শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৪:২৩ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম ::
জব্দ ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খুলতে সাবেক ভূমিমন্ত্রীর রিট আরেক হত্যা মামলায় সাবেক বিচারপতি মানিককে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে মানহানির মামলায় খালাস পেলেন তারেক রহমান উৎপাদনে ফিরলো কর্ণফুলী পেপার মিল ২০৫০ সালের মধ্যে ৪ কোটি মানুষের মৃত্যু হবে অ্যান্টিবায়োটিক প্রতিরোধী সংক্রমণে দিল্লিতে মেয়ের সঙ্গে থাকছেন শেখ হাসিনা, দলবল নিয়ে ঘুরছেন পার্কে পিআইবির নতুন ডিজি ফারুক ওয়াসিফ, সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টের এমডি এম আবদুল্লাহ ষড়যন্ত্রের ফাঁদে পোশাক শিল্প আইন আপনার হাতে তুলে নেয়ার কারো কোনো অধিকার নেই :স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা সেনাবাহিনীকে ক্ষমতা দেয়ার বিষয়টি পুনর্বিবেচনা করতে বললেন মির্জা ফখরুল

দানশীলতা অনেক বড় নেয়ামত

মুহাম্মদ মিজানুর রহমান:
  • আপডেট সময় সোমবার, ২৩ আগস্ট, ২০২১

বিপদে মানুষের সহযোগিতা করা একটি মানবিক গুণ। যে গুণে আল্লাহ সবাইকে গুণান্বিত করেন না। সম্পদ থাকলেও সব মানুষের পক্ষে এটি করা সম্ভব হয় না। হকের পথে ব্যয় করার সৌভাগ্য তাদের হয়, যাদের প্রতি আল্লাহর অনুগ্রহ আছে। এ কারণে সম্পদওয়ালাদের বাসনা থাকা উচিত আল্লাহর সেই প্রিয় বান্দাদের কাতারে সে যেন নিজেকে দাঁড় করাতে পারে। এর দ্বারা যে শুধু সাহায্য প্রার্থী মানুষ উপকৃত হয় তা নয়, এর মাধ্যমে ব্যক্তি নিজেও পরকালের সামান সংগ্রহ করে নেয়। যদি নিয়ত সঠিক হয়, ব্যক্তির এই উদার ও দানশীল মনোভাব তার জান্নাত লাভের জন্য যথেষ্ট। যাদের অন্তরে এ ধরনের পরিবর্তন উদয় হয়, মনের সব ময়লা-আবর্জনা ধুয়ে-মুছে সে এক পরিপূর্ণ মানুষ হয়ে যায়। যে মানুষকে আল্লাহ সবার উপরে শ্রেষ্ঠত্ব দিয়েছেন। তার অন্তরাত্মায় এক ভিন্ন মানুষের জন্ম হয়, যে মানুষটি অপরের সেবা ও সহযোগিতা করাকে খোদায়ী কাজ বলে মনে করে। পবিত্র কুরআনে আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘যেসব দানশীল পুরুষ ও নারী আল্লাহর পথে দান করে ও আল্লাহকে উত্তম ঋণ প্রদান করে, তাদের জন্য কেয়ামতের দিন তা বহুগুণে বাড়িয়ে দেয়া হবে। আর তাদের জন্য রয়েছে সম্মানজনক পুরস্কার’ (সূরা আল হাদিদ, আয়াত- ১৮)।
এই দুঃসময়ে কত মানুষ বিপদে রয়েছে। এখন সহমর্মিতা ও সহযোগিতার মন নিয়ে মানুষের পাশে দাঁড়ানো কেবল মানবিক দায়িত্ব নয়, বরং মুসলমান হিসেবে ইমানের দাবি। এই করোনাকালীন মহামারীতে অনেক মানুষ কর্মহীন হয়ে পড়েছে। বহু শিল্পপ্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে গেছে। শ্রমিক চাইলেও তার কর্মস্থলে ফিরতে পারছে না। আর অনেক মালিকও অসহায় হয়ে পড়েছে, মন চাইলেও সে তার শ্রমিককে