সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ০৭:২৯ পূর্বাহ্ন

ডেঙ্গু পরিস্থিতি আরও অবনতি হওয়ার শঙ্কা: স্বাস্থ্য অধিদফতর

খবরপত্র ডেস্ক:
  • আপডেট সময় রবিবার, ১৮ জুলাই, ২০২১

প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাস সংক্রমণ পরিস্থিতিতেই দেশে ডেঙ্গু পরিস্থিতি আরও অবনতি হতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছে স্বাস্থ্য অধিদফতর। গতকাল রোববার (১৮ জুলাই) দুপুরে সারাদেশের করোনা পরিস্থিতি নিয়ে স্বাস্থ্য অধিদফতরের নিয়মিত বুলেটিনে এই আশঙ্কার কথা জানান অধিদফতরের মুখপাত্র ও লাইন ডিরেক্টর অধ্যাপক ডা. নাজমুল ইসলাম। তিনি বলেন, আপনারা জানেন দেশে করোনা পরিস্থিতি এখন ঊর্ধ্বগামী। এ অবস্থায় ডেঙ্গু পরিস্থিতিও যদি অবনতি হয় তাহলে আমাদের পক্ষে সামাল দেওয়া কঠিন হবে। আর রাজধানীসহ সারাদেশের মশক নিয়ন্ত্রণে যারা দায়িত্বপ্রাপ্ত আছেন, তারা যদি নিজেদের জায়গা থেকে নিজেকে উজাড় করে না দেন তাহলে পরিস্থিতির অবনতি ঘটতে থাকবে।
নাজমুল ইসলাম বলেন, ডেঙ্গু প্রতিরোধে সাধারণ মানুষকেও অনেক বেশি সচেতন হতে হবে। ছাদে ফুলের টব, বাসার আশপাশের ড্রেনসহ সবকিছু পরিষ্কার রাখতে হবে। বাথরুমের কমোড, বালতিসহ কিছুতেই যেন পানি জমে না থাকে। বিশেষ করে তিন দিন বা তার বেশি সময়ের জন্য কোথাও চলে গেলে বাসায় কোনো পাত্রে পানি জমিয়ে রাখা যাবে না।
তিনি আরও বলেন, আমরা জানি এডিস মশা মূলত দিনের বেলায় কামড় দেয়। তাই দিনের যেকোনো সময় ঘুমালেও মশারি টানিয়ে ঘুমাতে হবে। তারপরও যদি কারও জ্বর হয় তাহলে করোনা পরীক্ষার পাশাপাশি ডেঙ্গু পরীক্ষাও করতে হবে। চিকিৎসা নেওয়ার ক্ষেত্রে অবশ্যই রেজিস্টার্ড কোনো চিকিৎসকের পরামর্শে ওষুধ গ্রহণ করতে হবে। প্রয়োজনে স্বাস্থ্য অধিদফতরের হট লাইন বা স্বাস্থ্য বাতায়ন যোগাযোগ করে চিকিৎসা নেবেন।
এর আগে শনিবার (১৭ জুলাই) তার আগের ২৪ ঘণ্টায় (১৬ জুলাই সকাল ৮টা থেকে ১৭ জুলাই সকাল ৮টা পর্যন্ত) ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে ৮১ জন রোগী ভর্তি হন। তাদের মধ্যে ঢাকায় নতুন রোগী ৮০ জন এবং ঢাকার বাইরে নতুন রোগী ১ জন। চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে ১৭ জুলাই পর্যন্ত সর্বমোট ১ হাজার ১৩৯ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি এবং এই সময়ে সর্বমোট ৮০১ জন রোগী ছাড়প্রাপ্ত হয়েছেন। তবে রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটে (আইইডিসিআর) ডেঙ্গু সন্দেহে ২টি মৃত্যুর তথ্য পাঠানো হলেও আইইডিসিআর মৃত্যুর পর্যালোচনা সমাপ্ত করে একটি ডেঙ্গুজনিত মৃত্যুও শনাক্ত করতে পারেনি।
