জেলার গ্রামীণ অর্থনীতিকে চাঙ্গা করে তুলছে পোল্ট্রি খামারগুলো।পোল্ট্রি ফার্মে মুরগি পালন করে জেলার ৮উপজেলার শত শত বেকার মানুষ তাদের ভাগ্যের পরিবর্তন ঘটিয়েছে। জেলা প্রাণি সম্পদ দফতর সূত্রে জানা গেছে, জেলায় ২,০০০ হাজারেরও বেশি বড়, মাঝারি এবং ছোট আকারের পোল্ট্রি খামার রয়েছে।এসব খামারে শত শত বেকার মানুষের বিশেষ করে যুবকদের কর্মসংস্থান সৃষ্টি করছে।
খামারী মালিক ও কর্মচারীদের আর্থ-সামাজিক অবস্থার উন্নতি হওয়ায় গ্রামীণ অর্থনীতিও চাঙ্গা হচ্ছে বলে প্রাণি সম্পদ অফিস সূত্রে জানা গেছে। জেলা প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তা মো: বখতিয়ার হোসেন বাসসকে জানান, বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি বাণিজ্যিক ব্যাংক এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠানসহ বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক এবং সোনালী ব্যাংক পোল্ট্রি ফার্ম স্থাপনে সহজ শর্তে স্বল্প সুদে লোন প্রদান করছে। ফার্ম উদ্যোক্তারা সরকারের “দারিদ্র্য বিমোচন কর্মসূচির” আওতায় সহজে পোল্ট্রি খামার গড়ে পারিবারিক স্বচ্ছলতা বাড়াতে সক্ষম হচ্ছেন। এতে বেকাররা তাদের সক্ষমতা ফিরে পাওয়ার পাশাপাশি গ্রামীণ অর্থনীতিও চাঙ্গা হচ্ছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, পোল্ট্রি ফার্মের মালিকদের সহযোগিতার লক্ষ্যে জেলা প্রাণি সম্পদ বিভাগের ভেটেরিনারি ডাক্তারদের তত্ত্বাবধানে মোবাইল চিকিৎসক দল চিকিৎসা সেবা প্রদান করে চলেছেন।বার্ড ফ্লু এবং রানীসহ বিভিন্ন মারাত্মক রোগের প্রকোপ থেকে পোল্ট্রি খামারগুলোকে রক্ষা করতে হাঁস-মুরগির নিয়মিত পর্যবেক্ষণ করা হয়ে থাকে। হাঁস-মুরগির স্বাস্থ্যের অবস্থা ঠিক রাখতে জেলা প্রাণি সম্পদ বিভাগের পক্ষ থেকে সেবার পাশিপাশি ওষুধও সরবরাহ করা হয়ে থাকে।
জেলার চৌগাছা উপজেলার বারগোবিন্দপুরের বাসিন্দা সাব্বির হোসেন এবং কেশবপুর উপজেলার পুটিয়াখালীর বাসিন্দা অনিমেষ দাস জানান, প্রতিবছর একটি হাইব্রিড মুরগি পালনের জন্য ৬০০ টাকা থেকে ৬৫০ টাকা প্রয়োজন হয়।একটি মুরগি বছরে ৩০০ থেকে ৩১০ ডিম দেয়। ফার্মের ডিম বিক্রি করে খরচ বাদে লভ্যাংশ দিয়ে পরিবারের ব্যয়ভার বহন করি বলে তারা জানান।সাব্বির আরো জানান তিনি যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শারিরীক ও বিজ্ঞানে বিএসসি অনার্স শেষ করেছেন।বেকার বসে না থেকে একটি লেয়ার মুরগির ফার্ম গড়ে তুলেছেন। এ পোল্ট্রি ফার্মে বর্তমান ২হাজার ৫শ’৫০টি মুরগি আছে।প্রতিদিন তার ফার্ম ২হাজার ৪শ’টি ডিম বিক্রি করেন।একটি মুরগি একটানা ১৮মাস ডিম দিয়ে থাকে বলে জানান। চৌগাছা উপজেলার মালিগাটি-ফুলসারা এলাকার বাসিন্দা আমিনুল ইসলাম বিপ্লব ও স্ত্রী মাকসুদা আক্তার জানান, তারা দু’জনে মিলে একটি পোল্ট্রি ফার্ম গড়ে তুলেছেন।এ ফার্মে ৫হাজার লেয়ার ও পোল্ট্রি মুরগি আছে বলে মাকসুদা আক্তার জানান। তিনি বাসসকে বলেন আমাদের মুরগির ফার্মটি ইতোমধ্যে লাভজনক পর্যায়ে পৌঁছেছে।এ ফার্ম করার পর আমরা স্বাবলম্বী হয়েছি। জেলা প্রাণি সম্পদ অফিস সূত্রে জানা গেছে, জেলার শতাধিক পোল্ট্রি খামারের মালিকরা খামার স্থাপনের পর তাদের জীবনযাত্রার উন্নতি সাধন করে জীবনধারার মান পরিবর্তন করতে সক্ষম হয়েছেন বলে এ প্রতিনিধিকে জানান। পোল্ট্রি ডিম সংরক্ষণের জন্য জেলায় একটি কোল্ড স্টোরেজ স্থাপনের প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরাত্বারোপ করেছেন পোল্ট্রি ফার্মের মালিকরা।তাহলে লেয়ার মুরগির ফার্ম গড়ে তুলতে আরো অনেকে উৎসাহিত হবেন বলে তারা এ প্রতিনিধিকে জানান।- (বাসস)