হঠাৎ করে কেন ম্যানচেস্টার টেস্ট বাতিল করে দিলো ভারত, তা নিয়ে তুমুল আলোচনা-সমালোচনা চলছেই। এর মধ্যে সবচেয়ে বড় যুক্তি দাঁড় করানো হয়েছে যে, আইপিএলের কারণেই টেস্ট ম্যাচটি খেলা থেকে বিরত থেকেছে ভারতীয় ক্রিকেটাররা। যদিও বিসিসিআই সভাপতি সৌরভ গাঙ্গুলি এর পেছনে বড় কারণ দেখছেন, দলের ফিজিওর করোনা আক্রান্ত হওয়াকে। কিন্তু এখন ধীরে ধীরে পরিস্কার হতে শুরু করেছে ভারতের মূল চিন্তাধারা কী। সৌরভ গাঙ্গুলি একদিকে বলছেন, পরবর্তী সময়ে টেস্ট ম্যাচটি আয়োজন করলে তারা খেলবেন। কিন্তু অন্যদিকে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের পক্ষ থেকে এরই মধ্যে ইংল্যান্ড অ্যান্ড ওয়েলস ক্রিকেট বোর্ডকে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে, টেস্টের পরিবর্তে দুটি টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলার জন্য। ভারত বনাম ইংল্যান্ড পঞ্চম টেস্ট নিয়ে জলঘোলা এমনিতেই অব্যাহত রয়েছে। ম্যানচেস্টারের বাতিল করা টেস্ট কবে খেলা হবে, আদৌ হবে কি না, তা কী ভিন্ন সিরিজের অংশ হবে, যদি হয় তাহলে এই সিরিজের ফলাফল কী, এমন নানা প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে ক্রিকেট মহলে। এরই মধ্যে টেস্ট নয়, বরং পরিবর্তে ইসিবিকে সামনের বছরের সফরে বাড়তি দু’টি টি-টোয়েন্টি খেলার প্রস্তাব দিয়েছে বিসিসিআই। দলে করোনার প্রকোপ বাড়ায়, সংক্রমণ এড়াতে ভারতীয় দল পঞ্চম টেস্ট খেলতে রাজি হয়নি। টেস্ট বাতিল হওয়ায় ইসিবির প্রায় ৫০০ কোটি টাকার মতো ক্ষতি হবে বলে খবর জানা গেছে।
আবার সামনের বছরই পুনরায় ইংল্যান্ড সফরে যাবে ভারতীয় দল। সে সফরে তিনটি করে ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি খেলার কথা বিরাট কোহলিদের। ইসিবির এই বিপুল পরিমাণ ক্ষতি পোষাতে ওই সফরেই বাড়তি টি-টোয়েন্টি খেলার প্রস্তাব দিয়েছে ভারতীয় বোর্ড, যা আর্থিক দিক থেকে অধিক লাভবান হতে পারে ইংল্যান্ড।
ভারতের কাছ থেকে পাওয়া এই প্রস্তাব নিয়ে আলাপ আলোচনা করছে ইসিবি এবং পাশপাশি সমস্যা সমাধানের রাস্তা খুঁজে বের করার জন্য দুই বোর্ড কথাবার্তাও চালিয়ে যাচ্ছে। যদিও পুরো বিষয়ে ব্রডকাস্টার যারা প্রায় ম্যাচের জন্য ২৫ মিলিয়ন ডলার ব্যয় করেছিল, তাদের মতামত খুবই গুরুত্বপূর্ণ হতে চলেছে।
মনে করা হচ্ছে, দুই সন্ধ্যার ক্রিকেটের বদলে পাঁচদিন ধরে চলা ম্যাচেই তাদের অধিক লাভ হবে। পাশপাশি খাদ্য়, পানীয় এবং অন্যান্য সুযোগ সুবিধা থেকেও দুই দিনের বদলে পাঁচ দিনে অধিক লাভ হবে। সমস্যা রয়েছে মাঠ নিয়েও। ম্যানচেস্টারের ওল্ড ট্রাফোর্ডে এমনিতেই ভারত-ইংল্যান্ড সিরিজের প্রথম টি-টোয়েন্টি আয়োজিত হওয়ার কথা। পাশপাশি ভারতের পরেই আবার দক্ষিণ আফ্রিকা ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে খেলবে, যে সিরিজের দ্বিতীয় ওয়ানডেও এখানেই অনুষ্ঠিত হবে। দুই সিরিজের মধ্যে ব্যবধানও মাত্র পাঁচ দিনের। এমতাবস্থায় সেখানে খেলা সম্ভব কি না, তা নিয়েও প্রশ্ন রয়েছে। সবমিলিয়ে এই সমস্যা যে খুব তাড়াতাড়ি মেটার নয়, তা সহজেই বোঝা যাচ্ছে।