কৃষকেরা বোরোর ধানের ন্যায্যমূল্যে পাওয়ায় চলতি আমন মৌসুমে বৃদ্ধি পেয়েছে চাষাবাদ। আমনের চাষাবাদ শুরু হওয়ায় কৃষক পর্যায়ে আমন বীজের চাহিদা বেড়েছে বহুগুন। ফলে কৃষক পর্যায়ে আমন বীজের চাহিদা মেটাতে প্রতিবছরের ন্যায় এবছরও সর্ববৃহৎ আমন বীজের হাট বসেছে উত্তর বরিশালের গৌরনদী উপজেলার মাহিলাড়ায়। সরেজমিন দেখা গেছে, স্থানীয় বীজ বিক্রেতাদের পাশাপাশি পাইকার ও পার্শ্ববর্তী উজিরপুর ও আগৈলঝাড়া উপজেলার বীজ বিক্রেতারা সপ্তাহের দুইদিন হাট শুরু হওয়ার একদিন পূর্বেই বরিশাল-ঢাকা মহাসড়কের দুই পার্শ্বে মাহিলাড়া হাটে বীজের পশরা সাজিয়ে রেখেছেন। ফলশ্রুতিতে দূর-দূরান্তের বীজের ক্রেতা-বিক্রেতা আর পাইকারদের আগমনে সরগরম হয়ে উঠছে মাহিলাড়ার বীজ হাট। বীজ বিক্রেতা ভাষাই সরদার, কামাল বেপারী, জামাল সরদারসহ একাধিক বিক্রেতারা জানান, বীজ কিনতে আসা অধিকাংশরাই মাদারীপুর, শরিয়তপুর জেলাসহ বরিশালের বাবুগঞ্জ ও উজিরপুর উপজেলার সাধারণ কৃষক ও পাইকার। মৌসুমের শুরুতে হাটে বীজের সরবরাহ ছিলো কম তাই দাম ছিলো বেশি। বর্তমানে বীজের সরবরাহ বেশি থাকায় পূর্বের তুলনায় বীজের দাম অনেকটাই কমে গেছে। তারা আরও জানান, মাহিলাড়া থেকে অন্যান্য এলাকার সাথে যোগাযোগ ব্যবস্থা সুবিধাজনক হওয়ায় ও হাটের ইজারাদারদের সহযোগিতায় মাহিলাড়ার বীজের হাট এখন জমজমাট হয়ে উঠছে। মাদারীপুর থেকে বীজ কিনতে আসা কৃষক লতিফ মিয়া, আজগর আলী, মাহাবুব হাওলাদারসহ একাধিক কৃষকেরা জানান, তাদের স্থানীয় বাজারে এক পোন (৮০ মোঠা) বীজের মূল্যে ছয় থেকে সাতশ’ টাকা। যা মাহিলাড়া বাজারে বিক্রি হচ্ছে তিনশ’ থেকে সাড়ে তিনশ’ টাকা। ফলে এখান থেকে সাশ্রয়ী মূল্যে বীজ ক্রয় করছেন তারা। বীজ হাটের সাব-ইজারাদার ও ইউপি সদস্য হাসান আল মামুন জানান, প্রতি সপ্তাহের দুইদিন শনি ও বুধবার বীজের হাট বসে থাকে। ভোর থেকে দুপুরের মধ্যেই শেষ হয়ে যায় বীজ ক্রয়-বিক্রয়ের হাট। বীজ ক্রয়-বিক্রয়ের জন্য হাট কর্তৃপক্ষ সার্বিক সহযোগিতা প্রদান করে যাচ্ছেন। গৌরনদী উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ মোঃ মামুনুর রহমান জানান, চলতি আমন মৌসুমের জন্য কৃষি প্রনোদনা কর্মসূচীর আওতায় উপজেলার সাতশ’ প্রান্তিক কৃষকদের বীজ ও সার দেয়া হয়। পাশাপাশি বীজ উৎপাদনের জন্য উপজেলা কৃষি অফিস থেকে মাঠ পর্যায়ে তদারকি করা হয়েছে। ফলে অনেক কৃষক তাদের নিজেদের চাহিদা মিটিয়ে বীজ বিক্রি করে লাভবান হয়েছেন।