রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ১১:৩৯ পূর্বাহ্ন

সামনে ভয়াবহ ঝুঁকিতে পড়বে বৈশ্বিক প্রবৃদ্ধি: বিশ্বব্যাংক

খবরপত্র ডেস্ক:
  • আপডেট সময় বুধবার, ১২ জানুয়ারী, ২০২২

করোনা মহামারি সংকটে কমেছে বৈশ্বিক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি। মারণ ভাইরাসটির নতুন ভ্যারিয়েন্ট ওমিক্রনের ঊর্ধ্বমুখী সংক্রমণের ফলে আগামী দিনে বৈশ্বিক প্রবৃদ্ধি ভয়াবহ ঝুঁকির মধ্যে পড়তে যাচ্ছে। ২০২৩ সালের মধ্যে প্রবৃদ্ধি আরও কমবে। করোনা সংকটে উন্নয়নশীল অর্থনীতিতে ‘হার্ড ল্যান্ডিং’র ঝুঁকির মধ্যে মুদ্রাস্ফীতি, ঋণ এবং বৈষম্যে অনিশ্চয়তা তীব্র হবে। গতকাল বুধবার (১২ জানুয়ারি) বিশ্বব্যাংকের ওয়াশিংটন কার্যালয় থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়েছে। ২০২১-২২ সালে একটি শক্তিশালী প্রত্যাবর্তনের পরে বিশ্ব অর্থনীতি সুস্পষ্ট মন্দার মধ্যে প্রবেশ করছে। ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্ট নতুন হুমকি হয়ে আসছে। মুদ্রাস্ফীতি, ঋণ এবং আয় বৈষম্য বৃদ্ধির ফলে যা উদীয়মান এবং পুনরুদ্ধারকে বিপন্ন করতে পারে। বিশ্বব্যাংকের সর্বশেষ গ্লোবাল ইকোনমিক প্রসপেক্টস রিপোর্টে এমন তথ্য উঠে এসেছে।
২০২১ সালে বৈশ্বিক প্রবৃদ্ধি ছিল ৫ দশমিক ৫ শতাংশ। ২০২২ সালে তা কমে হবে ৪ দশমিক ১ শতাংশ এবং ২০২৩ সালে ভয়াবহভাবে কমে নামবে ৩ দশমিক ২ শতাংশে। তবে করোনা সংকটেও প্রবৃদ্ধি ধরে রাখবে পূর্ব এশিয়া এবং প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চল। ২০২৩ সালে প্রবৃদ্ধি সামান্য বৃদ্ধি পেয়ে হবে ৫ দশমিক ২ শতাংশ, ২০২২ সালে যা প্রাক্কলন করা হয় ৫ দশমিক ১ শতাংশ।
ইউরোপ এবং মধ্য এশিয়া ২০২২ সালে প্রবৃদ্ধি ৩ শতাংশ বাড়লেও ২০২৩ সালে কমে হবে ২ দশমিক ৯ শতাংশ। লাতিন আমেরিকা এবং ক্যারিবিয়ান অঞ্চলে ২০২৩ সালে প্রবৃদ্ধির হার হবে ২ দশমিক ৭ শতাংশ। ২০২২ সালে যা প্রাক্কলন করা হয় ২ দশমিক ৬ শতাংশ। মধ্যপ্রাচ্য এবং উত্তর আফ্রিকা অঞ্চলে ২০২৩ সালে প্রবৃদ্ধির হার কমে ৩ দশমিক ৪ শতাংশ হবে। অথচ ২০২২ সালে যা প্রাক্কলন করা হয় ৪ দশমিক ৪ শতাংশ।
প্রবৃদ্ধির হার কমবে দক্ষিণ এশীয় অঞ্চলেও। ২০২৩ সালে প্রবৃদ্ধির হার কমে হবে ৬ শতাংশ। অথচ ২০২২ সালে প্রবৃদ্ধির হার প্রাক্কলন করা হয় ৭ দশমিক ৬ শতাংশ। তবে কিছুটা স্বস্তি সাব-সাহারান আফ্রিকান অঞ্চলে। ২০২২ সালে প্রবৃদ্ধির প্রাক্কলন ৩ দশমিক ৬ শতাংশ করা হলেও ২০২৩ সালে তা সামান্য বেড়ে হবে ৩ দশমিক ৮ শতাংশ। গ্লোবাল ইকোনমিক প্রসপেক্টস রিপোর্টে জানানো হয়, ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্টের দ্রুত বিস্তার ইঙ্গিত দেয় যে মহামারিটি সম্ভবত নিকট মেয়াদে অর্থনৈতিক কার্যকলাপকে ব্যাহত করবে। এছাড়াও, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং চীনসহ প্রধান অর্থনীতিতে একটি উল্লেখযোগ্য মন্দাভাব টেনে আনবে। উদীয়মান এবং উন্নয়নশীল অর্থনীতিতে চাহিদার ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে। নতুন ভ্যারিয়েন্ট এমন একটা সময়ে এলো যখন উন্নয়নশীল অর্থনীতির দেশগুলো ঘুরে দাঁড়ানোর নানা পদক্ষেপ নিচ্ছিল। রিপোর্টে আরও বলা হয়, ওমিক্রন ক্রমাগত সরবরাহ-চেইনে বাধা, মুদ্রাস্ফীতির চাপ এবং বিশ্বের বড় অংশে উচ্চতর আর্থিক দুর্বলতা তৈরি করবে। এতে বৈশ্বিক প্রবৃদ্ধি ঝুঁকি বাড়াতে পারে। সামনের সময় আরও কঠিন হতে পারে।

এ বিষয়ে বিশ্বব্যাংকের প্রেসিডেন্ট ডেভিড ম্যালপাস বলেন, বিশ্ব অর্থনীতি একইসঙ্গে কোভিড-১৯, মুদ্রাস্ফীতি এবং নীতির অনিশ্চয়তার মুখোমুখি হচ্ছে। ক্রমবর্ধমান বৈষম্য এবং নিরাপত্তা চ্যালেঞ্জ উন্নয়নশীল দেশগুলোর জন্য বিশেষভাবে ক্ষতিকর প্রভাব ফেলছে। ‘করোনা সংকট মোকাবিলায় বিশ্বের অধিক সংখ্যক দেশকে সম্পৃক্ত করতে হবে। বিশ্বকে একটি অনুকূল প্রবৃদ্ধির পথে রাখার জন্য সমন্বিত আন্তর্জাতিক পদক্ষেপ এবং জাতীয় নীতি প্রতিক্রিয়াগুলো জোরদার করা জরুরি’- বলেন ম্যালপাস।




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com