মঙ্গলবার, ০১ অক্টোবর ২০২৪, ০৩:৪১ অপরাহ্ন

৫০ বছরেও হয়নি সেতু, নৌকাই ভরসা

আলতাফুর রহমান আলতাফ লালমনিরহাট :
  • আপডেট সময় বৃহস্পতিবার, ২৩ সেপ্টেম্বর, ২০২১

লালমনিরহাটের আদিতমারির ১৫ টি গ্রামের মানুষের একমাত্র ভরসা নৌকা। একটি সেতুর অভাবে দীর্ঘদিন ধরে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে এ অঞ্চলের শিক্ষার্থীসহ লাখো মানুষকে। প্রতিনিয়ত ঝুঁকি নিয়ে পারাপার হতে হচ্ছে তাদের। সেতু হয়নি ৫০ বছরেও। আর তাই লালমনিরহাটের আদিতমারির মালদহ নদী পার হয়ে প্রতিদিন চলাচল করছে মহিষতুলি, বারঘড়ি, দুলালী, তালুক দুলালী, লোহাকুচি, ফলিমারি, পাঠানঝাড়, শঠিবাড়ি, ভিতরকুঠি, দুর্গাপুর, কর্ণপুর ও মোগলহাটসহ ১৫ গ্রামের লাখো মানুষ। এছাড়া প্রতিদিন ঝুঁকি নিয়ে পার হতে হয় দুলালী হাইস্কুল, মহিষতুলি হাইস্কুল, লোহাকুচি হাইস্কুল, ফলিমারি বালিকা বিদ্যালয় ও শঠিবাড়ি মাদ্রাসার কোমল মতি শিক্ষার্থীদের। সেতু না থাকায় কৃষকের উৎপাদিত ফসল কেনা বেচা এবং যে কোন সময় যাতায়াতের জন্য নৌকাই একমাত্র ভরসা। শিক্ষার্থী থেকে শিশু, কিশোর, বৃদ্ধ সকল বয়সের মানুষ প্রতিনিয়ত দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন। বৃষ্টির দিনে এই ভোগান্তি আরও চরম আকার ধারণ করে। ঝুঁকিপূর্ণ নৌকায় মাঝেমধ্যে শিক্ষার্থীরা বেশি বিপাকে পড়ে। প্রায় ১৫০ মিটার প্রশস্ত মালদহ ওপর একটি সেতু নির্মাণ এলাকার মানুষের দীর্ঘদিনের দাবি হলেও আজও তা পূরণ হয়নি। এলাকাবাসীর অভিযোগ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশব্যাপী উন্নয়নের জোয়ার চলছে। অথচ এখানে তেমন কোন উন্নয়নের ছোঁয়া লাগেনি। প্রায় এক দশক আগে গ্রামের মধ্যে কিছু রাস্তা পাকা করা হলেও এখানে একটি সেতুর জনদাবি অপূর্ণই রয়ে গেছে। সেতুর দাবি নিয়ে বিভিন্ন স্থানে ধর্ণা দিয়ে না পেয়ে এলাকাবাসী হতাশ। আধুনিক যুগে এসেও ৫০ বছর আগের মতো এখনও ঝুঁকিপূর্ণ নৌকাই হচ্ছে পারাপারের একমাত্র ভরসা। ওই সব গ্রামে রয়েছে, ঐতিহ্যবাহী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। প্রায় আড়াই হাজার শিক্ষার্থী প্রতিদিন এই ঝুঁকিপূর্ণ পারাপার হয়ে বিদ্যালয়ে যাতায়াত করে। অনেক সময় নৌকা থেকে পড়ে গিয়ে শিক্ষার্থীদের বইখাতা, পরিধানের পোশাক ভিজিয়ে নাকানিচুবানি খেয়ে তীরে উঠতে হয়। এছাড়া এলাকায় রয়েছে বড় একটি সাপ্তাহিক হাট। এলাকাবাসীর জানায়, এখানে সেতুটি হলে ১৪-১৫ গ্রামের লাখো মানুষের যোগাযোগের পথ সুগম হবে। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, লালমনিরহাটের আদিতমারি উপজেলার ভেলাবাড়ি ও দুর্গাপুর ইউনিয়নের মধ্য দিয়ে মালদহ নদী প্রবাহিত। প্রবহমান ওই নদীতে এক সময় বর্ষাকালে মাছ ধরার ধুম পড়ে যেতে। অর্ধশত বছরেরও বেশি আগে ওয়াপদা (পানি উন্নয়ন বোর্ড) বেড়িবাঁধ নির্মাণ কালে ওই নদীর মুখে স্লুইচ গেট তৈরি করে। এতে নদীর স্বভাবিক পানি প্রবাহ বন্ধ হয়ে ধীরে ধীরে খালে পরিণত হয়। এ ব্যাপারে মহিষতুলি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আমজাদ হোসেন বলেন, সেতু না থাকায় শিক্ষার্থীরা ঠিকভাবে বিদ্যালয়ে আসা যাওয়া করতে পারে না। কয়েকবার সেতুর জন্য মাপ নেয়া হলেও পরবর্তীতে আর কোন কাজের অগ্রগতি হয়নি। স্থানীয় ভেলাবাড়ি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আলী বলেন, এই অঞ্চলের মানুষের দাবি হচ্ছে ভেলাবাড়ি ও দুর্গাপুরকে বিচ্ছিন্ন করে রাখা মালদহ নদীর ওপর একটি সেতু নির্মাণ করা। তিনি এ ব্যাপারে উদ্যোগ নিলেও অগ্রগতি হয়নি। তিনি সংশ্লিষ্ট উচ্চ মহলের দৃষ্টি আকর্ষণ করে এখানে একটি সেতু নির্মাণের দাবি জানান। এ ব্যাপারে আদিতমারি উপজেলা প্রকৌশলী সোহেল রানা বলেন, মালদহ নদীতে সেতু নির্মাণের জন্য আমরা উদ্যোগ নিয়েছি। সমাজকল্যান মন্ত্রী মহোদয়ও খুব আন্তরিক। আশা করি দ্রুতই এলাকাসীর দাবি পুরণ হবে।




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com