আজ ২৬ নভেম্বর বাদ জুম্মা সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি ও আরোগ্য কামনা করে মসজিদে মসজিদে দোয়া করা হবে। অন্য সম্প্রদায়ের পক্ষ থেকে তাদের স্ব সব উপাসনালয়ে প্রার্থনা করা হবে।
গত বুধবার দুপুরে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক যৌথসভা শেষে সংবাদ সম্মেলনে ঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে এই দোয়া ও প্রাথর্না অনুষ্ঠানের আয়োজন করার আহবান জানিয়েছেন বিএনপি’র মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। মির্জা ফখরুল বলেন, ‘দলের স্থায়ী কমিটিতে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। আগামী দিনগুলোর অন্যান্য কমসূচির মধ্যে আছে ২৮ তারিখে স্বেচ্ছাসেবক দল ঢাকাসহ সারাদেশে বিক্ষোভ করবে, ৩০ তারিখে বিভাগীর সদরগুলোতে বিএনপির উদ্যোগে সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে। এছাড়া আগামী ১ ডিসেম্বর ছাত্রদল সারাদেশে সমাবেশ করবে, ২ তারিখে মুক্তিযোদ্ধা দল জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধন করবে, ৩ তারিখে কৃষক দল ঢাকাসহ সারাদেশে সমাবেশ করবে এবং ৪ তারিখে মহিলা দল মৌন মিছিল করবে বলে তিনি জানান। কর্মসূচির প্রসঙ্গে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘এটা সম্পূর্ণভাবে নির্ভর করবে বেগম খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার ওপরে। প্রয়োজনে কর্মসূচি পরিবর্তনও হতে পারে। সেটা সময় মতো আপনাদের আমরা জানাবো। যৌথসভায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমান উল্লাহ আমান, আবদুস সালাম, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ, সহ সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুস সালাম আজাদ, সহ দপ্তর সম্পাদক তাইফুল ইসলাম টিপু, বেলাল আহমেদ, মনির হোসেনসহ দলটির অঙ্গ ও সহযোগি সংগঠনের সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদকরা উপস্থিত ছিলেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, ম্যাডামের শক্ত মনোবলের কারণেই চিকিৎসকরা আশাবাদী, তিনি সুস্থ হয়ে আমাদের মাঝে ফিরে আসবেন। তিনি বলেন, দেশে চিকিৎসকরা খালেদা জিয়াকে সর্বোচ্চ চিকিৎসা দিচ্ছেন। কিন্তু এখানে তার চিকিৎসা সম্ভব নয়। কালবিলম্ব না করে অবিলম্বে বিদেশে পাঠানো দরকার। উনার মেডিকেল বোর্ড স্পষ্ট করে বলেছে যে, ম্যাডামকে অ্যাডভান্স চিকিৎসার জন্য যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য এবং জার্মানিতে পাঠাতে হবে। অতিদ্রুত তাকে বিদেশে পাঠানো জরুরি। খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য বিষয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, চিকিৎসকদের কাছে থেকে সবশেষ তথ্য জেনেছি, ম্যাডামের ফারদার ইম্প্রুভ হয়নি। ভালো কিছুই হয়নি তার। তার অবস্থা এখনো আগের মতোই রয়েছে। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপির যাবে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে মির্জা ফখরুল বলেন, বর্তমান সরকারের অধীনে কোনো জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপি যাবে না। এটা পরিষ্কার করে বলছি, আমরা এই সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচনে যাচ্ছি না। খালেদা জিয়াকে বিদেশে চিকিৎসার জন্য না পাঠালে বিএনপির সংসদ সদস্যরা পদত্যাগ করার ইঙ্গিত করেছে- এ বিষয়ে জানতে চাইলে মির্জা ফখরুল বলেন, তাদের সংসদ থেকে পদত্যাগের বিষয়টি দলীয় সিদ্ধান্ত। তারা তো বিএনপির সংসদ সদস্য। দল যদি মনে করে, তাহলে তারা পদত্যাগ করবে।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ফখরুল জানান, ম্যাডামের চিকিৎসকেরা কথা বলবেন না। রোগীর তথ্য নিয়ে কথা বলার বিষয়টি তাদের পেশাগত এথিক্সে নেই। সব দায়িত্ব নিয়ে বলছি, অবিলম্বে ম্যাডামকে কালবিলম্ব না করে বিদেশে পাঠানো দরকার। দেশনেত্রীর জীবন অত্যন্ত মূল্যবান। এত বেশি মূল্যবান যে, গণতন্ত্রের উন্নয়নের জন্য, স্থিতিশীল অবস্থার জন্য তার সুস্থ হয়ে ফিরে আসা জরুরিভাবে দরকার।