রবিবার, ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১২:৩১ অপরাহ্ন

কোটালীপাড়ায় ৫৬টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভবন ঝুঁকিপূর্ণ

মিজানুর রহমান বুলু কোটালীপাড়া (গোপালগঞ্জ) :
  • আপডেট সময় রবিবার, ৫ সেপ্টেম্বর, ২০২১

১২ সেপ্টেম্বর খুলছে বিদ্যালয়

দীর্ঘ দেড় বছর বন্ধ থাকার পর সরকারের ঘোষনা অনুযায়ী আগামী ১২ সেপ্টেম্বর খুলে দেওয়া হচ্ছে দেশের সমস্ত প্রাথমিক বিদ্যালয়। সে ক্ষেত্রে গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া উপজেলার ১৮৭টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ও খুলে দেওয়া হবে। আর এই বিদ্যালয় খুলে দেওয়ার আনন্দে ভাসছে শিক্ষার্থীরা। তবে উপজেলার কিছু কিছু বিদ্যালয় ভবন জরাজির্ন ও ঝুঁকিপূর্ণ থাকায় এ সকল বিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মাঝে এক ধরণের উদ্বেগ কাজ করছে। যে কোন মূহর্তে জরাজির্ন এ সব ভবনের ছাদ ধসে দূর্ঘটনা ঘটতে পারে বলে আশঙ্কা করছে শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকবৃন্দ। এ উপজেলার ১৮৭টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মধ্যে ৫৬টি বিদ্যালয়ের ভবন জরাজির্ন ও ঝুঁকিপূর্ণ রয়েছে বলে উপজেলা শিক্ষা অফিস সুত্রে জানাগেছে। এ সকল বিদ্যালয়ে বিকল্প কোন ব্যবস্থা না থাকার কারণে বিদ্যারয়গুলো খুলে দেওয়ার সাথে সাথে শিক্ষকগন শিক্ষার্থীদের এই জরাজির্ন ও ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে পাঠদান করাবেন। উপজেলা শিক্ষা অফিসের তথ্য মতে যে সকল বিদ্যালয়ে জরাজির্ন ও ঝুঁকিপূর্ণ ভবন রয়েছে সেগুলো হলো, ৬৪নং পোলসাইর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ১৮১কয়খা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ২নং মদনপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ৯৬নং কুশলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ৩২নং পশ্চিম কান্দি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ১৮নং জহরেরকান্দি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ১৬২ নং বঙ্গবন্ধু মাছপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ২৫নং হরিনাহাটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ১৭৯নং সোনাখালী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ১২নং ভুতেরবাড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ৪৮নং বড় দক্ষিনপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ২০নং কাফুলাবাড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ৯৮ নং টিহাটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ৯৩ নং বহলতলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ২২নং শৌলদহ মুশুরিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ২৬নং হাসুয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ৪০ নং ধারাবাশাইল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ৭৩নং কলাবাড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ১৩নং হাজরাবাড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ১৫১নং বদরতলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ১১৫নং দক্ষিণ চৌরখুলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ১৫২নং পাইকেরবাড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ১৪২নং পশ্চিম নৈয়ারবাড়ি মধ্যপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ৫০নং শান্তি কুটির সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ৬৯নং শিমুলবাড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ১৯নং রামশীল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ১৩৪ নং পশ্চিম নৈয়ারবাড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ৮০নং কুরপালা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ২৩নং খাগবাড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ৫৯নং ছোট দিঘলীয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ১৮২নং রুথিয়ারপাড় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ১৩০নং পূর্ব বর্ষাপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ২৮নং বান্ধাবাড়ি হাট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ৮৭নং বাহির