হিন্দু আইনে সংস্কার, পরিবর্তন, পরিবর্ধন ও পরিমার্জন না করাসহ চার দফা দাবি জানিয়েছেন বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু মহাজোটের নেতারা। এ বিষয়ে ৩০ আগস্টের মধ্যে সরকারকে স্পষ্টভাবে ঘোষণা দেয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে। অন্যথায় সারাদেশে আন্দোলন করা হবে বলে হুঁশিয়ারি দেয়া হয়। গতকাল রোববার (২২ আগস্ট) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানানো হয়।
চারদফা দাবি হলো- হিন্দু স¤প্রদায়ের কোনো ধরনের আইন পরিবর্তন বা সংশোধন না করা, হিন্দু পরিবার, সমাজ ও ধর্মবিরোধী কর্মকা- পরিচালনা করে হিন্দু সমাজে বিশৃঙ্খলাকারীদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া, শাহীন আনামসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে শর্তহীন ক্ষমা চাওয়া ও ৩০ আগস্টের মধ্যে সরকারের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে স্পষ্ট ঘোষণা দেয়া।
হিন্দু সমাজ সংস্কার সমিতির সভাপতি অধ্যাপক হীরেন্দ্রনাথ বিশ্বাস বলেন, ইংরেজি দৈনিক ডেইলি স্টারের সম্পাদক মাহফুজ আনাম এবং তার স্ত্রী মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের পরিচালক শাহিন আনাম হিন্দু ধর্ম আইনের সংস্কার চেয়ে যে প্রচারণা চালাচ্ছেন সেটি নতুন একটি ষড়যন্ত্র, হিন্দু স¤প্রদায় তা মেনে নেবে না।
তিনি বলেন, এই ষড়যন্ত্রের সঙ্গে সম্পৃক্ত আন্তর্জাতিক কয়েকটি এনজিও। তারা কেন এ আইনের সংস্কার চায় নিজেরাও বোঝে না। হিন্দু আইন সংস্কার যাদের জন্য প্রয়োজন তারা এ ব্যাপারে কোনো দাবি তোলেনি। শাহীন আনাম না বুঝে হিন্দু আইনের বিরুদ্ধে যেসব অনৈতিক প্রচারণা চালাচ্ছেন, অর্থ ব্যয় করছেন এসব অর্থের উৎস কোথায় তা আমরা জানতে চাই। হীরেন্দ্রনাথ বলেন, সনাতন আইনের কোনো সংস্কার অথবা পরিবর্তনের প্রয়োজন নেই। আজকে যারা এই আইনের সংস্কার চায় তারা হিন্দু ধর্মকে অবমাননা করেছেন।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু মহাজোটের মহিলাবিষয়ক সম্পাদক প্রতিভা বাগচী বলেন, মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনসহ কয়েকটি এনজিও হাজার হাজার বছর ধরে চলে আসা সুসংহত হিন্দু স¤প্রদায়ের ঘরে ঘরে অশান্তির বীজ বপন করছে। ১০ হাজার বছরের পুরনো এই হিন্দু পরিবার ব্যবস্থা ধ্বংস করে বাংলাদেশকে হিন্দু শূন্য করার পরিকল্পনা নিয়ে মাঠে নেমেছে চক্রটি। তাদের দুরভিসন্ধি হাসিলে হিন্দু আইন সংস্কারের জন্য আইন কমিশনে একটি প্রস্তাব জমা দিয়েছে। যার নেতৃত্বে আছেন মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের পরিচালক শাহীন আনাম ও তার স্বামী মাহফুজ আনাম। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন- বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু মহাজোটের সভাপতি বিধান বিহারী গোস্বামী, বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু মহাজোটের মহাসচিব গোবিন্দ চন্দ্র প্রামানিক, জাতীয় হিন্দু মহাজোটের মহিলাবিষয়ক সম্পাদক সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী প্রতিভা বাগচী, হিন্দু আইন সংশোধন প্রতিরোধ কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট জেকে পাল, হিন্দু আইন সংশোধন প্রতিরোধ কমিটির সদস্য সচিব সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র আইনজীবী অ্যাডভোকেট জয়া ভট্টাচার্য, বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু মহাজোটের যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট লাকী বাছারসহ বিভিন্ন সংগঠনের নেতারা।