করোনাকালীন এ মহামারীর সময়ে করোনা ভাইরাস সংক্রমণের মধ্যে জনগণের সুরক্ষা সামগ্রী মাস্ক ব্যবহার, সামাজিক দূরত্ব, হ্যান্ড স্যানিটাইজার, হাঁচি-কাশি দেয়ার সময় রুমাল বা টিস্যু ব্যবহার করার কথা বলা হচ্ছে। সকলকে বাধ্যতামূলক মাস্ক ব্যবহারের কথা বলা হচ্ছে। কিন্তু মাধবদীতে নিম্নমানের মাস্ক ও স্যানিটাইজারে বাজার সয়লাব হয়ে গেছে। রাস্তার মোড়ে মোড়ে পানের দোকান, মুদি দোকান, ভ্রাম্যমাণ ভ্যান ও ইজিবাইকে অস্থায়ী দোকানে দেদারছে নিম্নমানের ভেজাল স্বাস্থ্য সুরক্ষা বিক্রি হচ্ছে। চিকিৎসকরা বলছেন, নিম্নমানের সুরক্ষা ব্যবহার করায় স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়ছে। বিশেষ করে নি¤œ আয়ের মানুষ কম দামে নি¤œমানের মাস্ক কিনে স্বাস্থ্যঝুঁকিতে পড়ছেন বেশী। প্রতিদিনই জেলা প্রশাসনের ভ্রাম্যমাণ অভিযানের ভয়ে অনেকেই অনিচ্ছা সত্ত্বেও মাস্ক পড়তে বাধ্য হচ্ছেন। যে কারণে মাস্কের কদর বেড়েছে। এ অবস্থায় মাধবদী পৌর শহর ও এর আশেপাশের অধিকাংশ স্থানে নকল, বেনামী নন ব্যান্ডের নিম্নমানের পণ্য সরবরাহ করে একচেটিয়া ব্যবসা করে যাচ্ছেন অসাধু ব্যবসায়ীরা। ভেজাল ও নিন্মমানের এ সুরক্ষা সামগ্রী এখন মাধবদী সহ আশেপাশের গ্রাম গঞ্জের অধিকাংশ এলাকার পান দোকান, মুদি দোকান, কসমেটিকস দোকান, এমনকি প্রচার ভ্যানসহ ইজিবাইকেও বিক্রি হচ্ছে দেদারছে। মাধবদী বাজরের অধিকাংশ মোড়ে এই চিত্র দৃশ্যমান। বিশেষ করে পোস্ট অফিসের মোড়, ম্যানচেস্টারের মোড় সহ বাজারের মেইন সড়কের পাশে বিক্রি হচ্ছে নকল ও নন ব্যান্ডের এইসব সুরক্ষাসামগ্রী। অথচ এই স্পর্শকাতর বিষয়টি দেখার কেউ নেই। চিকিৎসকদের মতে সচেতন হতে গিয়ে নিম্ন ও ভেজাল পণ্য ব্যবহার করায় স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়ছে। নিজেদের সুরক্ষিত রাখতে কিছু নিম্নআয়ের মানুষসহ সস্তা ভোগী ব্যক্তিরা হুমড়ি খেয়ে পড়ছে এ সকল নিম্নমানের সুরক্ষা সামগ্রীর দোকানগুলোতে। যার ফলে বর্তমানে সোনায় সোহাগা এ সব ব্যবসায়ীরা। আর এ সুযোগ কাজে লাগিয়ে একশ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ী নকল ও নিম্নমানের পণ্য বিক্রি করছে। বর্তমানে ফুটপাতের বিভিন্ন দোকানে এন ৯৫ মাস্ক বিক্রি হচ্ছে বিভিন্ন দামে। বর্তমানে মানুষের মুখে যে সার্জিক্যাল মাস্ক দেখা যাচ্ছে তা সস্তায় মাত্র ৫ টাকায় খুচরা মূল্য কেনা হচ্ছে। যার প্রকৃত দর ১.২০ টাকা করে। প্রতি ৫০ পিসের মাস্কের পাইকারী দরে বিক্রি হচ্ছে ৫৫ টাকা হতে ৬০ টাকা দরে। নরসিংদী সদর উপজেলা আওয়ামীলীগের সহ সভাপতি হাজ্বী মোঃ জাহাঙ্গীর আলম বলেন, মাধবদী বাজারের বিভিন্ন অলিগলি ও মোড় গুলোতে মাস্ক, নন ব্যান্ডের বেনামী হ্যান্ড স্যানিটাইজার, হ্যান্ড ওয়াশসহ নিম্নমানের সুরক্ষা সামগ্রী বিক্রি হচ্ছে। যা আমাদের সুরক্ষা দেওয়ার পরিবর্তে অসুরক্ষিত করে তুলছে। প্রশাসনের উচিত এইগুলোর বিষয়ে কঠোর নজরদারী করা। বাংলাদেশ প্রইভেট ক্লিনিক এন্ড ডায়াগনোষ্টিক অনার্স এসোসিয়েশন নরসিংদী জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক সনেট মোঃ নোমান বলেন, খুবই নিম্নমানের মাস্কও স্যানেটাইজারে বাজারে সয়লাব হয়ে গেছে। এ দুঃসময়ে যারা নিম্নমানের স্যানিটাইজার, মাস্ক তৈরি করে ব্যবসা করছে তাদের মানবিকতার ঘাটতি আছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে তিন লেয়ারের যে কোন মাস্ক করোনা প্রতিরোধে সক্ষম। কিন্তু বাজারগুলোতে তা নেই। প্রশাসনের উচিত মানসম্মত পণ্য বিক্রি নিশ্চিত করা। এ বিষয়ে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ দরকার। এ ব্যাপারে মাধবদী থানার ওসি (তদন্ত) তানভির আহমেদ জানান, মাধবদীতে কয়েকটি ফার্মেসি ছাড়া বেশির ভাগ জায়গায় বিক্রি হওয়া সুরক্ষা সামগ্রী খুবই নিম্নমানের, যা ব্যবহারে সুরক্ষার থেকে স্বাস্থ্যঝুঁকি বেশি। তবে যারা সচেতন তাদের রাস্তার উপর হতে বিক্রি হওয়া মাস্ক সহ নিম্নমানের সুরক্ষা সামগ্রী কেনা মোটেও উচিত নয়। যত্রতত্র রাস্তা থেকে মাস্ক কিনবেন না। এরপরও যততত্র মাস্ক, স্যানিটাইজার বিক্রি না করার বিষয়ে আমাদের অভিযান চালানো হবে।