বহুত্ববাদী সমাজ ও ধর্মীয় বৈচিত্র্যের মাঝে সম্প্রীতি গড়ে তোলার প্রত্যয় নিয়ে গত এপ্রিলে তাইপে নগরে অনুষ্ঠিত হয় ১০ দিনব্যাপী মুসলিম শিল্পকলা প্রদর্শনী। সানিয়াৎসেন মেমোরিয়াল হলে আয়োজিত প্রদর্শনী তাইওয়ানের জনগণের মাঝে ইসলামী সংস্কৃতি ও সভ্যতার ধারণাকে উচ্চকিত করে। অ্যারাবিক ক্যালিগ্রাফি, ইসলাম ধর্মের শান্তি ও সম্প্রীতির বৈশিষ্ট্য, ইসলামী সংস্কৃতির স্মরণচিহ্ন, ঐতিহাসিক অভিজ্ঞান, স্থাপত্যশৈলী, তাইওয়ানে ইসলামের বিকাশ, মানবসভ্যতার অগ্রগতিতে মুসলমানদের অবদান বিশেষভাবে গণিতশাস্ত্র, জ্যোতির্বিদ্যা, চিকিৎসাবিজ্ঞান, দর্শন ও নৌচালনবিদ্যা ইত্যাদি প্রদর্শনীতে তুলে ধরা হয়। প্রদর্শিত আইটেমগুলো দিয়ে সহযোগিতা করেছে সৌদি আরব, তুরস্ক, ওমান, জর্দান, বাহরাইন, কুয়েত, সংযুক্ত আরব আমিরাত, নাইজেরিয়া, ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া ও ব্রুনাই। এই প্রদর্শনী ইসলাম এবং অপরাপর সভ্যতা ও সংস্কৃতির পারস্পরিক বন্ধনকে মজবুত করার ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করবে। মক্কাভিত্তিক রাবেতা আল-আলম আল-ইসলামীর মহাসচিব ড. মুহাম্মদ বিন আবদুল করিম আল-ঈসা প্রদর্শনীর উদ্বোধন করেন। তাইওয়ানের জনগণের মধ্যে ইসলাম সম্পর্কে অধিকতর জ্ঞান লাভের অনুসন্ধিৎসা জাগায় এই প্রদর্শনী। ধর্মীয় স্বাধীনতাকে গুরুত্ব দিয়ে ২০২০ সালে সংশ্লিষ্ট মিউজিয়াম কর্তৃপক্ষ মুসলিম পর্যটক ও দর্শকদের জন্য কমপ্লেক্সের অভ্যন্তরে প্রার্থনাগৃহ তৈরি করে দেন।
তাইওয়ানে ইসলাম জীবন্ত শক্তি। মুসলমানরা সরকারের প্রতি অনুগত। বহু কঠিন চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করে তাইওয়ানের মুসলমানরা সামনে এগিয়ে চলেছেন। অমুসলিম পরিবেশে ধর্মচর্চা ও প্রচার করা কঠিন। পর্যাপ্ত মসজিদ না থাকায় অনেক মুসলমানের পক্ষে জুমার নামাজ আদায়ে সমস্যা দেখা দেয়। হালাল খাদ্য সবখানে বিক্রি না করায় দৈনন্দিন জীবনে মুসলমানদের বিপাকে পড়তে হয়। সপ্তম শতাব্দীতে ইসলাম চীনে প্রবেশ করেছিল। মুসলিম ব্যবসায়ীরা চীনে এসে স্থানীয় মেয়েদের সাথে বিয়ে বন্ধনে আবদ্ধ হয়ে ‘হুই’ নামক নতুন মুসলিম জাতিগোষ্ঠীর জন্ম দেন। চীন থেকে তাইওয়ানে ইসলাম ছড়িয়ে পড়ে। সাংবিধানিকভাবে তাইওয়ানে যেকোনো মানুষের ধর্ম অনুশীলন, চর্চা ও প্রচারে কোনো বাধা নেই। ইসলামের বিধিবিধানের পূর্ণাঙ্গ ধারণা ও শিক্ষা তাইওয়ানের মুসলিম জনগোষ্ঠীর মধ্যে এখনো প্রতিফলিত হয়নি। তবে তারা বংশপরম্পরায় ইসলামের