কর্মসংস্থান হারিয়েছে বিপুলসংখ্যক মানুষ। আয় কমেছে অনেকের। বেড়েছে নতুন দারিদ্র্যের সংখ্যাও। করোনায় নতুন করে দরিদ্র মানুষের সংখ্যা বেড়েছে ২ কোটি ৪৫ লাখ। সরবরাহের অযুহাতে বাজারে তেজিভাব অব্যাহত রয়েছে। রাজধানীসহ সারা দেশে সবচেয়ে বেশি চাপে রয়েছে মধ্যবিত্তরা। নিম্ন আয়ের মানুষের স্বস্তির জন্য সরকার টিসিবির ট্রাকে ন্যায্যমূল্যে পণ্য বিক্রি চালু করে। কিন্তু সাশ্রয়ী মূল্যে পণ্য কিনতে শত শত মানুষের দীর্ঘ লাইনে শামিল হয়েছে মধ্যবিত্ত পরিবারের মানুষরাও। মধ্যবিত্ত মানুষের বোবা কান্না দেখার কেউ নেই। এ অবস্থা থেকে মানুষের মুক্তির পথ কেউ জানে না। বাধ্য হয়ে অনেকেই শহর ছাড়ছেন। রাজধানীতে প্রতিদিনই এমন চিত্র দেখা যাচ্ছে। বিপরীতে বাজারে নিত্যপণ্যের দাম বাড়তি। এমন পরিস্থিতিতে সুলভে নিত্যপণ্যের জন্য নি¤œবিত্ত মানুষের স্বস্তির ঠিকানা হয়েছে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি)। তবে করোনা পরিস্থিতির সঙ্গে টিসিবির পণ্যের ক্রেতার আসনেও পরিবর্তন আসছে। সুলভ পণ্যের এখন প্রধান ক্রেতা হয়ে উঠেছেন মধ্যবিত্তরা। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, মধ্যবিত্তের আধিপত্যের কারণে চোখের পলকেই খালি হয়ে যাচ্ছে টিসিবির ট্রাক। ঘণ্টার পর ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়ে থেকেও শূন্য হাতে ফিরতে হচ্ছে বেশির ভাগ ক্রেতাকে। এ অবস্থায় দাবি উঠছে টিসিবির পণ্য সরবরাহ বাড়ানোর।
স¤প্রতি বাংলাদেশ ব্যাংকের এক গবেষণায় উঠে এসেছে, কভিডের কারণে গত বছর থেকে এ পর্যন্ত বেকার হয়েছেন ২৬ লাখের বেশি মানুষ। কর্মজীবীদেরও আয় কমেছে উল্লেখযোগ্য পরিমাণে। অন্যদিকে ভোজ্যতেলসহ নিত্যপণ্যের বাজারও বেশ চড়া। এ অবস্থায় বাজার স্থিতিশীল রাখতে গত সোমবার থেকে ভোক্তাদের কম দামে পণ্য সরবরাহ করতে সারা দেশে ট্রাকে করে টিসিবির পণ্য বিক্রি শুরু হয়েছে। মাঝে ঈদের কয়েক দিন সাধারণ ছুটি বাদে এ দফায় সেল চলবে ২৯ জুলাই পর্যন্ত।
টিসিবির একটি সূত্র জানিয়েছে, করোনায় সাধারণ ভোক্তাদের চাহিদা অনুযায়ী পণ্য সরবরাহ করার লক্ষ্যে স্বাস্থ্যবিধি মেনে বিপণন কার্যক্রম চলছে। দেশজুড়ে টিসিবির ৪৫০ ভ্রাম্যমাণ ট্রাকে পণ্য বিক্রি করা হচ্ছে। এর মধ্যে ঢাকা সিটিতে ৮০টি ও চট্টগ্রাম সিটিতে ২০টি ট্রাক রয়েছে। এছাড়া প্রতিটি মহানগর ও জেলা শহরেও ট্রাক সেলের মাধ্যমে পণ্য বিক্রি করা হচ্ছে। এসব ট্রাকে কেজিপ্রতি ৫৫ টাকা দরে চিনি ও ডাল এবং লিটারপ্রতি ১০০ টাকা দরে সয়াবিন তেল বিক্রি করা হচ্ছে। বর্তমানে টিসিবির প্রতিটি ট্রাকের জন্য ৫০০-৮০০ কেজি চিনি, ৩০০-৬০০ কেজি মসুর ডাল ও ৮০০-১২০০ লিটার সয়াবিন তেল বরাদ্দ রাখা হয়েছে। নিয়ম অনুযায়ী, একজন ব্যক্তি দৈনিক দুই থেকে চার কেজি চিনি, দুই কেজি ডাল ও দুই থেকে পাঁচ লিটার ভোজ্যতেল কিনতে পারেন।
