বাংলাবাজার-শিমুলিয়া রুটে ফেরি চলাচল বন্ধ ঘোষণার পর থেকে দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া রুটের রাজবাড়ীর দৌলতদিয়া প্রান্তে বেড়েছে অতিরিক্ত গাড়ির চাপ। এছাড়াও বিপৎসীমার ওপর দিয়ে পদ্মার পানি প্রবাহিত হওয়ার কারণে তীব্র স্রোতে ফেরি চলাচল বিঘিœত ঘটছে। ফলে দৌলতদিয়া প্রান্তে ফেরি পারাপারের অপেক্ষায় রয়েছে শত শত পণ্যবাহী ট্রাক, কার্ভাড ভ্যান ও দূরপাল্লার বাস। দীর্ঘ সময় ঘাটে আটকে থেকে ভোগান্তিতে পড়েছেন চালক ও যাত্রীরা। গতকাল বৃহস্পতিবার (১৯ আগস্ট) দুপুরে দৌলতদিয়া ঘাট এলাকায় এমন চিত্রই চোখে পড়ে।
সরেজমিনে দেখা যায়, পদ্মা পাড়ি দিতে দৌলতদিয়া প্রান্তে অপেক্ষা করছে শত শত ট্রাক ও যাত্রীবাহী বাস। ফলে ঘাট এলাকায় সৃষ্টি হয়েছে যানজট। এ সময় দৌলতদিয়া ঘাট থেকে ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের দৌলতদিয়া মডেল হাইস্কুল পর্যন্ত ২ কিলোমিটার এলাকায় ২০০ গাড়ির দীর্ঘ লাইন দেখা যায়।
অন্যদিকে ঘাট এলাকায় যানজট কমাতে দৌলতদিয়া ঘাট থেকে ১৩.৫ কিলোমিটার পেছনে রাজবাড়ী-কুষ্টিয়া আঞ্চলিক মহাসড়কে গোয়ালন্দ মোড় থেকে আহলাদিপুর পর্যন্ত ৪ কিলোমিটার এলাকায় ৪০০ অপচনশীল পণ্যবাহী ট্রাকগুলোকে আটকে রাখা হয়েছে। সিরিয়ালে আটকে থাকা ট্রাকগুলো দুই থেকে তিন দিন অপেক্ষা করেও ফেরির দেখা পাচ্ছে না। যশোরের বেনাপোল থেকে গার্মেন্টস সামগ্রী নিয়ে আসা ট্রাকচালক জিলাল শেখ বলেন, তিন দিন ধরে এই গোয়ালন্দ মোড়ে আটকে আছি। আগে বাংলাবাজার-শিমুলিয়া দিয়ে পার হতাম। ওই রুটে ফেরি বন্ধ থাকায় এই রুটে আসছি। এখানে এসেও সিরিয়ালে আটকে আছি। আমাদের খাওয়া-দাওয়া, টয়লেটের অনেক সমস্যা হচ্ছে। বাগেরহাট থেকে আসা ট্রাকচালক মিরাজ মন্ডল কল্যাণপুরে এসে আটকে আছেন। এ সময় তিনি বলেন, রাতে আমরা এখানে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। আমাদের দুর্ভোগ দেখার কেউ নেই। অনেক ট্রাকচালক দায়িত্বরত পুলিশ কর্মকর্তাদের টাকাপয়সা দিয়ে সিরিয়াল ভেঙে চলে যাচ্ছে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে গোয়ালন্দ মোড়ে দায়িত্বরত ট্রাফিক সার্জেন্টকে টাকা নিয়ে সিরিয়াল ভাঙার ব্যাপারে প্রশ্ন করা হলে তিনি অস্বীকার করে বলেন, এই কথা ভিত্তিহীন। ট্রাকচালকরা দুই থেকে তিন দিন এখানে আটকে আছে। দীর্ঘ সময় আটকে থাকায় কষ্টে তারা এসব কথা বলছে। বাংলাদেশ অ্যভন্তরীণ নৌপরিবহন করপোরেশন (বিআইডব্লিউটিসি) দৌলতদিয়া ঘাট শাখার ব্যবস্থাপক শিহাব উদ্দিন ঢাকা পোস্টকে বলেন, তীব্র স্রোতে ফেরি চলাচল ব্যাহত হওয়ায় ও বাংলাবাজার-শিমুলিয়ায় ফেরি বন্ধ থাকায় এই রুটে অতিরিক্ত গাড়ির চাপ বেড়েছে। এই চাপ সামলাতে আমরা ঘাট কর্তৃপক্ষ কাজ করে যাচ্ছি।