শিমুল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ১০১নং নারায়ণ খানা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ১২৯নং মধ্য বাগানউত্তরপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ১০৮নং মধ্য হিরণ মুন্সিপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ৫৮নং জটিয়ারপাড় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ৫১নং দক্ষিণ গোপালপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ৩৫নং পূর্বপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ২৭নং বান্ধাবাড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ৮৬নং তারাইল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ২৯নং পূর্ব হরিনাহাটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ৭১নং তেঁতুলবাড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ৯৪নং সোনাইল বাড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ৬৫নং মধ্য মাঝবাড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ১৮০নং পিড়ারবাড়ি মুশুরিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ৩৯নং হিজলবাড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ৩৪নং মাচারতারা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ৩নং পূর্ব বাগানউত্তরপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ৭নং দিঘলীয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ৪১নং গচাপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ৫৫নং নারিকেল বাড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ১৪৯নং কালিগঞ্জ বুরুয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ৭৪ নং বুরুয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও ১৪৩নং দেশী কদমবাড়ি জগদীশ চন্দ্র সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। ৪০নং ধারাবাশাইল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক নিখিল চন্দ্র বাড়ৈ বলেন, আমাদের বিদ্যালয়ে ৩৭৬জন শিক্ষার্থী রয়েছে। এই শিক্ষার্থীদের পাঠদান করানোর জন্য একটি টিন সেট ভবন ও দু’কক্ষ বিশিষ্ট একতলা একটি পাকা ভবন রয়েছে। এই পাকা ভবনের একটি রুমে রয়েছে আমাদের অফিস কক্ষ। অপর কক্ষে আমরা শিক্ষার্থীদের পাঠদান করাই। এ ভবনটিও ঝুঁকিপূর্ণ। ভবনটির পলেস্তারা খসে পড়ছে। টিন সেট ভবনটি ঝুঁকিপূর্ণ হয়েছে প্রায় ১৫বছর আগে। এই ঝুঁকিপূর্ণ ভবনেই আমরা শিক্ষার্থীদের পাঠদান করাই। বিদ্যালয়টির প্রধান শিক্ষক অনিপ হালদার বলেন, গত কয়েক বছর ধরে আমরা উপজেলা শিক্ষা অফিসে চিঠি দিয়ে আসছি। কিন্তু কোন ফল হচ্ছে না। বিকল্প কোন ব্যবস্থা না থাকার কারণে আমরা এই ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে শিক্ষার্থীদের পাঠদান করাচ্ছি। বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সদস্য নীল কন্ঠ বাড়ৈ বলেন, আমাদের বিদ্যালয়ের দুটি ভবনই ঝুঁকিপূর্ণ। পাকা ভবনটির শ্রেণি ও অফিস কক্ষের পলেস্তারা খসে খসে পড়ছে। শিক্ষক শিক্ষার্থীরা বিদ্যালয়টি খুললে ঝুঁকির মধ্যে থাকবে। এই বিদ্যালয়ে কোন দূর্ঘটনা ঘটার আগেই কর্তৃপক্ষের ব্যবস্থা গ্রহণ করা উচিৎ। উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক কাজী সাফায়েত হোসেন বলেন, আশপাশের উপজেলাগুলোর চেয়ে আমাদের এ উপজেলায় প্রাথমিক শিক্ষার মান অনেক উন্নত। বর্তমান সরকার এ উপজেলায় পর্যাপ্ত শিক্ষ উপকরণ দিচ্ছেন। কিন্তু আমাদের অনেক প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভবন নেই। অনেক বিদ্যালয়ের ভবন ঝুঁকিপূর্ণ রয়েছে। অপরদিকে অনেক বিদ্যালয়ে পিডিবি-২ এর আওতায় দু’কক্ষ বিশিষ্ট ভবন নির্মাণ করা হয়েছে। এ সকল বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীর সংখ্যা বেশী থাকার কারণে শিক্ষকদের পাঠদানে সমস্যা হচ্ছে। তাই আমি দ্রুত প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোর ভবন সমস্যা সমাধানের দাবি জানাচ্ছি। উপজেলা শিক্ষা অফিসার অরুন কুমার ঢালী বলেন, আমরা এই জরাজির্ন ও ঝুঁকিপূর্ন ভবনগুলোর তালিকা গত বছরের জানুয়ারি মাসে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরে পাঠিয়েছি। এ সকল ভবন পাস হয়েছে কি না এ বিষয়ে এখন পর্যন্ত চিঠি পাইনি। তবে আশা করছি শীঘ্রই ভবনগুলো পাস হবে।




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com