দেশে করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে কর্মহীন নানা পেশার মানুষ। ৫ম বারের কঠোর লকডাউনে সব চাইতে বেশি অসহায়ত্ব বোধ করছে মধ্যবিত্তের মানুষেরা। অভাব অনটন দেখা দিয়েছে মধ্যবিত্ত মানুষের মাঝে। তবে সংসারে অভাব দেখা দিলেও কাউকে বলতে পারছেন না আবার সইতেও পারছেনা মধ্যবিত্তের মানুষেরা। এতে অসহায় হয়ে চার দেয়ালে বন্দী হয়ে পড়েছে মধ্যবিত্তদের বোবাকান্না। লোকলজ্জার ভয়ে তারা নীরবে-নিভৃতে চাপা স্বরে কাঁদছেন। তা দেখার বা বোঝার কেউ নেই। আলম অনেকটা কষ্টের সাথে বলেন, করোনার থেকে বড় ভয় হচ্ছে না খেয়ে মরার ভয়।
চলমান লকডাউনে করোনাভাইরাস সংক্রমণরোধে চাঁদপুরের হাজীগঞ্জ উপজেলার মানুষ ঘরবন্দী হয়ে পড়েছে। রাস্তা-ঘাটও জনশূন্য। থমকে দাঁড়িয়েছে মধ্যবিত্ত মানুষের জীবনযাত্রা ও আয় রোজগার। একদিকে বাড়ছে জীবনযাত্রার খরচ। অন্যদিকে কারো চাকরি যাচ্ছে, কারো কমছে বেতন। অনেকের সংসার অচল হয়ে পড়লেও তারা কারও কাছে সাহায্য চাইতে পারছেন না। তাদের নিয়ে কারও নেই কোন ভাবনাও।
চলমান কঠোর লকডাউন এবং আসন্ন ঈদুল আযহা উপলক্ষে সারাদেশে গত সোমবার থেকে আবারও ট্রাক সেল চালু করছে টিসিবি। যদিও বিক্রি শুরুর প্রথম দিনে রাজধানীতে দুপুর পর্যন্ত টিসিবির ট্রাকের দেখা মেলেনি অধিকাংশ জায়গায়। দুপুরের পরে যেসব এলাকায় ট্রাক এসেছে সেখানেই ছিল মানুষের উপচেপড়া ভিড়। এর আগে সকাল থেকেই যেসব স্থানে টিসিবির পণ্য বিক্রি হয় সেখানে দীর্ঘক্ষণ সাধারণ মানুষকে অপেক্ষা করতে দেখা গেছে। দীর্ঘ সময় অপেক্ষার পরে পণ্য পাওয়ার কারণে অনেকেই বিরক্তি ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। এদিকে রামপুরা এলাকায় টিসিবির ট্রাক এসেছে দেড়টায়। তারপর থেকে সেখানে দুই-তিনশ মানুষকে লাইন ধরে পণ্য কিনতে দেখা গেছে। অনেকে দুই-তিন ঘণ্টা অপেক্ষার পর পাচ্ছেন পণ্য। সেখানে ডিলার মন্টু মিয়া বলেন, টিসিবির গোডাউন থেকে সময়মতো পণ্য সরবরাহ না পাওয়ার কারণে তারা ঠিক সময় স্পটে পৌঁছাতে পারেননি। গোডাউনে দীর্ঘ লাইন দিয়ে পণ্য নিতে দেরি হয়েছে। এদিকে দুপুর পর্যন্ত খামারবাড়িতে টিসিবির পণ্যের জন্য অপেক্ষারত আছিয়া বেগম বলেন, সকাল থেকে সব কাজ ফেলে এখানে দাঁড়িয়ে আছি। কোনো খবর নেই। ট্রাক আসবে কি-না সেটাও জানা যাচ্ছে না। না এলে পুরো দিন মাটি। গত সোমবার দুপুর পর্যন্ত রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাব, খামারবাড়ি ফার্মগেট ও এফডিসির মোড় ঘুরে টিসিবির ট্রাক পাওয়া যায়নি। তবে এর মধ্যে যাত্রাবাড়ী, বাড্ডার মতো দু-একটি এলাকায় ট্রাক পৌঁছেছে বলেও জানিয়েছিলেন ডিলাররা। এ দফায় দেশজুড়ে টিসিবির ৪০০ ভ্রাম্যমাণ ট্রাকে পণ্য বিক্রি করা হচ্ছে। এর মধ্যে ঢাকা সিটিতে ৮০টি ও চট্টগ্রাম সিটিতে ২০টি ট্রাক রয়েছে। এছাড়া প্রতিটি মহানগর ও জেলা শহরেও ট্রাক সেলের মাধ্যমে পণ্য বিক্রি করা হবে।