বোধ ও বিশ্বাসকে লালন করে চলেছেন। সীমিত আকারে মুসলিম মেয়েরা পর্দাপ্রথা মেনে চলে। মুসলমানদের স্বচ্ছ ও সুনিয়ন্ত্রিত জীবনধারা, নৈতিক মূল্যবোধ, পারিবারিক শৃঙ্খলা ও সামাজিক সাম্যের আদর্শ দ্বারা প্রভাবিত হয়ে তাইওয়ানের বহু মানুষ ইসলাম কবুল না করলেও, ইসলামকে ভালোবাসেন। পশ্চিমাদের অপপ্রচারের কারণে কিছু মানুষের মধ্যে ইসলাম সম্পর্কে ভ্রান্তধারণা সৃষ্টি হয়; তবে স্থানীয় মুসলমানদের ইতিবাচক দাওয়াতি প্রচারের কারণে তা দূরীভূত হয়ে যা”েছ।
তাইওয়ান পূর্ব এশিয়ায় পশ্চিম প্রশান্ত মহাসাগরীয় একটি দ্বীপ, যা চীনের দক্ষিণ পূর্বাঞ্চলীয় মূল ভূখণ্ড থেকে বিচ্ছিন্ন। অতীতে পর্তুগিজরা এর নাম দিয়েছিল ‘ফরমোসা’, যার অর্থ ‘সৌন্দর্যমণ্ডিত দ্বীপ’। রাজধানী তাইপে। কাউসিয়াং, তাইবু ও তাইচেং উল্লেখযোগ্য শহর। তাইওয়ানের আয়তন ৩৬ হাজার ১৯৭ বর্গকিলোমিটার। উত্তরে পূর্ব চীন সাগর, দক্ষিণে দক্ষিণ চীন সাগর, পূর্বে প্রশান্ত মহাসাগর এবং পশ্চিমে তাইওয়ান প্রণালী। দ্বীপের দুই-তৃতীয়াংশজুড়ে রয়েছে তিন হাজার মিটার উ”চতাসম্পন্ন ১০০টি পর্বত। দুই কোটি ৩০ লাখ জনঅধ্যুষিত তাইওয়ানের সাক্ষরতার হার ৯৮.০৫ শতাংশ (২০২১) রাষ্ট্রীয় ভাষা চীনা মান্দারিন হলেও এর তাইওয়ানি ও হাক্কা ভাষা বেশ প্রচলিত। অর্থনৈতিকভাবে সমৃদ্ধ দেশ তাইওয়ান। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরপরই তাইওয়ান শিল্পায়নের পথে ধাবিত হয় এবং এশিয়ার সমৃদ্ধ চার দেশের (Four Asian Tigers) মধ্যে অন্যতম স্থান দখল করে নেয়। অর্থনৈতিক সমৃদ্ধ অন্য তিনটি দেশ হচ্ছে হংকং, সিঙ্গাপুর ও দক্ষিণ কোরিয়া। তাইওয়ানের মাথাপিছু বার্ষিক আয় ৩২.১২৩ ডলার (জিডিপি, নমিনাল)। বেকারের হার ৩.৭১ শতাংশ মাত্র। ইলেকট্রনিক, কেমিক্যাল, পেট্রো কেমিক্যাল, মেশিনারি, ধাতবব¯‘, টেক্সটাইল ও পরিবহন যন্ত্রপাতি হচ্ছে তাইওয়ানের আয়ের মূল উৎস। ২০১০ সালে তাইওয়ানের বার্ষিক রফতানি আয় ২৭৪.৬ বিলিয়ন ডলার।
তাইওয়ানে সরকারস্বীকৃত ১৩টি ধর্ম রয়েছে। বৌদ্ধ, তাঈ, রোমান ক্যাথলিক, প্রোটেস্ট্যান্ট, ইসলাম, লি-ইজম, বাহাই, ও থেনকিকিও এর অন্তর্ভুক্ত। অর্ধেক জনগোষ্ঠী বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী। তাইওয়ানের ভূমিপুত্র মুসলমানের সংখ্যা প্রায় ৬০ হাজার, যাদের ৯০ শতাংশ হুই নৃতাত্ত্বিক জনগোষ্ঠীর অন্তর্ভুক্ত। বাকিরা বিভিন্ন দেশ থেকে আগত অভিবাসী। সর্বশেষ পরিসংখ্যান অনুযায়ী, তাইওয়ানে মুসলমানদের সংখ্যা দুই লাখ ৫০ হাজার। তাদের সংখ্যা ক্রমেই বাড়ছে। বেশির ভাগ মুসলমান সুন্নি ও হানাফি মাজহাবের অনুসারী। তাইওয়ানে মসজিদ আছে ১১টি। তাইপে গ্র্যান্ড মসজিদ হচ্ছে সবচেয়ে বড় মসজিদ। রাজধানী তাইপের দান জেলায় অবস্থিত এ মসজিদের আয়তন দুই হাজার ৭৪৭ বর্গমিটার। তাইপের নগর প্রশাসন ১৯৯৯ সালের ২৬ জুন ঐতিহাসিক মসজিদ হিসেবে এটিকে তালিকাভুক্ত করে।
সপ্তদশ শতাব্দীতে মুসলমানরা সর্বপ্রথম তাইওয়ানে বসতি স্থাপন করে। ইতিহাসবিদদের মতে, ১৬৬১ সালে তাইওয়ানের দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর হতে ডাচদের বিতাড়িত করার উদ্দেশ্যে কক্সিঙ্গার নেতৃত্বে বহু মুসলিম পরিবার চীনের উপকূলীয় প্রদেশ কুজিয়ান থেকে তাইওয়ানে আসে। তারাই তাইওয়ানের প্রথম মুসলিম অভিবাসী। ১৯৪৯ সালে চীনে গৃহযুদ্ধ শুরু হলে ২০ হাজার মুসলিম পরিবার মূল ভূখণ্ড ত্যাগ করে তাইওয়ানে আশ্রয় নেয়। শরণার্থীর মধ্যে দক্ষিণ ও পশ্চিমাঞ্চলীয় অঞ্চলের বিশেষত ইউনান, জিনজিয়াং, নিনগক্সিয়া ও গানচু এলাকা থেকে বিপুলসংখ্যক মুসলিম সেনাসদস্য, সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী তাইওয়ানে এসে বসতি স্থাপন করে। ১৯৫০ সালের দিকে চীনের হান মুসলমানদের সাথে তাইওয়ানের মুসলমানদের যোগাযোগ স্থাপিত হয়।
১৯৮০ সালের দিকে মিয়ানমার ও থাইল্যান্ড থেকে উন্নত জীবনের প্রত্যাশায় বিপুলসংখ্যক মুসলমান তাইওয়ানে পাড়ি জমায়। বর্তমানে তাইওয়ানের বেশির ভাগ মুসলমান নতুন ধর্মান্তরিত। ইসলাম গ্রহণকারীদের মধ্যে মহিলাদের সংখ্যা বেশি। তারা ইসলাম কবুল করে মুসলমানদের সাথে বিয়ে বন্ধনে আবদ্ধ হয়। এভাবে মুসলমানদের সংখ্যা বৃদ্ধি পেতে থাকে।
তাইওয়ানে জন্ম গ্রহণকারী অথবা তাইওয়ানে বসতি স্থাপনকারীদের মধ্যে বহু নামীদামি মুসলমান আছেন যারা নিজ নিজ ক্ষেত্রে অত্যন্ত পরিচিত ও কীর্তিমান। তাদের মধ্যে বাই চংক্সি (১৮৯১-১৯৬৬) অন্যতম, যিনি চীনা সেনাবাহিনীতে জেনারেল হিসেবে কর্মরত ছিলেন। মা বুকিং (১৯০১-১৯৭৭) আরেকজন মুসলিম জেনারেল, যিনি ১৯৪২-৪৩ সালে চীনা সেনাবাহিনীর ৪০তম গ্রুপের ডেপুটি কমান্ডার ইন চিফ হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। মা চেং জিয়াং (১৯১৪-১৯৯১) আরেকজন মুসলিম জেনারেল, যিনি চীন সরকারের অধীনে ন্যাশনাল রেভ্যুলুশনারি আর্মিতে জেনারেল (১৯৪৪-১৯৬৯) হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি ১৯৪৪ সালে পঞ্চম ক্যাভালরি ডিভিশনে জেনারেল অফিসার কমান্ডিং ছিলেন। মা চিং চিয়াং নামক মুসলিম জেনারেল