ছাঁটাইয়ের হাত থেকে বাঁচিয়ে রাখতে পারছে না। তাহলে সে নিজেই বাঁচবে না। অন্য দিকে একশ্রেণীর মালিক হঠকারিতার আশ্রয় নিচ্ছে। চাইলে সে পারত এই বিপদের সময়ে তার অধীনস্থ কর্মচারীদের পাশে দাঁড়াতে। আল্লাহ তাকে সেই সামর্থ্য দিয়েছেন। কিন্তু সে এই উত্তম সুযোগটিকে গ্রহণ করল না। অথচ এমনও হতে পারে এই লোকটিকে আল্লাহ তায়ালা অত্যন্ত অসহায় করে তার কাছে নিয়ে নেবেন। তার সম্পদ মানুষ ও মানবতার জন্য কোনো কাজে আসবে না। অথচ লোকটি কোটি টাকার সম্পদের ওপর দাঁড়িয়ে আরো অর্থের স্বপ্ন দেখছে। চিন্তা করছে বিলাসবহুল অট্টালিকার। ওদিকে তার শ্রমিকের ঘরে খাবার জোটে না। অবোধ শিশু ক্ষুধায় কাতরাচ্ছে। সেই আওয়াজ তার কানে ভেসে আসে না। তার আদরের বাবুটার ফলফ্রুট খেতে অরুচি ধরেছে। তার ফেলে দেয়া উচ্ছিষ্ট খেয়ে কুকুরগুলো হৃষ্ট-পুষ্ট হয়েছে। হায়রে মানুষ! তুমিই কী সেই আশরাফুল মাখলুকাত? এই তোমার বিবেক? এই তোমার মানবিকতা?
একটু আগে ফিরে তাকাতেই হয়। নবম হিজরিতে আরব উপদ্বীপ মুসলমানের অধীনে আসে। রাসূল সা: সেই বিশাল রাজ্যের অধিপতি। চারদিক থেকে মদিনায় যত ধনসম্পদ আসতে থাকে। আর তিনি সবই অকাতরে বিলিয়ে দেন অনাথ ও অসহায় মানুষের মধ্যে। তা থেকে কিছুই নিজে রাখলেন না। পরিবারকে দিলেন না। হজরত মা আয়েশা রা: বলেন, মহানবী সা: এমনভাবে দুনিয়া ত্যাগ করেছেন যে, তাঁর পরিবার কখনো লাগাতার দু’দিন পেট পুরে যবের রুটি খেতে পারেনি। অথচ এই বিশ^নবী সা: সম্পর্কে হজরত জাবির ইবনে আব্দুল্লাহ রা: বলেন, রাসূল সা: জীবনে কখনো কোনো সাহায্য প্রার্থীকে ফিরিয়ে দেননি। অথচ আজকের সমাজের কিছু সভ্য মানুষ নিজেদের রাসূল সা:-এর প্রিয় উম্মত বলে দাবি করছে। যাদের চরিত্র ও কাজে রাসূল সা:- এর কোনো আদর্শ বিদ্যমান নেই।
রাসূল সা: বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি কোনো মুমিনের পার্থিব কোনো কষ্ট দূর করে দেবে কিয়ামতের দিন আল্লাহ ওই ব্যক্তির কষ্টসমূহ থেকে একটি কষ্ট লাঘব করে দেবেন। যে ব্যক্তি কোনো অভাবী ব্যক্তিকে দুনিয়াতে ছাড় দেবে আল্লাহ তাকে দুনিয়া ও আখিরাতে ছাড় দেবেন। যে ব্যক্তি কোনো মুমিনের দোষত্রুটি গোপন রাখবে, আল্লাহ দুনিয়া ও আখিরাতে তার দোষত্রুটি গোপন রাখবেন। আর আল্লাহ তায়ালা বান্দার সাহায্যে ততক্ষণ থাকেন যতক্ষণ সে তার ভাইয়ের সাহায্যে থাকে’ (মুসলিম ও তিরমিজি)।
তাই সময় থাকতে নিজেকে বাঁচাতে হবে। তারাই সফলকাম যারা অন্তরের কার্পণ্য দূর করে মানুষের জন্য ব্যয় করে, যা একদিন তারই কল্যাণে আসবে। আল্লাহ এ জন্য তাকে উত্তম প্রতিদান দেবেন, যা তার প্রত্যাশার চেয়েও অনেক অনেক বেশি। সম্পদ তখনই মানুষের জন্য নেয়ামত হয় যখন সে এই সম্পদ দ্বীন ও দুনিয়ার কাজে মানবকল্যাণে ব্যয় করতে পারে। যে পথে রয়েছে আল্লাহর সন্তুষ্টি। সাহিত্যিক ও গবেষক




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com