রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ১০:৩০ পূর্বাহ্ন

বেতাগী-কচুয়া খেয়াঘাটে গলাকাটা ভাড়া আদায়, নেই স্বাস্থ্যবিধি মানার বালাই

বেতাগী (বরগুনা) প্রতিনিধি
  • আপডেট সময় বৃহস্পতিবার, ১৫ জুলাই, ২০২১

মহামারী করোনার সংকটময় কালেও লকডাউন ও ঈদুল আজাহা সামনে রেখে বরগুনার বেতাগী-কচুয়া খেয়াঘাটে বিষখালী নদী পারাপারে পাঁচ টাকার ভাড়া ১০০ টাকা আদায় করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এছাড়াও যাত্রী হয়রানি, যাত্রীদের সঙ্গে অসদাচারণ, করোণার স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে অতিরিক্ত যাত্রী বহন, অদক্ষ চালক, অপর্যাপ্ত ও ত্রুটিযুক্ত ট্রলার দিয়ে নদী পারাপারসহ বিভিন্ন অভিযোগ করেছে যাত্রীরা। যাত্রী পারাপারে স্বাস্থ্যবিধি মানতে নেই কোন বালাই। সাবান বা হ্যান্ড স্যানিটেজারের কোন ব্যবস্থা নেই। সরেজমিনে দেখা গেছে, ইজারাদার সরকারের নিয়মনীতি তোয়াক্কা না করে ইচ্ছামতো খেয়া পরিচালনা করছেন। খেয়া পারাপারের জন্য যাত্রীরা নির্ধারিত ভাড়া দিতে চাইলে টোল আদায়কারীরা খারাপ ব্যবহার করছেন এবং লাঞ্ছিত করছেন। ঘাট ইজারাদার রুস্তুম আলী হাওলাদার ও নুরুল হক কচুয়ার স্থানীয় লোক হওয়ায় যাত্রীদের জিম্মি করে বিষখালী নদীর কচুয়ার পাড় থেকে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করছেন। প্রতিদিন ভাড়া আদায় নিয়ে আদায়কারীরা সাধারণ যাত্রীদের সাথে তর্ক-বিতর্ক, ঝগড়া ও মারধরের ঘটনা ঘটছে। অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের কারণে বরগুনা জেলা পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান নাহিদ মাহমুদ লিটু গত ৪ আগস্ট ‘২০২০ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সুহৃদ সালেহীন এর নিকট লিখিত অভিযোগ তুলে ধরেন। এছাড়া একাধিক ভুক্তভোগীরা অভিযোগ করেন, সরকার কর্তৃক নির্ধারণকৃত ভাড়ার চেয়ে বেশি টাকা নেওয়া এবং এনিয়ে যাত্রীদের সাথে দুর্ব্যবহার করার জন্য প্রতিকার দাবি করেছেন। স্থানীয়রা অভিযোগ করেন, সাধারণ যাত্রী পারাপারে সরকার কর্তৃক নির্ধারিত পাঁচ টাকার পরিবর্তে বর্তমানে ঈদের সময় ১০০ টাকা আদায় করা হচ্ছে। সরকার কর্তৃক ভাড়া নির্ধারণ করা থাকলেও তা মানছে না আদায়কারীরা। লকডাউণ ও ঈদের সময় যাত্রীদের কাছ থেকে মোটরসাইকেল পারাপারে ১০ টাকার পরিবর্তে ২০০ টাকা, বাইসাইকেল ১০ টাকার পরিবর্তে ৫০ টাকা, গরু, মহিষ, ছাগল, ভেড়া পাঁচ টাকার পরিবর্তে ১০০ টাকা, আসবাবপত্র ১০ টাকার পরিবর্তে ৫০০ টাকা ও হালকা যানবাহনের ক্ষেত্রে সর্বনিম্ন ২০০ টাকা করে আদায় করা হয়। ভোর ৫ থেকে রাত ৯ টা পর্যন্ত পারাপারের নিয়ম, কিন্তু সন্ধ্যা ৭টার পরেই ওই বিষখালী নদী থেকে পার হতে হলে চাইলে তাঁর কাছ থেকে রিজার্ভ ৬০০-১০০০ টাকা আদায় করা হয়। একাধিক যাত্রী অভিযোগ করেন, বর্তমানে করোণার স্বাস্থ্য ঝুঁকি নিয়ে মাত্র দুটি ঝুঁকিপূর্ণ বাহন দিয়ে দৈনিক হাজার হাজার যাত্রী পারাপার করে। এতে বেশির ভাগ সময় চাকরিজীবী অফিসে আসতে বিলম্ব হচ্ছে। এতেও ভোগান্তি ও হয়রানি বাড়ছে। এবিষয়ে জানতে চাইলে টোল আদায়কারী মো. রুস্তম আলী জানান, ছাত্র-ছাত্রীদের কাছ থেকে হাফ ভাড়া নেওয়া হয় এবং অনেকে ভাড়াও দেয় না। মোটরসাইকেলে ১৫০ থেকে ২০০ টাকা আদায়ের বিষয় জানতে চাইলে তিনি বিষয়টি এড়িয়ে যান। শৌলজালিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. মাহমুদ হোসেন রিপন জানান, বেশি ভাড়া আদায়ের বিষয়ে জনগণের প্রতিনিধি হিসেবে প্রতিকারের জন্য উপজেলা পরিষদের মাসিক সমন্বয় সভায় বিষয়টি উত্থাপন করে মোবাইল কোর্ট পরিচালনার দাবি করেছি। বেতাগী উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে একাধিকবার ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করে জরিমানা করলেও পুন:রায় যেই সেই অবস্থা হয়ে যায়। ভাড়া আদায়কারীর প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ করে নিয়মিত খেয়া পারাপারের একাধিক ব্যক্তি বলেন, প্রশাসনের পক্ষ থেকে মোবাইল কোর্টে পরিচালনা করে জরিমানা দিলেও, চোরারা না শুনে ধর্মের কাহিনী।’ কাঁঠালিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার সুফল চন্দ্র গোলদার বলেন, অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের বিষয়টি শুনেছি। সুনির্দিষ্ট অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে এ বিষয় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। বেতাগী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. সুহৃদ সালেহীন বলেন, সরকার কর্তৃক নির্ধারিত ভাড়ার অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করার কোন সূযোগ নেই। তা হলে ইজাদারের বিরুদ্ধে আইনগত পদক্ষেপ নেওয়া হবে।




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com