তাইওয়ানের প্রেসিডেন্ট চিয়াং কাই শেকের উপদেষ্টা ছিলেন। ১৯৭০ সালে কম্বাইন্ড সার্ভিস ফোর্সেসের ডেপুটি কমান্ডার হিসেবে কর্মরত ছিলেন। ইউলবার খান (১৯৫১-১৯৭০) জিনজিয়াং প্রদেশের গভর্নর ছিলেন। গভর্নর হিসেবে যোগ দেয়ার আগে ন্যাশনাল রেভ্যুলুশনারি আর্মির জেনারেল (১৯৪৪-১৯৫১) হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
ওয়াং সি মিং নামক আরেকজন মুসলমান তাইওয়ান সরকারের পক্ষ থেকে কুয়েতে রাষ্ট্রদূত ছিলেন। চীনা মুসলিম সমিতির ব্যবস্থাপনায় তাইওয়ানের মেধাবী মুসলিম শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন মুসলিম দেশে বৃত্তি নিয়ে উ”চতর শিক্ষা গ্রহণে এগিয়ে চলেছে। রাবেতা আল-আলম আল-ইসলামীসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ইসলামী সংস্থার সাথে তাইওয়ানের মুসলমানদের যোগাযোগ রয়েছে। সরকারি কোটায় মাত্র ২২ জন মুসলমান হজ করার অনুমতি থাকলেও বেসরকারি পর্যায়ে প্রায় ৫০ জনের মতো প্রতি বছর মক্কা নগরী সফর করে হজ পালন করেন। তাইওয়ানের রাষ্ট্রপ্রধান হাজীদের মক্কা যাত্রার প্রাক্কালে রাষ্ট্রপতি ভবনে স্বাগত জানান।
তাইপে মসজিদে এসে মানুষ ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করে থাকেন। ২০০০ সালে সৌদি বাদশাহ ফাহাদ ইবন আবদুল আজিজের আমন্ত্রণে তাইওয়ানের ৩২ জন মুসলমান হজ ও ওমরাহ পালন করেন। তাইপে গ্র্যান্ড মসজিদ তাইওয়ানের অন্যতম আকর্ষণীয় স্থাপনা। আরবি ও পারস্য স্থাপত্যশৈলীর সংমিশ্রণে তৈরি করা এ মসজিদে এক হাজার মুসল্লি নামাজ আদায় করতে পারেন। মসজিদ কম্পাউন্ডে রয়েছে ৪০০ আসনের মিলনায়তন, যেখানে সেমিনার, ওয়াজ মাহফিল ও সিরাত কনফারেন্স অনুষ্ঠিত হয় নিয়মিত। নামাজ বা ইবাদতের পাশাপাশি প্রতিটি মসজিদে বিশেষত সাপ্তাহিক বন্ধ ও সাধারণ ছুটির দিনে কুরআন ও ধর্মীয় তা’লিম চলে। ১৯৬০ সাল থেকে স্থানীয় মুসলমান ও বিভিন্ন মুসলিম রাষ্ট্রের আর্থিক সহায়তায় নির্মিত তাইপে গ্র্যান্ড মসজিদ কাম ইসলামিক সেন্টার মুসলমানদের ধর্মীয় ও সামাজিক মিলনকেন্দ্র হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে। সৌদি আরবের তদানীন্তন বাদশাহ ফয়সাল, জর্দানের বাদশাহ হোসাইন ও মালয়েশিয়ার প্রেসিডেন্ট টুংকু আবদুর রাহমান তাইপে গ্র্যান্ড মসজিদ পরিদর্শন করেন। তাইপে গ্র্যান্ড মসজিদে ৩০ জন নিবন্ধিত কিশোর শিক্ষার্থীকে শনি ও রোববার দুই ঘণ্টাব্যাপী ইসলামের মৌলিক বিষয়াবলির ওপর পাঠদান করা হয়। তাইওয়ানে মসজিদকেন্দ্রিক যে সমাজ গড়ে উঠেছে সেখানে যেকোনো অপরাধের জন্য বয়োজ্যেষ্ঠদের একটি কাউন্সিল সর্বদা সতর্ক থাকে এবং অপরাধীদের শাস্তি দেয়া হয়, যাতে সমাজ কলুষিত না হতে পারে। মুসলিম তরুণ-তরুণীরা যাতে শূকরের মাংস ও মাদকের প্রতি আসক্ত না হয়ে পড়ে সে জন্য রয়েছে রীতিমতো কাউন্সেলিং ও পারিবারিক দীক্ষা।
