রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৪:২৭ অপরাহ্ন

বিপদে ভেঙে না পড়া

আমিনুর রহমান হাসান:
  • আপডেট সময় শুক্রবার, ১৭ সেপ্টেম্বর, ২০২১

সুখ-দুঃখ ও আনন্দ-বেদনা নিয়েই আমাদের এ করপোরেট জীবন। আল্লাহ তায়ালা কাউকে সারা জীবনের জন্য সুখী বা দুঃখী করে দেননি। তিনি মাঝে মধ্যে সুখ দিয়ে পরীক্ষা করেন আমরা তাঁকে ভুলে যাই কি না এবং দুঃখ দিয়ে পরীক্ষা করেন আমরা তাঁর প্রতি অসন্তুষ্ট হই কি না। তবে এই সুখ বা দুঃখকে চিরস্থায়ী ভাবা যাবে না। কেননা আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কুরআনে ঘোষণা করেন, ‘নিশ্চয়ই কষ্টের পরই রয়েছে স্বস্তি’ (সূরা ইনশিরাহ, আয়াত-৫)।
সুখ-দুঃখের নাটাই একমাত্র আল্লাহর কাছেই। জীবন চলার পথে আমরা রকমারি বিপদে পড়ি। হতে হয় বিভিন্ন অপ্রত্যাশিত মুহূর্তের সম্মুখীন। বিপদ বা সমস্যা এটা আল্লাহর পক্ষ থেকে বান্দার প্রতি এক বিশেষ পরীক্ষা। এই পরীক্ষা দিতে হয় ধৈর্যের মাধ্যমে। মহান আল্লাহ তায়ালা সব আম্বিয়া আ:কেও বিভিন্ন সময় বিভিন্ন পরীক্ষার সম্মুখীন করেছেন। তাঁরা তাঁদের শান অনুযায়ী ধৈর্যের পরিচয় দিয়েছেন।
হাদিস শরিফে আছেÑ হজরত মুসআব ইবনে সাদ রহ: থেকে তার পিতার সূত্রে বর্ণিতÑ তিনি (সাদ) বলেন, আমি প্রশ্ন করলাম, হে আল্লাহর রাসূল! মানুষের মধ্যে কার বিপদের পরীক্ষা সবচেয়ে কঠিন হয়? তিনি বললেন, ‘নবীদের বিপদের পরীক্ষা, তারপর যারা নেককার তাদের, এরপর যারা নেককার তাদের বিপদের পরীক্ষা।
মানুষকে তার ধর্মানুরাগের অনুপাত অনুসারে পরীক্ষা করা হয়। তুলনামূলকভাবে যে লোক বেশি ধার্মিক তার পরীক্ষাও সে অনুপাতে কঠিন হয়ে থাকে। আর যদি কেউ তার দ্বীনের ক্ষেত্রে শিথিল হয়ে থাকে তাহলে তাকে সে মোতাবেক পরীক্ষা করা হয়। অতএব, বান্দার ওপর বিপদাপদ লেগেই থাকে, অবশেষে তা তাকে এমন অবস্থায় ছেড়ে দেয় যে, সে জমিনে চলাফেরা করে অথচ তার কোনো গুনাহই থাকে না’ (ইবনে মাজাহ-৪০২৩)। এই হাদিস থেকে প্রতীয়মান হয় যে, দুঃখ-কষ্ট, বিপদ-আপদ আল্লাহ তাঁর নৈকট্যবান বান্দাদের দিয়ে থাকেন এবং সর্বোচ্চ ধৈর্যের মাধ্যমে তার মোকাবেলা করতে হয়। যেমনটা করেছেন সব নবী-রাসূল। পবিত্র কুরআনে মহান আল্লাহ ঘোষণা করেন, ‘নিশ্চয়ই আমি তোমাদেরকে কিছু ভয় ও ক্ষুধা, জান ও মাল এবং ফসলের ক্ষতির মাধ্যমে পরীক্ষা করব। (হে নবী!) আপনি ধৈর্যশীলদের সুসংবাদ দিন’ (সূরা বাকারা-১৫৫)।
বিপদের সময় আমাদেরকে ভেঙে পড়লে চলবে না। ধৈর্যের মাধ্যমে আল্লাহর কাছে চাইতে হবে। অন্য আয়াতে আল্লাহ ঘোষণা করেন, ‘হে বিশ্বাসীগণ! ধৈর্য ও নামাজের মাধ্যমে তোমরা আল্লাহর সাহায্য প্রার্থনা করো। আল্লাহ ধৈর্যশীলদের সঙ্গী’ (সূরা বাকারা)। সুতরাং বিপদে আমাদেরকে হতাশ হলে চলবে না। ধৈর্য ধরতে হবে। ধৈর্যের মাধ্যমে আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করতে হবে। আরবি একটা প্রবাদের অর্থ ‘ধৈর্য সফলতার চাবিকাঠি’।
তাই যেখানে ধৈর্য থাকবে না সেখানে সফলতার ছোঁয়া লাগবে না। কথায় আছে ‘ধৈর্য হলো কাঁটাময় গাছের মতো, যার পুরো শরীরে কাঁটা এবং তার ফল মিষ্টি’। জীবনের সামান্য ছন্দপতনে বিচলিত হওয়া মানে নিজেকে সফলতা থেকে শত হাত দূরে রাখা। জীবনের চলার পথের সব ধরনের ভালো-খারাপের মুহূর্তকে আনন্দচিত্তে মেনে নিয়ে সামনে এগোতে হবে। স্বতঃস্ফূর্তভাবে মেনে নিতে হবে মহান আল্লাহর পক্ষ থেকে আসা সুখ-দুঃখকে। তবেই আমরা বিজয়ী এবং এতেই আমরা সফলকাম। অতএব, জীবনে সফলতার জন্য ধৈর্যের বিকল্প নেই। আল্লাহ তায়ালা আমাদেরকে বিপদ-আপদে ধৈর্য ধারণের মাধ্যমে তাঁর সন্তুষ্টি অর্জনের তাওফিক দান করুন।




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com