নওগাঁর ধামইরহাটে গতবছর রোপা আমন মৌসুমে বিনা ধান ১৭ চাষ করে ভালো ফলন ও দাম পাওয়ায় এবারও আগেভাগেই কোমর বেঁধে মাঠে নেমেছেন কৃষাণ-কৃষাণী। বিনা ধান ১৭ মূলত রোপা আমন মৌসুমের জাত। খরা সহিঞ্চু ও উচ্চ ফলনশীল। দেখতে অনেকটা জিরাশাইল চাল এর মত সরু। এ চালের ভাত খেতে অনেকাই সুস্বাদু। তাছাড়া এধানের চাল চিকন হওয়াই বাজারে দাম ভালো পাওয়া যায়। শুধু তাই নয় বিনা ধান ১৭ কাটা শেষে কৃষক ওই জমিতে হালচাষ করে তিন ফসলী রবি শস্য সরিষা, সূর্যমুখী (তেল জাতীয় ফসল) আলু লাগানো সম্ভব। ফলে একটি পরিবারের চাহিদা অনেকাংশেই পূরণ করা সম্ভব হয়েছে। উপজেলা কৃষি বিভাগ থেকে জানা যায়, বিনা ধান ১৭ দেশীয়ভাবে উদ্ভাবিত উচ্চ ফলনশীল ও খরা সহিঞ্চু জাত। এ জাতের ধান চাষে সার বীজ ও পানির খরচ অন্যান্য ধানের চাইতে অর্ধেকেরও কম হয়। তাছাড়া রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা অনেক বেশি ও উচ্চফলনশীল হওয়ায় কৃষকরা খুব সহজেই অধিক ফলন ঘরে তুলতে পারেন। এ জাতের ধান সাধারণত আশ্বিন মাসের শেষে পাকতে শুরু করাই ওই সময় ধান কাটতে পর্যাপ্ত শ্রমিকও পাওয়া যায়। ফলে কৃষক আর্থিকভাবে লাভবান হন। আরও জানা গেছে ২০১৭ সাল থেকে উপজেলা কৃষি বিভাগ থেকে কৃষকদের মাঝে বিভিন্নভাবে প্রণোদনা, প্রশিক্ষণ দেওয়া, উঠান বৈঠক, লিফলেট বিতরণ, কৃষকদের মাঝে উৎসাহ প্রদানের মাধ্যমে বর্তমানে বিনা ধান ১৭ চাষে কৃষকদের মাঝে ব্যাপকভাবে সাড়া পড়েছে।
আলমপুর ইউনিয়ন চৌঘাট এলাকার ধান চাষী রফিকুল ইসলাম বলেন, এক ফসলী জমিতে তিনটি ফসল চাষ করা সম্ভব তা আগে আমার জানা ছিল না। এবার কৃষি অফিসের পরামর্শে ২৪ শতাংশ জমিতে বিনা ধান ১৭ লাগিয়ে আমি লাভবান হয়েছি। এখন আমার ধান কাটা শেষ। ভাবছি আলু, সরিষা লাগাবো। এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মোছা. শাপলা খাতুন বলেন, বিনা ধান ১৭ দেশীয়ভাবে উদ্ভাবিত উচ্চ ফলনশীল আগাম জাতের ধান। ফলে কৃষক খুব সহজেই একটি জমি থেকে তিনবার ফসল চাষ করতে পারেন। তিনি এও বলেন, বিনা ধান ১৭ আগাম জাতের ধান হওয়ায় অনেক আগেই পেকে যায়। মাত্র ১১০ থেকে ১১৫ দিনের মধ্যে ধান কেটে কৃষক ঘরে তুলতে পারেন। আবহাওয়া ও ধানের ফলন ভালো হওয়ায় এবছর উপজেলায় বিশ হাজার আশি হেক্টর মেট্রিকটন ধানের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করা হয়েছে।