এসব ট্রাকে কেজিপ্রতি ৫৫ টাকা দরে চিনি ও ডাল এবং লিটারপ্রতি ১০০ টাকা দরে সয়াবিন তেল বিক্রি করা হচ্ছে। পাশাপাশি টিসিবির বিক্রয় কেন্দ্রগুলোতে পাওয়া যাবে সব পণ্য। একজন ব্যক্তি দৈনিক দুই থেকে চার কেজি চিনি, দুই কেজি ডাল ও দুই থেকে পাঁচ লিটার ভোজ্যতেল কিনতে পারছেন।
সোমবার টিসিবির প্রতিটি ট্রাকে ৭০০ কেজি চিনি, ৪০০ কেজি মসুর ডাল এবং ১২০০ লিটার সয়াবিন তেল বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। এই বরাদ্দ বাড়ানো হতে পারে। টিসিবির এ কার্যক্রম চলবে চলতি মাসের ২৯ তারিখ পর্যন্ত।
করোনার আঘাতে দেশে নতুন করে দরিদ্র হয়েছে ২ কোটি ৪৫ লাখ মানুষ। নতুন এক জরিপে দেখা গেছে, ২০২১ সালের মার্চ পর্যন্ত দেশে এই নতুন দরিদ্র শ্রেণির সংখ্যা জনসংখ্যার ১৪ দশমিক ৭৫ শতাংশ হয়েছে। ২০২০ সালের জুন পর্যন্ত যা ছিল ২১ দশমিক ২৪ শতাংশ।
জরিপে যাঁরা সাধারণত দারিদ্র্যসীমার ওপরেই বসবাস করেন, কিন্তু যেকোনো অভিঘাতে দারিদ্র্যসীমার নিচে চলে যেতে পারেন, তাঁদের নতুন দরিদ্র হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়েছে। তবে দেখা গেছে, গ্রামাঞ্চলের তুলনায় শহরাঞ্চলে নতুন দরিদ্র মানুষের সংখ্যা বেশি। এ বছরের মার্চ পর্যন্ত যেখানে শহরাঞ্চলে নতুন দরিদ্র মানুষের সংখ্যা ৫৯ শতাংশ, সেখানে গ্রামাঞ্চলে তা ৪৪ শতাংশ। এ হিসাব থেকে জাতীয় পরিসরে নতুন দরিদ্রের এ হিসাব (১৪ দশমিক ৭৫ শতাংশ) প্রাক্কলন করা হয়েছে।
বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান পাওয়ার এন্ড পার্টিসিপেশন রিসার্চ সেন্টার (পিপিআরসি) ও ব্র্যাক ইনস্টিটিউট অব গভর্ন্যান্স এন্ড ডেভেলপমেন্টের (বি আইজিডি) এক জরিপের ফলাফল প্রকাশ করে।
জরিপের তথ্য থেকে তিনি জানান, গত বছর ২৭ দশমিক ৩ শতাংশ বস্তিবাসী শহর ছেড়ে গ্রামে চলে যান, যাদের ৯ দশমিক ৮ শতাংশ এখনো ফেরেনি। প্রাক-কোভিড সময়ের তুলনায় শহরের বস্তিবাসীর আয় কমলেও খাদ্যবহির্ভূত ব্যয় গত জুনের তুলনায় এ বছরের মার্চে দ্বিগুণ হয়েছে। তিনি মনে করেন, ভাড়া বাড়িতে থাকা অধিকাংশ শহুরে দরিদ্রের জন্য এটি নির্মম বাস্তবতা। সবার সঞ্চয় কমেছে আশ্চর্যজনকভাবে। অরক্ষিত অদরিদ্র এবং দরিদ্র নয় এমন শ্রেণির মানুষের সঞ্চয়ের পরিমাণ কোভিড-পূর্ববর্তী অবস্থার চেয়ে নিচে নেমে গেছে। একই সঙ্গে সব শ্রেণিতেই ঋণ গ্রহণের পরিমাণ দ্বিগুণ হয়েছে। ফলে দেখা গেছে, জরিপে অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে চরম দারিদ্র্যের হার সামগ্রিকভাবে ৪ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।
গত প্রায় ৫ মাস ধরেই চাল তেল ডাল চিনিসহ বেশ কয়েকটি পণ্যের দাম কোন যুক্তির কারণ ছাড়াই বাড়ছে। সরকার দফায় দফায় ব্যবসায়ীদের সাথে বৈঠক করলেও কাজের কাজ কিছুই হয়নি। চাল এবং পেঁয়াজের ভরা মৌসুমেও দাম বেড়েছে নানা অযুহাতে। বৃদ্ধির তালিকায় যুক্ত হয়েছে চিনি, ডাল গুঁড়া দুধসহ সব ধরনের বেকারি পণ্যের। সরকার বাজার নিয়ন্ত্রনে অভিযান চালালেও কোন কাজ হয়নি। উল্টো কোন কোন স্থানে দাম আরও বেড়েছে। টিসিবির ট্রাকে নি¤œ এবং মধ্য আয়ের মানুষের