বাজারে দ্রব্যমূল্যের লাগামহীন ঊর্ধ্বগতির প্রতিবাদে খালি পাতিল, ফাঁকা গ্যাস সিলিন্ডার, খালি ব্যাগ নিয়ে ‘প্রতীকী প্রতিবাদ’ জানিয়েছেন নাগরিক নারী, যুব ও ছাত্র ঐক্য। গতকাল শনিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে শাহবাগের জাতীয় জাদুঘরের সামনে এ প্রতিবাদ কর্মসূচিতে বাজার নিয়ন্ত্রণে সরকারের ‘ব্যর্থতার’ সমালোচনা করেন বক্তারা। নাগরিক নারী ঐক্যের সাধারণ সম্পাদক ফেরদৌসী আক্তার বলেন, “আজ ঘরে ঘরে কান্নার রোল, ক্ষুধার্ত মানুষের হাহাকার। নিজে খেতে পারছে না, সন্তানদের খাওয়াতে পারছে না, ক্ষুধার জ্বালা সহ্য করতে না পেরে আজ আত্মহত্যা করছে। যে সরকার বলেছিলো দশ টাকায় দরে চাল খাওয়াবে সে সরকার আজ কোথায়। তিনি বলেন, যেখানে খাদ্যের অভাবে ঘরে ঘরে হাহাকার, সেখানে সরকার আমাদের উন্নয়ের কথা বলে যাচ্ছেন। তাহলে আমরা কি পদ্মা সেতুর পিলার চিবিয়ে খাব? মেট্রোরেলের লোহা, কাঠ, উন্নয়ের ইট-পাথর-সিমেন্ট চিবিয়ে খাব? সব কিছুর দ্রব্য মূল্য আয়ত্তের বাইরে। আজকে প্রতিটি মানুষের মুখে দুঃখের কালিমা লিপ্ত। নিত্যপণ্যের মূল্য বৃদ্ধির কারণে সরকারকে ‘ক্ষমতা থেকে সরে দাঁড়িয়ে সুষ্ঠ নির্বাচন দেয়ার’ কথা বলেন তিনি।
নাগরিক ঐক্যের আহবায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, ” দেশে যারা ক্ষমতায় আছেন তারা প্লেনে চড়ে নিচে তাকালে লস এঞ্জেলস দেখেন, তারা আমাদের উন্নয়নের গল্প শোনায়। অথচ দেশে ক্ষুধার আগুন জ্বলে আমাদের খাবার নাই, একেক জিনিসের দাম আমাদের বাপ দাদারা কল্পনা করতে পারেনি। আমি এই দেশকে প্রশ্ন করতে চাই, মানুষের পেটে যদি খাবারই না থাকে তাহলে সেই দেশ থেকে লাভ কী? মানুষ ক্ষুধার জ্বালায় আত্মহত্যা করে। আর টেলিভিশনে হাসিহাসি চেহারা নিয়ে কথা বলতে লজ্জা করে না আপনাদের? আমারা ধনী দেশ হয়ে গেছি অথচ আমাদের পেটে ক্ষুধার আগুন। শিক্ষিত বেকার এক কোটি। খাদ্য দ্রব্যের দাম কমার কোনো খবর নাই! কমবে কিভাবে! দাম বাড়ার যতগুলো কারণ বের হয়েছে এই সরকার কোনো কিছু নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না। কারণ সরকারের নিজেরই নিজের ওপর নিয়ন্ত্রণ নেই। সরকার নিত্যপণ্যের মূল্য বৃদ্ধি থেকে ‘জনসাধারণের চোখ সরাতে’ কুমিল্লায় সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা বাঁধিয়েছে বলে অভিযোগ করে তিনি।
এসময় গতকাল শুক্রবার বিকাল তিনটায় শাহবাগ জাতীয় জাদুঘরের সামনে একই দাবি আবারও কর্মসূচির ঘোষণা দেন তিনি। নাগরিক যুব ঐক্যের সমন্বয়ক কবীর হোসেনের সঞ্চালনায় আরও বক্তব্য রাখেন নাগরিক ঐক্যের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য আনিসুর রহমান খসরু, সমন্বয়ক শহীদুল্লাহ্ কায়সার প্রমূখ।