ক্রমেই মধ্যপ্রাচ্যের সাথে তাইওয়ানের বাণিজ্যসম্পর্ক জোরদার হচ্ছে। তাইওয়ানের মুসলিম সমাজে আলেমের সংখ্যা একেবারে নগণ্য। উ”চপর্যাযের মাদরাসা না থাকায় পর্যাপ্ত আলেম সৃষ্টি হচ্ছে না। ইসলামী সংস্থাগুলোর সহযোগিতায় প্রতি বছর শতাধিক শিক্ষার্থীকে বাইরে পাঠানো হচ্ছে , যারা সংশ্লিষ্ট বিষয়ে ডিগ্রি নিয়ে আরবি ও ইংরেজি ভাষায় দক্ষ হয়ে স্বদেশ প্রত্যাবর্তন করেন। তাদের মধ্যে কিছু কূটনৈতিক অঙ্গনে দায়িত্ব পালনের সুযোগ লাভ করেন।
দাওয়াতি তৎপরতা জোরদার করার লক্ষ্যে রাবেতা আল-আলম আল-ইসলামী ও ওয়ার্ল্ড অ্যাসেমব্লি অব মুসলিম ইয়ুথের যৌথ উদ্যোগে মাঝে মধ্যে তরুণদের জন্য ক্যাম্প ও আন্তর্জাতিক সেমিনারের আয়োজন করা হয়। বিভিন্ন দেশের স্কলাররা এতে প্রবন্ধ পাঠ করে থাকেন। চায়নিজ মুসলিম সমিতির সহায়তায় ইবরাহিম বাও সৌদি বিশ্ববিদ্যালয়ের শরিয়াহ অনুষদ থেকে ডক্টরেট ডিগ্রি নিয়ে তাইওয়ানে শরিয়াহ প্রশিক্ষণের কাজে নিয়োজিত ছিলেন। তিনি রাবেতার কেন্দ্রীয় কমিটিরও সদস্য ছিলেন। তাইওয়ানে চীনা ও মান্দারিন ভাষা প্রচলিত। মা-জুন চীনা ভাষায় পবিত্র কুরআন এবং চেন কি লি মহানবী হজরত মুহাম্মদ সা:-এর নির্বাচিত হাদিসগুলো তরজমা করেছেন। এ ছাড়া ছোটখাটো দ্বীনি পুস্তিকা চীনা ও মান্দারিন ভাষায় অনূদিত হয়। চীনা ও মান্দারিন ভাষায় আরো ইসলামী গ্রন্থ’ বিশেষত পূর্ণাঙ্গ তাফসিরে কুরআন, সিরাতে রাসূল, সাহাবাদের জীবনী, জীবন গঠনে সহায়ক ইসলামী ফিকহ প্রণয়ন ও অনুবাদ প্রকল্প গ্রহণ ও বাস্তবায়নের জন্য অনান্য দেশের মুসলমানদের এগিয়ে আসতে হবে। সেমিনার, ইসলামী সম্মেলন, ব্যক্তিগত দাওয়াত, সামাজিক জনহিতকর কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে তাইওয়ানে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা মুসলমানদের ঐক্যবদ্ধ করে কুরআন ও সুন্নাহর আদর্শে গড়ে তোলা হচ্ছে এ মুহূর্তের বড় কাজ। তাইওয়ানকে কেন্দ্র করে মেহনতি প্রয়াস চালানো হলে আশপাশের দেশে ইসলামের মর্মবাণী পৌঁছিয়ে দেয়া সহজ হবে। লেখক : অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক ও গবেষক,
ইমেল: drkhalid09@gmail.com