ভিড় প্রমান করে দেশের করোনার কারণে নতুন করে দারিদ্র্য মানুষের সংখ্যা বেড়েছে। কি পরিমাণ বেড়েছে তা নিয়ে মতভেদ থাকলেও সরকার স্বীকার করছে দারিদ্র্য মানুষের পরিমাণ বেড়েছে। ট্রাকের চিত্র দেখে প্রশ্ন জাগে দেশে দারিদ্র্যের সংখ্যা কত। ন্যায্যমূল্যে চিনি, মসুর ডাল ও সয়াবিন তেল কিনতে দীর্ঘলাইনে দাঁড়িয়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করছে ক্রেতারা। তারা বলছেন, বাজারে এসব পণ্যের দাম অস্বাভাবিক হারে বেড়ে যাওয়াতেই টিসিবির ট্রাকে যাচ্ছে তারা। এতে আগের তুলনায় টিসিবির পণ্য শেষও হচ্ছে দ্রুত। ফলে অনেকে অপেক্ষা করেও পণ্য পাচ্ছে না।
পণ্য কিনতে আসা ক্রেতারা স্বাস্থ্যবিধি মানছেন না। গাদাগাদি ঠেলাঠেলি করে লাইনে দাঁড়িয়ে তারা পণ্য কিনছেন। প্রয়োজনের তুলনায় পণ্য সরবরাহ কম ও নির্দিষ্ট সময়ের অনেক পরে ট্রাক আসায় এ ধরনের পরিস্থিতির সৃষ্টি হচ্ছে। রাজধানীর খিলগাঁও, মালিবাগ, মুগদা, রামপুরা ও প্রেস ক্লাব এলাকায় এমন চিত্র দেখা যায়।
খিলগাঁও রেলগেট কাঁচাবাজারের কাছে ফ্লাইওভারের নিচে টিসিবি ট্রাকের সামনে শত শত ক্রেতার দীর্ঘ সারি দেখা যায়। পুরুষদের লাইন যেমন দীর্ঘ, তেমনি নারীদের লাইনও অনেক লম্বা। নারী ক্রেতারা ধাক্কাধাক্কি করছে পণ্য নিতে। একই অবস্থা দেখা যায়, মুগদা এলাকার ট্রাকেও। সেখানে ক্রেতাদের লাইন অনেক দীর্ঘ। দুপুরের খাঁ খাঁ রোদেও গাদাগাদি করে লাইনে দাঁড়িয়ে পণ্য কিনছেন ক্রেতারা। রহিমা নামের এক ক্রেতার কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, সেই সকাল থাইক্যা লাইনে দাঁড়াইছি। অহনো জিনিস কিনতে পারি নাই। এক কেজি ডাইল, এক কেজি চিনি আর এক কেজি তেল দিতাছে। লাইনে ফাঁকা রাখলে মাঝখানে আরেকজন ঢুইক্যা যায়। তাই ঘেইষ্যা দাঁড়াইছি। তবে বিক্রেতাদের এসব দেখার সময় নেই। তারা দ্রুত পণ্য দিয়ে ক্রেতাদের বিদায় করছেন। এক কেজি করে তেল, ডাল ও চিনির প্যাকেজ ২১০ টাকায় বিক্রি করছেন।
খিলগাঁও ফ্লাইওভারের নিচে টিসিবির পণ্য বিক্রেতা মো. ছালাম বলেন, প্রতিদিন ১০টা থেকে এখানে আমরা ট্রাকে পণ্য বিক্রি করি। গতকাল সোমবার আসতে দেরি হয়ে গেছে। আমরা মসুর ডাল, তেল ও চিনি বিক্রি করছি। প্রতি লিটার তেল ৯০ টাকা, প্রতিকেজি ডাল ৫৫ টাকা, প্রতিকেজি চিনি ৫০ টাকায় বিক্রি করছি। প্রথম ঘণ্টায় মসুর ডাল ও তেল শেষ হয়ে গেছে। এজন্য ক্রেতাদের অনেকেই ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। আমরা কি করব টিসিবি যে পরিমাণ পণ্য দেয়, আমরা তাই বিক্রি করি। স্বাস্থ্যবিধির কথা জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেন, মানুষ না মানলে কি করব। কে কার আগে লাইনে দাঁড়াবে, এ নিয়ে ঠেলাঠেলি ধাক্কা শুরু হয়। কেউ মানতে চায় না। আমরা পণ্য বিক্রি করব, নাকি লাইন মেনটেন করব। আসলে মানুষ নিজ থেকে সচেতন না হলে জোর করে সচেতন করা যায় না।




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com