৪২তম বিসিএস থেকেই আরও ২০০০ চিকিৎসক নিয়োগ: করোনা পরিস্থিতির কারনে সরকার অতিরিক্ত চিকিৎসক নিয়োগের কথা জানিয়েছে। স¤প্রতি স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রী জাহিদ মালেকও এ কথা বলেছেন। তবে এসব চিকিৎসক নিয়োগ হলে কোথা থেকে হবে সে প্রশ্নের উত্তর দিয়েছে বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশন (পিএসসি)। পিএসসির দায়িত্বশীল সূত্রগুলো বলছে, অতিরিক্ত চিকিৎসক নিয়োগ হলে ৪২তম বিসিএস থেকেই হবে। স¤প্রতি জাহিদ মালেক বলেছেন, করোনা রোগীদের চিকিৎসাসেবা দিতে দিতে চিকিৎসকেরাও ক্লান্ত। প্রধানমন্ত্রী প্রতিদিন নির্দেশনা দিচ্ছেন। তার নির্দেশনায় নতুন আরও ৪ হাজার চিকিৎসক এবং ৪ হাজার নার্স নিয়োগ করা হচ্ছে। বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশন (পিএসসি) চেয়ারম্যান সোহরাব হোসাইন বলেন, ৪২তম বিসিএস চলছে। আইন অনুয়ায়ী সরকার এখান থেকে পদ বাড়াতে বা কমাতে পারেন। সে ক্ষেত্রে যদি অতিরিক্ত চিকিৎসক নিয়োগ করা হয় তাহলে ৪২তম বিসিএস থেকে নিতে পারে। পিএসসি ও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে, ৪২তম বিসিএস থেকে ২ হাজার চিকিৎসক নিয়োগ করা হবে। এর বাইরেও ২ হাজার অতিরিক্ত চিকিৎসক নিয়োগের কথা চলছে। এ বিষয়ে কার্যক্রম ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে। তবে এ সংক্রান্ত নির্দেশনা এখনো পিএসসিতে এসে পৌঁছায়নি। তবে পিএসসির একটি সূত্র বলেছে, তাঁরা অতিরিক্ত ২ হাজার চিকিৎসক নিয়োগের ব্যাপারে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্তের কথা জেনেছেন। চাহিদাপত্র পেলে তাঁরা এ নিয়োগ কার্যক্রম শুরু করবে। সে অনুসারে এই বিসিএস থেকে মোট ৪ হাজার চিকিৎসক নেবে সরকার। স্বাস্থ্য মন্ত্রনালয় ও পিএসসির সূত্রগুলো জানায়, ৩৯তম বিসিএসের কার্যক্রম শেষ। সেখান থেকে এসব চিকিৎসক নেওয়ার সম্ভাবনা নেই ও ৩৮তম বিসিএসের প্রথম শ্রেণির নিয়োগের সুপারিশ শেষ হয়েছে। এখন দ্বিতীয় শ্রেণির নিয়োগ কার্যক্রম চলছে। চিকিৎসক যেহেতু প্রথম শ্রেণির পদ তাই এই বিসিএস থেকেও চিকিৎসক নেওয়ার সম্ভাবনা নেই। ৪২তম বিসিএস বিশেষ ক্যাডারের লিখিত পরীক্ষায় (এমসিকিউ টাইপ) উত্তীর্ণদের মধ্যে ৬ হাজার ২২ জনের মৌখিক পরীক্ষা শুরু করে পিএসসি। পরে বিজ্ঞপ্তিতে পিএসসি জানায়, বর্তমান করোনার পরিস্থিতি বিবেচনায় সরকারি বিধিনিষেধের কারণে ৪২তম বিসিএস (বিশেষ) মৌখিক পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছে। অল্প সময়ের মধ্যে নতুন তারিখ জানানোর কথা জানায় পিএসসি।




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com